আসিম মুনির।
শেষ আপডেট: 9 May 2025 11:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বৃহস্পতিবার রাতে বাংলার প্রথম শ্রেণির একটি টিভি চ্যানেল এই খবর ফলাও করে ছড়িয়ে দেয় পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে (Pakistan Army Chief General Asim Munir) গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই একই খবর কিছু হিন্দি খবরের চ্যানেলও দেখাতে শুরু করেছিল। অথচ বাস্তব হল, পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে গ্রেফতার করা বা তাঁকে সরিয়ে নতুন কাউকে সরানোর কোনও সরকারি খবর এখনও নেই।
বরং ঘটনা হল, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের একটি সাম্প্রতিক রায়ের ফলে পাক সেনা প্রধানের ক্ষমতা এখন আগের চেয়েও অনেকটাই বেড়েছে। গত ৭ মে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে জানায়, সেনা আদালতেও পাক নাগরিকদের বিচার চলতে পারবে। সেনা আদালতে সাধারণ নাগরিকের বিচারকে এক সময়ে পাক সুপ্রিম কোর্টই অসাংবিধানিক বলেছিল। এই রায় এবার উল্টে দেওয়া হল।
এই সিদ্ধান্তের ফল মারাত্মক হতে পারে। গত বছরের ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার প্রতিবাদে কিছু সামরিক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (PTI) কর্মী-সমর্থকরা। এবার সেনা আদালতে তাদের বিচার শুরু হতে পারে।
পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির যে সে দেশে খুব জনপ্রিয় তা নয়। বরং কূটনৈতিক বিশ্লেষকদেকদের অনেকের মতে, মুনিরের জনপ্রিয়তা কমছিল। সেই কারণেই তিনি হিন্দু-বিরোধী কথা ও 'দুই জাতি তত্ত্ব'কে আবার উস্কে দিতে শুরু করেছিলেন। তিনি কাশ্মীরকে পাকিস্তানের "জগুলার ভেইন" বলে উল্লেখ করেছিলেন এবং ভারতীয় সেনা অভিযানের সম্ভাবনা থাকলে "দ্রুত, সুসংগঠিত ও অধিকতর তীব্র জবাব" দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের রায় জেনারেল মুনিরকে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ দমনে একটি বড় হাতিয়ার তুলে দিল বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা। বালোচিস্তান ও খাইবার-পাখতুনখাওয়াতে সেনার নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে। ফলে মিলিটারি কোর্টের ছাড়পত্র তাঁকে সেই দমননীতিকে আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে বলে মত কূটনীতিকদের।
শুধু আসিম মুনিরকে গ্রেফতারের ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়নি, কিছু বাংলা সংবাদমাধ্যম এই খবরও প্রকাশ করেছে বা টিভির পর্দায় ব্রেকিং নিউজ বলে চালাচ্ছে যে করাচি বন্দরে হামলা করেছে ভারত। ভারতীয় নৌ বাহিনী থেকে ছোড়া মিসাইলের আঘাতে করাচি বন্দর তছনছ হয়ে গেছে। কিন্তু সেই খবরও একেবারেই ভুয়ো। গাজায় ইজরায়েলি হানার পুরনো ছবি দেখিয়ে করাচির ছবি বলে দাবি করা হয়েছে।