ভিভিয়ান জেনা উইলসন এবং ইলন মাস্ক।
শেষ আপডেট: 8th November 2024 13:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সদ্য নির্বাচনে জিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জয়ের পরে টেসলা-কর্তা ইলন মাস্ককে নিয়ে তাঁর উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। মাস্ককে 'নতুন তারকা' বলে উল্লেখ করেন তিনি। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রচারে আগে থেকেই জলের মতো টাকা ঢেলেছেন মাস্ক। সব মিলিয়ে মাস্ক-ট্রাম্প জোট নিয়ে ভালই চর্চা শুরু হয়েছে গোটা বিশ্বে।
এরই মধ্যে দেশ ছাড়তে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজনা ছড়ালেন ইলন মাস্কের মেয়ে জেভিয়ার আলেকজান্ডার মাস্ক তথা ভিভিয়ান উইলসন। তিনি রূপান্তরকামী। তাঁর জন্ম সংশাপত্রে লিঙ্গের জায়গায় পুরুষ উল্লেখ করা হলেও, তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করে মেয়ে হয়েছেন। তার পরে নামও বদলে নিয়েছেন। সর্বোপরি, বাবা ইলন মাস্কের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
এবার ট্রাম্পের জয়ের পরে ভিভিয়ান মন্তব্য করলেন, আমেরিকায় আর কোনও ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। এই কথা বলে দেশ ছাড়তে চাইলেন ভিভিয়ান।
বুধবার ট্রাম্পের জয়ের পরেই মেটা-র থ্রেডস প্ল্যাটফর্মে নিজের মতামত লেখেন ভিভিয়ান। তিনি লেখেন, 'আমি কিছুদিন ধরেই এটা ভাবছিলাম, কিন্তু গতকাল আমি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছি। আমেরিকায় আর আমার কোনও ভবিষ্যৎ আছে বলে মনে হচ্ছে না।'
তিনি আরও লেখেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প যদিও মাত্র চার বছরের জন্য ক্ষমতায় আছেন, তবে এর মধ্যে রূপান্তরকামী-বিরোধী আইনের বদল আসবে না। কারণ যাঁরা স্বেচ্ছায় তাঁকে ভোট দিয়েছেন তাঁরা এই বিষয়েও সহমত হবেন তাঁর সঙ্গে।'
ভিভিয়ান আমেরিকা ছাড়ার কথা লিখতেই টুইটারে তার পাল্টা জবাবও দেন মাস্ক। লেখেন, 'জাগ্রত হওয়ার পরে আমার ছেলে মৃত।' সেই স্ক্রিনশট আবার শেয়ার করেন ভিভিয়ান। লেখেন, 'আপনি এখনও কান্নাকাটির গল্প ফেঁদে যাচ্ছেন যে কীভাবে আমি 'সংক্রামিত' হয়েছি। এই জন্যই সবাই আমায় ঘৃণা করে। দয়া করে এটা করবেন না... আমি সবসময়ই আক্রান্ত হয়ে থেকে গেছি।'
বাবাকে আক্রমণ করে ভিভিয়ান আরও লেখেন, 'আপনি আসলে হতাশ, কারণ দিনের শেষে আপনার চারপাশে থাকা সবাই জানে যে আপনি আদতে পাগল এবং সবসময় অন্যকে নিজের মর্জিমতো নিয়ন্ত্রণ করতে চান। আপনি ৩৮ বছর ধরেও পরিণত হননি। তাতে আমার কিছু যায় আসে না।'
ধনকুবের মাস্কের প্রথম স্ত্রী জাস্টিন উইলসনের ছয় সন্তান। তাঁদের মধ্যেই একজন এই ভিভিয়ান উইলসন। ২০০৮ সালে ইলন মাস্কের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে যায় জাস্টিন উইলসনের। তারপর থেকে মায়ের সঙ্গেই রয়েছেন জেভিয়ার। তখন তার বয়স মাত্র চার। সেই থেকেই বাবার সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তার।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ইলন মাস্ক রূপান্তরকামীদের নিয়ে একটি বিতর্কিত টুইট করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, 'আমি ট্রান্সদের সমর্থন করি, কিন্তু এই সমস্ত জিনিসগুলি একটি দুঃস্বপ্নের মতো।' এর পরে, বছর দুয়েক আগে রিপাবলিকান পার্টির প্রতি নিজের সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন স্পেস এক্স সিইও মাস্ক। এই রিপাবলিকানরাই গোটা দেশজুড়ে রূপান্তরকামীদের ক্ষমতা সীমিত করার আইন প্রস্তাব করেছিল। সেই থেকেই আরও খেপে ওঠেন ভিভিয়ান।
এর পরে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসেই বাবা ইলন মাস্কের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা আদালতে জানিয়েছিলেন জেভিয়ার। পিটিশনে জাস্টিন উইলসনের নাম তাঁর মা হিসেবে উল্লেখ করেন জেভিয়ার। তিনি বলেন, 'আমার জন্ম সংশাপত্রে লিঙ্গের জায়গায় পুরুষ উল্লেখ করা রয়েছে। কিন্তু, লিঙ্গ পরিবর্তনের পর বর্তমানে আমি একজন নারী। এবং নতুন পরিচয়পত্রে আমি বাবার উল্লেখ চাই না। আমার নাম ভিভিয়ান, পদবী উইলসন।'
অভিযোগ, সেই থেকেই ভিভিয়ানকে নানা ভাবেই হেয় করে চলেছেন তাঁর বাবা ইলন মাস্ক। বারবারই বলেছেন, তাঁর ছেলে তাঁর কাছে মৃত। ভিভিয়ানও তাঁর বাবাকে বিঁধতে ছাড়েননি। 'ঠান্ডা ও নিষ্ঠুর' প্রকৃতির ব্যক্তি বলেই বারবার উল্লেখ করেছেন বাবা মাস্ককে।