দুবাইয়ে করমর্দন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি ও আফগান বিদেশ মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির।
শেষ আপডেট: 10th January 2025 10:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্কের অবনতি ঘিরে যখন যুদ্ধের পরিস্থিতি তখন দুবাইয়ে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্ত্রির উপস্থিতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রকের শীর্ষ কর্তাদের দীর্ঘ বৈঠক হল তালিবান সরকারের (India-Taliban Meeting)। আফগানিস্তানের তরফে উপস্থিত ছিলেন সে দেশের কার্যনির্বাহী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। দিল্লির কর্তারা বৈঠক নিয়ে নীরবতা রক্ষা করলেও তালিবান নেতৃত্ব জানিয়েছে আলোচনার টেবিলে তাঁরা ভারতে আফগান ব্যবসায়ী, ছাত্র ও রোগীদের ভিসা দিতে নয়াদিল্লির কাছে আর্জি জানিয়েছে।
যদিও কূটনৈতিক মহলের মতে, দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে হওয়া বৈঠক শুধু ভিসা নিয়ে আলোচনায় সীমাবদ্ধ ছিল ধরে নেওয়ার কারণ নেই। স্বভাবতই দুবাইয়ে ভারত-আফগান বৈঠক চিন্তা বাড়িয়েছে পাকিস্তানের। ওই দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কের অবনতি যুদ্ধের দিকে এগচ্ছে। হালে দুই দেশই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছে। বিমান থেকে বোমা বর্ষণে নিহত হয়েছেন দু-দেশের বহু সাধারণ নাগরিক।
অন্যদিকে, ভারত এখনও সরকারিভাবে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি না দিলেও দু-দেশের কর্তাদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত। তার রেশ ধরেই দুবাইয়ের আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে আফগানিস্তানের ব্যবসায়ী বিশেষ করে শুকনো ফল বিক্রেতাদের আরও বেশি করে ভারতে আসার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির আর্থিক অবস্থা আগেই ভেঙে পড়ে। তালিবান ক্ষমতা দখলের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য। এইপরিস্থিতিতে ভারতকেই ত্রাতা মনে করছে তালিবান নেতৃত্ব।
কাবুলের কর্তাদের আর্জি অবিলম্বে আফগান ছাত্রদের ভারতে আসার ভিসা দেওয়া শুরু করা হোক। আরও বেশি করে ইস্যু হোক মেডিক্যাল ভিসা। কারণ সে দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসা না মেলায় সাধারণ অসুখবিসুখে মানুষ মারা যাচ্ছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবান নেতৃত্বের সম্পর্ক যখন তলানিতে ঠেকেছে তখন দূরত্ব এবং কাবুল ও নয়াদিল্লির বোঝাপড়ার সোনালি অতীত তুলে ধরে তালিবান নেতৃত্ব আর্জি জানিয়েছে, আগের মতো এবার আফগানিস্তানের পুনর্নির্মাণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক ভারত।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, দুবাইয়ের বৈঠকে ভারতের তরফে আফগানিস্তানের আর্জি দ্রুত বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়। ২০২১-এ তালিবান নতুন আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করতে নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির পরামর্শে আফগান নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে দেয়। তবে নিয়মিত আসা ব্যবসায়ীদের ভিসা চালু রাখা হয়েছিল। বৈঠকে তালিবান নেতৃত্ব ভারত সরকারকে কথা দিয়েছে, আফগান নাগরিকদের ভারতে পাঠানোর আগে তালিবান সরকার তাদের বিষয়ে নয়া দিল্লিকে লিখিত আশ্বাস দেবে যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোনও মৌলবাদী এবং জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত নন।
অন্যদিকে, নতুন করে ভিসা প্রদানের প্রক্রিয়া চালু না হওয়া পর্যন্ত ভারতের নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি আফগান ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করবে বলে দিল্লির তরফে আশ্বাস দেওয়া হয় বৈঠকে। সেই সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে ভিসা দেওয়া হবে রোগীদের। এ জন্য কাবুলের ভারতীয় দূতাবাস এবং কান্দাহার-সহ কয়েকটি শহরের কনস্যুলেট অফিসের ভিসা সেন্টার নতুন করে চালু করা হবে।