শেষ আপডেট: 27th September 2024 10:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ভাষণে এবার কাশ্মীর নিয়ে নীরব থাকলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোগান। ২০১৯-এর পর থেকে গত পাঁচ বছর তাঁর ভাষণে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। কোনওবার বিচ্ছিন্নতাবাদী তো কোনওবার পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন ভারত সরকারকে। সরব হয়েছেন কাশ্মীরে মানবাধিকার হরণের অভিযোগ নিয়েও, যা ভারত সরকার ভালভাবে নেয়নি। যদিও তুরস্কের ভূমিকম্পের সময় বিপুল ত্রাণ সামগ্রি এবং উদ্ধারকারী দল পাঠিয়ে ভারত বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়।
২০১৯ থেকে প্রতি বছর পালা করে ভাষণে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে ভারত সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন এরদোগান। এবার তাঁর ভাষণ নয়া দিল্লিতে স্বস্তি দিল বলা চলে। বিশেষ করে কাশ্মীরে ভোট চলাকালে এরদোগানের ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নীরবতা তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক অধিকারের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বারে বারে সরব হন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। বিধানসভাব ভোটে সেই ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ অন্যতম ইস্যু। কংগ্রেস আভাস দিয়েছে, ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ ফেরানোর। অন্যদিকে, বিজেপি ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করেই ভোটে লড়াই করছে।
এরদোগান এবার কেন কাশ্মীর নিয়ে মুখ খুললেন না? কূটনৈতিক মহলের খবর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এই ব্যাপারে নিজের দেশের স্বার্থকে বিবেচনায় রেখে কাশ্মীর প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন। আগামী মাসে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ব্রিক্সস (ব্রাজিল-রাশিয়া-ভারত-চিন-দক্ষিণ আফ্রিকা)-এর সম্মেলন। তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে এই অর্থনৈতিক জোটের সদস্য হতে। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ইথিওপিয়া, ইরান, ইজিপ্ট ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহিকে ব্রিক্স-এর সদস্য করা হয়। তখনই ঠিক হয় সদস্য বাড়লেও জোটের নাম ব্রিক্স-ই থাকবে।
নতুন দেশগুলিতে সদস্যপদ দেওয়ার ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে ব্রিক্সের সম্মেলনে অতিথি হিসাবে আপ্যায়ন করেছেন। এরদোগান চাইছেন পুতিন-মোদী সু-সম্পর্কের সু়যোগ নিয়ে তাঁর দেশকে ব্রিক্সের সদস্য করতে। সেই কারণে ভারতকে খুশি রাখতে রাষ্ট্রসংঘের ৭৯ তম অধিবেশনের ভাষণে এবার কাশ্মীর প্রশ্নে নীরব ছিলেন এরদোগান, মনে করছেন কূটনীতির বিশেষজ্ঞরা। গত পাঁচ বছর কাশ্মীরকে হাতিয়ার করে ভারতকে চাপে রেখেছিলেন এরদোগান। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ভাষণ নিয়ে ভারত সরকার কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।