শেষ আপডেট: 17th February 2025 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অফিসে এসেও কাজ করায় মন নেই! মাথা ধরেছে! গা-হাত-পা ম্যাজম্যাজ করছে! কুছ পরোয়া নেই। অফিসে আসারই দরকার নেই ফোনে বলে দিন, যেতে পারছি না। মেল করে দিন হ্যাংওভার লিভ, টাইম অফ কিংবা আপসেটিং ফেভারিট সেলেব্রিটি নিউজ লিভের কারণ দেখিয়ে। না, না কলকাতায় নয়। এর জন্য যেতে হবে জাপানে। চিনে চাকরি করতে গেলেও চলবে। অফিসে তরতাজা রক্তের কর্মী ও লোভনীয় বেতনের অভাবে অন্যান্য পার্শ্ব সুযোগ-সুবিধার টোপ দিয়ে হাতেনাতে সুফল পাচ্ছে কোম্পানিগুলি। তরুণ, যুবক-যুবতীরা মাইনের সঙ্গে এ ধরনের ছুটি উপভোগের অফার বেশ করে লুফে নিচ্ছে।
জাপানে দিনদিন চাকরি করতে চাওয়া যুবকের সংখ্যা কমছে। কমছে আবেদনকারীর সংখ্যাও। সে কারণে কোম্পানিগুলি আকর্ষণীয় প্যাকেজের অফার দিচ্ছে চাকরির বিজ্ঞাপনে। যাতে অনেক বেশি আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে হাঙর-তিমি আকারের কোম্পানিরা সরাসরি বেতন বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ছোট কোম্পানি ও ব্যবসাদাররা অচিরাচরিত পদ্ধতিতে নানান টোপ ফেলছে।
ওসাকার একটি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ট্রাস্টরিং এরকম বেশ কিছু অপ্রচলিত ছুটি চালু করেছে কর্মী টানতে। যেমন- কোনও কর্মী ভালভাবে কাজ করার জন্য হ্যাংওভারের সময় নিতে পারে। তাঁদের বিশ্রামকক্ষ থাকবে সেখানে মাথা ভার করে থাকা কাটিয়ে, বা মাথাঘোরা কমে গেলে কাজের টেবিলে ফেরার অতিরিক্ত সময় পাবেন। একজন আগের রাতে পার্টিতে বেশি রাত পর্যন্ত মদ্যপান করায় ঘোরঘোর অবস্থায় ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে ভাল কাজ পেতে তাঁকে বিশ্রাম নিতে বলা হয়। সুস্থ বোধ করলে কাজে বসতে বলে কোম্পানি।
ওই কোম্পানি সেলেব্রিটি লস লিভ চালু করেছে। কেউ তাঁর প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক-গায়িকা বা অন্য ক্ষেত্রে সেলেবদের ভাল-মন্দ ঘোষণার আনন্দ বা শোকপালনের ছুটি পেতে পারেন। কোম্পানির প্রেসিডেন্ট দাইগাকু শিমাডা এই নীতি অনুসরণের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ২২২,০০০ ইয়েন (১,৪০০ মার্কিন ডলার) প্রতি মাসে বেতন দেওয়া ছাড়াও এর ফলে আগের থেকে অনেক বেশি কাজ আদায় করে নেওয়া যাচ্ছে। কারণ, এর সঙ্গে ওভারটাইমের অর্থও দেওয়া হচ্ছে সকলকে। এই নীতি প্রয়োগ করে গত তিন বছরে কোম্পানি ছেড়ে কোনও কর্মী চলে যাননি।
কর্মীদের বাইরে ঘোরাফেরা বন্ধ করতে কোম্পানি একটি ড্রিঙ্কস বার চালু করেছে অফিসের ভিতরেই। চিনেও এই একই ধ্যানধারণা প্রয়োগ করছে কোম্পানিগুলি। সুপার মার্কেট চেন প্যাংডোংলাই আনহ্যাপি লিভ নামে একটি ছুটি চালু করেছে। কোনও কর্মী যদি হতাশবোধ করেন কিংবা কাজে অনীহা বোধ করেন, তাহলে তিনি অতিরিক্ত ১০ দিন ছুটি পেতে পারেন। মালিক য়ু ডোংলাই বলেন, আমরা চাই, যখনই কোনও কর্মীর কাজে মন থাকবে না, তখনই তাকে বিশ্রামের সময় দিতে। যাতে সে ফ্রেশ হয়ে মনপ্রাণ ঢেলে সেরা কাজটা কোম্পানিকে দিতে পারে।