শাসকদল রিপাবলিকান পার্টির ভিতর থেকেই প্রশ্ন উঠছে যে, কেন ট্রাম্প মধ্য এশিয়ার এই সংঘর্ষের মধ্যে আমেরিকাকে জড়াতে চলেছেন।
ইরানের সঙ্গে যেন আমেরিকা কোনওভাবেই প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ যুদ্ধে না জড়ায়।
শেষ আপডেট: 14 June 2025 05:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইরান-ইজরায়েল চলতি সংঘর্ষে নিজের ঘরেই বোমা পড়তে চলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। শাসকদল রিপাবলিকান পার্টির ভিতর থেকেই প্রশ্ন উঠছে যে, কেন ট্রাম্প মধ্য এশিয়ার এই সংঘর্ষের মধ্যে আমেরিকাকে জড়াতে চলেছেন। ডানপন্থী বেশ কয়েকজন, তার মধ্যে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ নেতারাও প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করে দিয়েছেন এই বলে যে, ইজরায়েল হঠাৎ করে কেন ইরানে হামলা চালাল। ট্রাম্প জেনেও বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে বাধা দেননি কেন? তার থেকেও বড় চাপ এসেছে যে, ইরানের সঙ্গে যেন আমেরিকা কোনওভাবেই প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ যুদ্ধে না জড়ায়।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন সহ সব যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পৃথিবীতে শান্তিস্থাপক ও সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁর প্রতিশ্রুতির ৬ মাসের মাথাতেই মধ্য এশিয়ার মাথার উপর দিয়ে উড়ে চলেছে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও মানবঘাতী ড্রোন। যার ফলে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। এবং এই যুদ্ধে নামতে পারে মার্কিন সেনাবাহিনীও।
এই অবস্থায় বিশ্বশান্তি স্থাপনের যে প্রতিশ্রুতি ট্রাম্প দিয়েছিলেন, তা প্রশ্নচিহ্নের মুখে এসে গিয়েছে। আর তা শুরু হয়েছে, ট্রাম্পের বিশ্বস্ত শিবিরের ভিতর থেকেই। বেশ কয়েকজন ডানপন্থী রাজনীতিক ও ট্রাম্পপন্থী পর্যবেক্ষকের মতে, এই সংঘর্ষে ইজরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন করাটা হবে এক ধরনের বোকামি। ‘আমেরিকার স্বার্থই প্রথম’ যে স্লোগান দিয়ে ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েছিলেন, তা ভেঙে যাবে এই পদক্ষেপে। প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন।
বহু কনজারভেটিভ সমর্থক এও প্রশ্ন তুলেছেন, মধ্য এশিয়ার রাজনীতিতে খামোখা আমেরিকা জড়াতে যাবে কেন? এতে মার্কিন স্বার্থ সুরক্ষিত হবে কোথায়! বরং, প্রত্যক্ষ যুদ্ধে দেশ জড়িয়ে পড়লে আখেরে অর্থনীতি ও সেনাবাহিনীর বিপুল ক্ষতি হবে। বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে তা মোটেই উপযুক্ত হবে না। বিশেষত, ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে আমেরিকা জড়ালে মোটেই চুপ করে বসে থাকবে না মুসলিম রাষ্ট্রগুলি। ফলে পেট্রল ও গ্যাসের বাজারে মন্দা দেখা দিলে আমেরিকার ডলার বিকিয়ে যাবে।
আরও একটি বিশেষ কারণ রয়েছে, আর তা হল চিন ও রাশিয়া ইরানের দীর্ঘদিনের বন্ধুদেশ। ইজরায়েলি হামলায় তারা নাক না গলালেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বেজিং ও ক্রেমলিন প্রশাসন। কিন্তু, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে আমেরিকা যদি হস্তক্ষেপ করে, তাহলে চিন ও রাশিয়াও চুপ করে বসে থাকবে না। ভৌগোলিক মানচিত্র হিসেবে বিভিন্ন দিক থেকে আক্রমণ আসতে আমেরিকার মাটিতেও। ফলে অধিকাংশ দেশ পরমাণু অস্ত্র শক্তিধর হওয়ায় শেষমেশ পুরোদস্তুর যুদ্ধের পরিণাম অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ট্রাম্পের শিবির থেকেই।