Date : 12th Jul, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
Eng vs Ind: বুমরাহর দাপটের পর ভারতকে টানছে রাহুল-পন্থ জুটিঘটকালির ছকে প্রেমের ফাঁদ! ম্যাট্রিমনি সাইটে পরিচয়, ৪৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে পগারপার পাত্রফের শহরে সিভিক ভলান্টিয়ারের 'দাদাগিরি'! ৬টি ধারায় মামলাভিন্ন ধর্মে বিয়ে, মেয়ের কুশপুতুল দাহ করলেন বাবা, চাঞ্চল্য রাজগঞ্জেস্ত্রীকে নির্যাতন, পরকীয়ার অভিযোগে পদ খোয়ালেন তৃণমূল ব্লক সভাপতিরাস্তায় যৌন হেনস্থা, ঠাটিয়ে চড় ফতিমাকে! শিউরে ওঠা ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রীচিকিৎসককে হুমকি, কাঞ্চনের 'অপরাধ' দেখছেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি! দিলেন ব্যাখ্যাওWorld Kebab Day: আজ বিশ্ব কাবাব দিবস, সপ্তাহান্তে লোভাতুর বাঙালির জন্য রইল শহরের ৫ দোকানের হদিসLocal Trains Cancel: আবার একগুচ্ছ লোকাল ট্রেন বাতিল, দুর্ভোগে নিত্যযাত্রীরাছিল তিন, হল চার, পুজোর ছবিতে নাটকীয় এন্ট্রি নিলেন দুঁদে গোয়েন্দা! চিন্তায় প্রযোজকরা
Israel Intelligence team

ইজরায়েলের ছায়াযুদ্ধ: কীভাবে কাজ করে তাদের গোয়েন্দা সাম্রাজ্য

বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্রে ইজরায়েলকে (Israel) নিয়ে আলোচনা হলে বারবার উঠে আসে তাদের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা শক্তির কথা।

ইজরায়েলের ছায়াযুদ্ধ: কীভাবে কাজ করে তাদের গোয়েন্দা সাম্রাজ্য

শেষ আপডেট: 16 June 2025 15:19

দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্রে ইজরায়েলকে (Israel) নিয়ে আলোচনা হলে বারবার উঠে আসে তাদের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা শক্তির কথা। কখনও বৈরুত, কখনও তেহরান কিংবা দামেস্ক — শত্রুর মাটিতে লক্ষ্যভেদে দক্ষ এই দেশের গোয়েন্দা বাহিনীর একেকটি অভিযান টানটান রহস্য গল্পের মতো। কখনও সশস্ত্র সংগঠনের শীর্ষ নেতাকে হত্যা, কখনও গোপনে তথ্য চুরি, আবার কখনও সাইবার জগতে ধ্বংসাত্মক হামলা চালিয়ে বিশ্বের নজর কেড়ে নেন ইজরায়েলি গোয়েন্দারা।

বিদেশের মাটিতে রক্তাক্ত অভিযান (Israel Iran War Update)
২০২৪ সালে বৈরুতে হেজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর হত্যার ঘটনা থেকে শুরু করে, দামেস্কে ইরানি কূটনৈতিক ভবনে হামলা, এমনকি হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ের তেহরানে নিহত হওয়ার নেপথ্যেও ইজরায়েলের নাম উঠে এসেছে। যদিও সরকারিভাবে সব সময় দায় স্বীকার করেনি তেল আবিব। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এইসব ছায়াযুদ্ধে ইজরায়েলি গোয়েন্দা বাহিনীর অপারেশন বরাবরই ছিল অত্যন্ত সুচারু পরিকল্পনায় সাজানো।

