মোসাদের চর এলি কোহেন।
শেষ আপডেট: 5th January 2025 12:49
১৯৬২ সালে কোহেন সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে পাড়ি জমান। দ্রুতই তিনি সিরিয়ার সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাঁর আয়োজিত পার্টিগুলিতে রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকর্তারা অংশ নিতেন। এভাবেই তিনি সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে সামরিক ঘাঁটির বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন, যা ইজরায়েলের হাতে ওই এলাকা দখলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
তবে ১৯৬৫ সালে সিরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় তাঁর গোপন বার্তা পাঠানোর প্রক্রিয়া ধরা পড়ে। ২৪ জানুয়ারি সিরীয় কর্তৃপক্ষ কোহেনকে গ্রেফতার করে এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। আন্তর্জাতিক অনুরোধ সত্ত্বেও, ১৮ মে, ১৯৬৫ সালে জনসমক্ষে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
কোহেনের ফাঁসির পর থেকেই তাঁর মরদেহ ফেরানোর দাবি জানিয়ে আসছে ইজরায়েল। তবে সিরিয়া বরাবরই তা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দেহাবশেষে বারবার অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানা যায়। ২০১৮ সালে, মোসাদ তাঁর হাতঘড়িটি উদ্ধার করেন বহু চেষ্টায়।
বর্তমানে সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন এবং দেশটির কিছু অংশে অস্থির পরিস্থিতি ইজরায়েলের জন্য নতুন আলোচনার সুযোগ তৈরি করেছে। মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া এই আলোচনায় সরাসরি অংশ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় প্রাক্তন সিরীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এসব আলোচনা চলছে।
এলি কোহেনের জীবন ও কাজকর্ম আজও গুপ্তচরবৃত্তির ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর দুঃসাহসিক অভিযান ইজরায়েলের সুরক্ষা ও সামরিক কৌশলে বড় ভূমিকা রেখেছিল। তবে তাঁর মরদেহ ফেরানোর প্রচেষ্টা সফল না হলে, তা ইতিহাসের অসমাপ্ত অধ্যায় হিসেবেই রয়ে যাবে।