এবার রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia Ukraine) শান্তি আলোচনাতেও নাক গলাতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ডোনাল্ড ট্রাম্প
শেষ আপডেট: 13 May 2025 12:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারত ও পাকিস্তান (India Pakistan News update) যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে চলেছে তা সবার আগে ঢাক পিটিয়ে জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। তিনি দাবি করেছিলেন, যুদ্ধরত দুই দেশকে তিনিই থামিয়েছেন। এবার রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia Ukraine) শান্তি আলোচনাতেও নাক গলাতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে বৃহস্পতিবার তুরস্কে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনা হতে চলেছে। সেই আলোচনায় যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাংবাদিকদের সামনে এদিন তিনি বলেন, “যদি মনে হয় কাজে আসবে, তবে আমি তুরস্কে উড়ে যেতে পারি।”
এই মুহূর্তে ট্রাম্প সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও কাতার সফরে রয়েছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম বিদেশ সফরে বেরিয়েছেন তিনি। তার মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন বৈঠকের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “বৃহস্পতিবার কোথায় থাকব, জানি না। প্রচুর বৈঠক আছে। তবে ভাবছি, উড়ে যাওয়া যায় কি না। যদি মনে হয় কিছু হতে পারে, তাহলে যেতে পারি।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিও ট্রাম্পের উপস্থিতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা চাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলোচনাকে পুরোপুরি সমর্থন করুন, এবং সময় বের করে তুরস্কে উপস্থিত থাকুন।”
গত রবিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তুরস্কে সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়ার পর জেলেনস্কি জানিয়ে দেন, তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে এরপর থেকেই রাশিয়ার তরফে এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে ট্রাম্প চাপ সৃষ্টির কৌশল থেকে সরে এসে জেলেনস্কিকে বলেছেন, পুতিনের প্রস্তাবে “তাৎক্ষণিকভাবে সম্মত” হতে। যা কার্যত রাশিয়ার উপর চাপ তৈরির চেষ্টা দুর্বল করে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এমন অবস্থায় ওয়াশিংটনে আবার শোনা যাচ্ছে সেই পুরনো সুর। ট্রাম্প প্রশাসন একসময়ে দাবি করেছিল, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে তার ‘সরাসরি হস্তক্ষেপ’-এর জেরে। সেই ‘সাফল্য’-এর স্মরণ করে এবার ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন ট্রাম্প।
তুরস্ক ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তারা এই বৈঠক আয়োজন করতে প্রস্তুত। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, “নতুন একটি সম্ভাবনার জানালা খুলেছে। আমরা চাই, এই সুযোগ যেন নষ্ট না হয়।”
ইউক্রেনের ইউরোপীয় বন্ধুরা গত সপ্তাহে রাশিয়াকে জানিয়ে দেয়, যদি তারা ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে না রাজি হয়, তাহলে নতুন করে ‘ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করা হবে। সেই পদক্ষেপকে তখন সমর্থন করেছিলেন ট্রাম্পও। তাতে সমর্থন করেছিলেন জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মার্জ। যদিও সেই আহ্বানে কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ ছিল না, তবে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন— যুদ্ধবিরতির শর্ত মানা না হলে, আমেরিকা ও তার মিত্রদেশগুলি রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপাবে। তবে এবার নিজেই পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের কথা উস্কে দিয়ে যুদ্ধবিরতির আগের শর্তকেই নরম করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে— ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনায় ট্রাম্পের ভূমিকা কি সত্যিই সহায়ক হবে, নাকি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান মজবুত করতে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক পরিসরে তিনি আর এক দফা ব্যক্তিগত কৃতিত্ব দাবি করার সুযোগ খুঁজছেন?