ইজরায়েলের গোয়েন্দা জগতের তিন স্তম্ভ
ইজরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক মূলত তিন ভাগে বিভক্ত — মোসাদ, শিন বেট (শাবাক) এবং আমান।
মোসাদ (Mossad): ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থা ইজরায়েলের বাইরের সব গুপ্তচরবৃত্তি, হত্যাকাণ্ড এবং অপারেশনের প্রধান চালিকাশক্তি। ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যায়ও মোসাদের ভূমিকা ছিল বলে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা হয়েছে।

শিন বেট (শাবাক): দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত এই সংস্থা পশ্চিম তীর, গাজা ও ইজরায়েলি ভূখণ্ডে সন্ত্রাস দমন, গুপ্তচর ধরতে এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করে।

আমান: ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর অধীনস্থ এই সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট মূলত যুদ্ধক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের দায়িত্বে থাকে। আমানের অধীনে রয়েছে আরও কয়েকটি শক্তিশালী ইউনিট, যারা আজকের দিনেও বিশ্ব গোয়েন্দা দুনিয়ায় আলাদা মর্যাদা রাখে।

ইজরায়েলের চার সুপার ইউনিট

ইউনিট ৮২০০ — ইজরায়েলের কান: এটি দেশটির সবচেয়ে বড় সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট। প্রায় ১০ হাজার সদস্যের এই বাহিনী মূলত সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স (SIGINT), ইলেকট্রনিক জগৎ, সাইবার যুদ্ধ এবং ডিজিটাল গোয়েন্দাগিরিতে পারদর্শী। এই ইউনিটের সদস্যরা বিশ্বের সেরা হ্যাকার, ক্রিপ্টোলজিস্ট ও সাইবার বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিবেচিত। ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিখ্যাত স্টাক্সনেট ভাইরাস হামলার নেপথ্যেও ছিল এই ইউনিট।

ইউনিট ৯৯০০ — ইজরায়েলের চোখ: উপগ্রহ, ড্রোন এবং বিভিন্ন বিমানের মাধ্যমে ছবির ভিত্তিতে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে এই ইউনিট। শহরভিত্তিক থ্রিডি ম্যাপিং, লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ থেকে শুরু করে সামরিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় তারা। এমনকি ইরানকে নজরদারিতে রাখার জন্য ইজরায়েলের ‘হরাইজন ১৩’ স্যাটেলাইটের ব্যবস্থাপনাও তাদের হাতে।

ইউনিট ৫০৪ —এটি মূলত হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স বা মানবসূত্র নির্ভর গোয়েন্দা বাহিনী। সীমান্তবর্তী দেশগুলিতে গুপ্তচর নিয়োগ, ইনফর্মার তৈরি, এবং সরাসরি মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ তাদের কাজ। গাজা, লেবানন সহ বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় এই ইউনিটের অনেক মিশন রহস্যাবৃতই থেকে যায়।

ব্রাঞ্চ ৫৪ — ২০২৩ সালে গঠিত এই নতুন ইউনিটটির কাজ মূলত ইরান এবং বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম খতিয়ে দেখা। মাত্র ৩০ জন সদস্য নিয়ে শুরু হলেও ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই ইউনিটকে ‘টার্গেট ব্যাংক’ তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইজরায়েলের গোয়েন্দা কার্যকলাপ শুধু শত্রু মারার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কখনও শত্রুপক্ষের পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেস্তে দেওয়া, কখনও রাজনৈতিক নেতাদের গতিবিধি নজরে রাখা, আবার কখনও গোটা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির মতো সাইবার অপারেশনেও তারা সমান দক্ষ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন — সারা দুনিয়ায় এমন কোনো গোয়েন্দা বাহিনী নেই যারা একই সঙ্গে মানুষের মন পড়তে পারে, সাইবার আক্রমণ চালাতে পারে, প্রযুক্তির শীর্ষ চূড়ায় বসে তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে, আবার প্রয়োজনে নির্ভুলভাবে শত্রু ঘাঁটিতে আঘাত হানতে পারে — ইজরায়েল ছাড়া।


ভিডিও স্টোরি