শেষ আপডেট: 14th January 2025 11:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টস করে বাজি ধরার গল্প নতুন কিছু নয়। কিন্তু টস করে মানুষ খুন! শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে। ১৮ বছর বয়সি তরুণীকে রীতিমতো নিজের মর্জিমাফিক শ্বাসরোধ করে খুন করল বছর কুড়ির এক যুবক।
ভরা আদালতে দাঁড়িয়েও নিজের কাজের জন্য এতটুকু অনুতপ্ত নয় অভিযুক্ত মাতেউস হেপা। পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, ‘তরুণীকে খুন করবে কিনা তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে করতেই আচমকাই হাতে একটি কয়েন তুলে নিই। টস করতেই হেড পড়লে আমি তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করি। যদি টেইল পড়ত তাহলে হয়তো তাঁর এমন পরিণতি হত না। সে বেঁচেই থাকত।’
অভিযুক্তর দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরেই সে কাউকে খুন করার কথা ভাবছিল। শিকার খুঁজতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেও বেরিয়েছে সে। এরপর আচমকাই তরুণী উইক্টোরিয়া কোজিয়েলস্কার সঙ্গে অভিযুক্তর আলাপ হয়ে যায় বাসে। এরপর থেকেই তাঁর পিছু নেওয়া শুরু।
জানা গেছে, তরুণী একটি পার্টি সেরে বাড়িতে ফিরছিলেন, তখনই অভিযুক্ত হেপা তাঁকে দেখতে পান এবং ফ্ল্যাটে যেতে অনুরোধ করেন। তরুণী প্রথমে বিষয়টি একেবারেই বুঝতে না পেরে সেখানে যান। তবে সারাদিন পর ক্লান্ত হয়ে আচমকাই কোজিয়েলস্কা ঘুমিয়ে পড়েন।
তারপরই ঘটে অঘটন। আদালতে হাড়হিম করা ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে অভিযুক্ত স্বীকার করেছে, ‘ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর আমরা দু’জনে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। তবে আমাদের মধ্যে কোনওরকম কথা হয়নি। এরপর আচমকাই কোজিয়েলস্কা ঘুমিয়ে পড়েন। বারবার তাঁর চারপাশে ঘুরে জাগানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি।’
এরপর যুবক কী করবে সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে হাতে একটি কয়েন তুলে নেয়। মনে মনে ঠিক করে টসে হেড পড়লে সে তরুণীকে খুন করবে, নাহলে তাঁকে প্রাণে বাঁচিয়ে রাখবে। কিন্তু হেড পড়ে যাওয়ায় তরুণীকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয়।
পাশাপাশি আদালতে সে আরও জানিয়েছে, শ্বাসরোধ করে মারার পর তাঁর মৃতদেহের ওপর যৌন নির্যাতন করে সে। বিষয়টি যাতে জানাজানি না হয় এবং পুরোটাই যাতে খুব স্বাভাবিক মনে হয় সে কারণেই শ্বাসরোধ করে খুনের পরিকল্পনা করেছিল সে। পরে প্ল্যাস্টিকে মুড়ে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টাও করে সে।
এরপর ঘটে অন্য কাণ্ড। অভিযুক্ত জানায়, নিজের মন মতো সবকিছু করেও মানসিকভাবে শান্তি পায়নি সে। কোথাও একটা খারাপ লাগা কাজ করছিল। এরপর সে নিজেই পুলিশকে ফোন করে এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।
২০২৩ সালে পোল্যান্ডে এমন ঘটনা ঘটে। দু’বছর হতে চললেও মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। জানা গেছে, দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্ত হেপার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১২ ফেব্রুয়ারি। ওইদিনই মামলার চূড়ান্ত রায়দান হতে পারে বলে খবর।