শেষ আপডেট: 24th March 2025 22:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো, লন্ডন: পাঁচ দিনের সফরে রবিবার লন্ডনে (London) এসে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার সারারাত বিমানযাত্রার ধকল গিয়েছে। রবিবার হোটেলে পৌঁছতেই বেলা হয়ে গেছিল অনেকটা। আবহাওয়াও জুতসই ছিল না তেমন। সোমবার সকালে প্রথম বার লন্ডনের পথে বেরোলেন দিদি।
মধ্য লন্ডনের সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলে রয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জ্যোতি বসুও ফি বছর গ্রীষ্মাবসরে বিলেতে ছুটি কাটানোর সময়ে এই হোটেলে এসেই উঠতেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছেন সরকারি সফরে। সকালে হাঁটতে বেরিয়ে বললেন, ‘এটা মর্নিং ওয়াক নয়। বলুন ওয়ার্ম আপ।' এদিন বিকেল থেকেই সফরের সরকারি কর্মসূচি সব শুরু হওয়ার কথা।
সেন্ট জেমস কোর্ট থেকে বেরিয়ে বাঁ দিকে মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই বাকিংহাম প্যালেস। তার পর সেটিকে বাঁ দিকে রেখে আরও একটু এগোলে অদূরেই হাইড পার্ক।
মুখ্যমন্ত্রী হাঁটা লাগালেন হাওয়াই চটি পরেই। ঠিক যেভাবে দার্জিলিংয়ে পাহাড়ি পথে চটি পরেই হাঁটেন। লন্ডনে শীত এখনও পুরোপুরি যায়নি। বাইরের তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। সঙ্গে কনকনে হাওয়াও রয়েছে। পায়ে মোজা না পরলেই নয়। অথচ সেই মোজা নাইলনের হওয়ায় চটিতে স্লিপ খেয়ে অসুবিধাই হচ্ছিল বেশ। বললেন, “তিরিশ বছর ধরে এভাবেই তো চলেছি। কবে যে শেষ চামড়ার জুতো পরেছি, আজ আর মনে নেই।"
তবে অন্য কথা মনে আছে তাঁর। দিব্যি মনে আছে যে প্রথমবার হাইড পার্ক দেখেই তাঁর মনে ধরেছিল। কলকাতায় ইকো ট্যুরিজম পার্কের ভাবনা সেই থেকেই। বললেন, “কলকাতার গড়ের মাঠও এর থেকে বড়। তবে হাইড পার্ক দেখে মনে হয়েছিল, কলকাতায় সাজানো গোছানো একটা উদ্যান থাকলে ভাল। পর্যটনের জন্য তো ভালই। শহরেরও একটা পরিচিতি তৈরি হয়ে যায়। ৪৮০ একর জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ইকো পার্ক। এর থেকে অনেক বড়।"
কংগ্রেসি ঘরানার রাজনৈতিক পরিবেশ বরাবরই উদার ও খোলামেলা। তা সে দিল্লি হোক বা কলকাতা। এক কথার সূত্র ধরে এহেন ডানপন্থী দলের নেতারা কখন যে অন্য কথায় চলে যান। মমতাও ব্যতিক্রম নন। বললেন, “শুধু কি ইকো পার্ক। কলকাতায় একটা ইন্টারন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টার তৈরি করছি। ২৫ একর জমিতে।”
দিল্লিতে বহু আগে থেকেই আন্তর্জাতিক এক্সিবিশন সেন্টার রয়েছে। কলকাতার বাঙালিরা অনেকেই প্রগতি ময়দান চেনেন। মোদী জমানায় তাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। কলকাতায় মিলন মেলা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছে আরও বড় একটি অ্যারেনা তৈরি করার।
কোথায় সে জমি নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে অবশ্য বলেন, “এখনই বলব না। খুঁজে বের করুন আপনারা। আপনারা তো সাংবাদিক।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায় মুচকি হাসেন পিছনে হাঁটতে থাকা মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ।
কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের সব ক'টি জেলার সদরে একটা করে বড় শপিং আর্কেড গড়ে তোলার ভাবনার কথাও এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভবত রাজ্য বাজেটে সে ব্যাপারে ইঙ্গিতও করা হয়েছে। জেলা সদরে এক একর জমিতে একটা করে আধুনিক বিপণন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।