শেষ আপডেট: 11th January 2025 14:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমেরিকার দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ভয়াবহ খাণ্ডব দাহন এখনও চলছে। নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া বা এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়া বাসিন্দারা অন্যত্র টিভিতে বসে নিজের ঘরবাড়ি, গাড়ি-বাগান জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়া দেখছেন। বিরাট এলাকা জুড়ে আগুন জ্বলা সত্ত্বেও অনেকে তার মধ্যেই তাপ ও ধোঁয়ার কষ্ট উপেক্ষা করে বাড়িতে ফিরে এসে দরকারি-দামি জিনিসপত্রের খোঁজ চালাচ্ছেন। আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস এঞ্জেলস এখন যেন যুদ্ধে পরিত্যক্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে।
এবারের এই দাবানলকে দেশের সবথেকে ধ্বংসাত্মক অগ্নিকাণ্ড বলে মনে করা হচ্ছে। ঝড়ের বেগে বাতাস একটু কমলেও অগ্নিনির্বাপণের কাজ করা কর্মীদের শুকনো আবহাওয়া ও শুকনো ডালপালা, পাতা ও অন্যান্য দাহ্য পদার্থের মোকাবিলা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হলেও কয়েক লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আশ্রয়হীন হয়েছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা।
এই অগ্নিকাণ্ডে ১৩,৫০০ কোটি ডলার থেকে ১৫,০০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে আমেরিকা সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ১০০ শতাংশ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। এ পর্যন্ত প্যালিসেডস অগ্নিকাণ্ড প্রায় ২১,৬০০ একর জমি ধ্বংস করে দিয়ে আরও পূর্ব দিকে এগোচ্ছে। যার মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
ইটন অগ্নিকাণ্ডের মাত্র ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে, তবে নতুন এলাকায় তেমন ছড়াচ্ছে না। এই এলাকায় প্রায় ১৪,০০০ একর জমিতে বনভূমি রয়েছে। কেনেথ এলাকায় ১০০০ একরের মধ্যে ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে, হার্স্ট-এ ৮০০ একরের মধ্যে ৭০ শতাংশ, লিডিয়া-র ৪০০ একরের মধ্যে ৯৮ শতাংশ এবং আর্চার-এর ২০ একরে আগুন নেই।
এই বিপুল পরিমাণের ক্ষয়ক্ষতিতে বিমা কোম্পানিগুলির মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। লস এঞ্জেলস জেলার প্যাসিফিক প্যালিসেডস এবং মালিবু হল ক্যালিফোর্নিয়ার সবথেকে ব্যয়বহুল এলাকা। ফলে অনুমান করা হচ্ছে, এই অগ্নিকাণ্ডের পর বিমা কোম্পানিগুলির প্রিমিয়াম প্রচুর পরিমাণে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞ সংস্থা জেপি মর্গানের ব্যাখ্যায় মোট ক্ষতির পরিমাণ পরিমাণ এবং বিমাকৃত ক্ষতির পরিমাণ গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিগুণ হয়ে যথাক্রমে ৫০০০ কোটি এবং ২০০০ কোটি ডলারে পৌঁছে গিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১২০০০ বাড়ি সম্পূর্ণ বা কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচুর গাড়ি জ্বলে ছাই হয়ে গিয়েছে। এখানকার একেকটি বাড়ি নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে খরচ ধরা হয়েছে ৩০ লক্ষ ডলার। এই এলাকায় প্রতিবছরই এ ধরনের আগুন লাগে বলে বহু বিমা কোম্পানি এখানে থেকে হাত গুটিয়ে চলে গিয়েছে। যে কয়েকটি কোম্পানি এখনও ব্যবসা চালায়, তারা এরপর প্রিমিয়াম কয়েক গুণ বাড়াবে বলেই অনুমান।