সংঘাতের আবহে বিমান পরিষেবাও বন্ধ। তাই বাড়ি ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। অন্যদিকে, তাঁর পরিবারের লোকেরাও চিন্তায় রয়েছেন। রোজ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, কথা বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন সুনীল।
গ্রাফিক্স- দ্য ওয়াল
শেষ আপডেট: 21 June 2025 19:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইরান ও ইজরায়েলের সংঘর্ষ (Iran-Israel Conflict) বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সংঘাতের জেরে ইজরায়েলের আকাশে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বিস্ফোরণের শব্দ আর বিপদ সংকেত - এই সবকিছুর মধ্যে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সেখানে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকরা। হঠাৎ মাঝরাতে সাইরেন বেজে ওঠা, বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়া, কিংবা আতঙ্কে ঘুম হারিয়ে ফেলা- এই সমস্ত অভিজ্ঞতা এখন তাঁদের জীবনের অংশ।
নিজের দেশ-পরিবার ছেড়ে থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে যুদ্ধের ছায়া যেন তাঁদের ঠিক ঘাড়ের ওপরে এসে পড়েছে। এসবের মাঝেই কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা, নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন সুনীল নামের এক যুবক।
বিহারে (Bihar) বাসিন্দা সুনীল কুমার কাজের সূত্রে গত ১৫ মাস ধরে ইজরায়েলে (Israel) রয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথমে এখানে কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু যেদিন থেকে সংঘাত শুরু হয়েছে, নানারকম সমস্যা-জটিলতা দেখা যাচ্ছে। মিসাইলের তীব্র আওয়াজ পাওয়া যায়, সাইরেনের শব্দ শুনি। ইরানের হামলায় ইজরায়েলের একের পর এক বহুতল ধ্বংস হয়েছে। এমনই একটি হামলার স্থানের থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে থাকেন সুনীল। ফলে তিনিও প্রতিনিয়ত প্রাণ বাঁচানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, একথা বলাই যায়।
সংঘাতের আবহে বিমান পরিষেবাও বন্ধ। তাই বাড়ি ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। অন্যদিকে, তাঁর পরিবারের লোকেরাও চিন্তায় রয়েছেন। রোজ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, কথা বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন সুনীল।
১৩ জুন ইজরায়েল প্রথম ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালায় ইরান। তারপর থেকেই শুরু হয় ক্ষেপণাস্ত্রের লড়াই। পাল্টা জবাব দেয় ইরান। যার ফল ইজরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেভাটিম এয়ারবেসের কাছে অবস্থিত বিয়ার শেভায় হামলা।
দেশটির জরুরি পরিষেবা সংস্থা ‘মাগেন ডেভিড আদম’ (MDA) জানিয়েছিল, শহরের আইটি হাবের কাছে মাটিতে আছড়ে পড়েছিল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র। আশপাশের এলাকায় আগুন লেগে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একাধিক গাড়ি জ্বলছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি বহুতল। শুধু অফিস নয়, বহুতলের বিভিন্ন ফ্ল্যাটেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধ আজ শনিবার গড়াল নবম দিনে। বিভিন্ন দেশের হাজারও চেষ্টার ফল শূন্য। থামার নাম নেই কোনও তরফেই। বরং দিন যত গড়াচ্ছে, ততই ভয়াবহ হচ্ছে পরিস্থিতি। শুক্রবার রাত থেকে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। এবার ইরানের পাল্টা প্রত্যাঘাতে বিপর্যস্ত ইজরায়েলের বহু এলাকা। রাতভর বাজল মুহুর্মুহু সাইরেন।
রাত আড়াইটে নাগাদ ইজরায়েলের সেনা (আইডিএফ) দেশের সব জায়গায় সতর্কতা জারি করে। জানিয়ে দেয়, ইরানের তরফে হামলা হতে পারে। এর কিছুক্ষণ পরই তেল আভিভ, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-সহ ইজরায়েলের অনেক এলাকায় সাইরেন বাজতে শুরু করে। আকাশে দেখা যায় ক্ষেপণাস্ত্র।
এর পর বসে থাকেনি ইজরায়েল। পাল্টা হামলা চালায় তারা। রাতের মধ্যেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের দিকে। ইজরায়েলের সেনা বলছে, ইরানের সেনাঘাঁটি আর ক্ষেপণাস্ত্র রাখার জায়গাগুলো ছিল তাদের নিশানায়। দক্ষিণ ইজরায়েলেও সারা রাত সাইরেন বেজেছে। ওদিকে ইরানও কম যায়নি, অন্তত পাঁচটা ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।