শেষ আপডেট: 12th October 2023 10:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শতাধিক মানুষকে পণবন্দি করে রেখেছে হামাস। তাদের উপর যে নির্মম নির্যাতন, হত্যালীলা চলছে তার বর্ণনা দেওয়া যাবে না। ইজরায়েল প্রশাসন বলেছে, পণবন্দিদের অধিকাংশই শিশু ও মহিলা। তাদের উপর নৃশংস অত্যাচার করছে হামাস জঙ্গিরা। শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। বাবা-মায়ের সামনেই গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে তাদের। হামাসের তরফে দাবি করা হয়েছে, তারা ১৬৩ জন ইজরায়েলি নাগরিককে বন্দি করে রেখেছে। গাজা স্ট্রিপের কোনও একটি গোপন সুড়ঙ্গে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, বন্দি করে রাখা এই নাগরিকদেরই মানব ঢাল বানাচ্ছে হামাস। এই পণবন্দিদের সামনে রেখেই ইজরায়েলকে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হামাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইজরায়েলি সেনার প্রতিটা পদক্ষেপের বলি হবে পণবন্দিরা। প্রতিটা আক্রমণের প্রত্যুত্তর হবে এক একজন পণবন্দির নির্মম মৃত্যু।
হামাস বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে একজোট হয়েছে ইজরায়েল সরকার। শাসক ও বিরোধী দলগুলি মিলিত হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন জরুরি সরকার গঠন করেছে। এই জোট সরকার ঘোষণা করেছে, গাজা স্ট্রিপে হামাসদের গোপন ডেরা লক্ষ্য করে এমন ভয়ঙ্কর হামলা হবে যা দেখে শিউরে উঠবে গোটা বিশ্ব। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টও বলেন, “আমি সকলের সামনে শপথ নিয়ে বলছি পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে হামাসকে।”
সোমবার রাত থেকেই গাজার একাধিক এলাকায় হামাস ঘাঁটি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। তবে তার আগেই অন্তত ১০০ জনকে পণবন্দি করে ফেলেছে জঙ্গি সংগঠনটি। তার মধ্যে রয়েছেন আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, নেপাল-সহ অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও। এহেন পরিস্থিতিতে হামাসের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। দেশবাসীকে তিনি বার্তা দিয়ে বলেছেন, দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে তাঁদের। সেই ঘোষণার পরেই গাজা সীমান্ত থেকে আক্রমণ শুরু করেছে ইজরায়েলি সেনা। হামাসের হত্যালীলা রুখতে ইজরায়েলের তরফে ১ লক্ষ সেনা পাঠানো হয়েছে গাজা সীমান্তেে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, বায়ুসেনাকেও হামাসের উপরে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গাজা স্ট্রিপ পুরোপুরি অবরুদ্ধ করেছে ইজরায়েলি সেনা। মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বোমাবর্ষণ। সাধারণত জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ জিনিসপত্রের জন্যই ইজরায়েলের উপর নির্ভরশীল গাজা। সীমান্ত এই শহর অবরুদ্ধ করে ফেলার পরে সেখানে জল-বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল। মুর্হুমুর্হু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতালের উপরে। ওষুধ আর মৃতদেহের পচা গন্ধে হাসপাতালগুলো মর্গে পরিণত হয়েছে। সেখানেই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন গাজার ঘরছাড়ারা।