শেষ আপডেট: 6th February 2025 10:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলিটদের নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলেন। জাতীয় মহিলা ক্রীড়া দিবসে এক আদেশে সই করে ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, মেয়েদের খেলাধুলায় শুধুমাত্র ‘জন্মগত নারী’রা অংশ নিতে পারবেন। যার অর্থ, মার্কিন ক্রীড়া ক্ষেত্রে বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে।
বিতর্কিত এই আদেশের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন স্কুল ও কলেজগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন, যাতে তারা ট্রান্সজেন্ডার বা বৃহন্নলাদের মহিলাদের ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়। নির্দেশ অমান্য করলে ফেডারেল তহবিল কেটে নেওয়া হবে বলেও স্পষ্ট জানানো হয়েছে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এ নীতির প্রচলন করতে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি-র (IOC) উপর লবিং চালাবে ট্রাম্প প্রশাসন।
ট্রাম্পের ভাষায়, এই সিদ্ধান্ত নারী ক্রীড়াকে রক্ষা করবে। তবে সমালোচকদের দাবি, এটি সরাসরি ট্রান্সজেন্ডার নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক। কানেক্টিকাট-এর অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম টং আদেশটিকে ‘আইনবহির্ভূত ও নিষ্ঠুর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই নীতির বিরুদ্ধে লড়তে একাধিক রাজ্য একসঙ্গে আদালতে যাচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, নতুন নিয়ম চালু হলে ক্রীড়াঙ্গনে ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলিটদের প্রতি আরও বৈষম্য তৈরি হবে। এমনকি, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে পরীক্ষার নামে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত তথ্য হস্তগত করা হতে পারে, যা উদ্বেগের বিষয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতি বাস্তবায়িত হলে ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশন (NCAA)-এর মতো প্রতিষ্ঠানকেও তাদের নিয়মাবলী বদলাতে হতে পারে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, অলিম্পিক কমিটির মডেল অনুসরণ করে ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা প্রতিটি খেলাধুলার ক্ষেত্রে আলাদা যোগ্যতার মাপকাঠি ঠিক করেন। কিন্তু ট্রাম্পের নতুন আদেশ NCAA-কে বাধ্য করতে পারে ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলিটদের পুরোপুরি বাদ দিতে।
এই বিতর্ক শুধু ক্রীড়াঙ্গনে আটকে নেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মঞ্চেও বড় ইস্যু হয়ে উঠছে। রিপাবলিকানরা বলছেন, এটি নারী অ্যাথলিটদের সুরক্ষা দেওয়ার লড়াই। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে ট্রান্সজেন্ডারদের প্রতি বৈষম্য বলে সমালোচনা করছে।
ইতিমধ্যে, মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে একটি বিল পাস হয়েছে, যেখানে নারী ক্রীড়ায় ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। তবে সিনেটে এটি পাশ করানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। মোটকথা, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি আদেশ নয়, বরং মার্কিন সমাজে এক নতুন রাজনৈতিক সংঘাতের আগুন জ্বালিয়ে দিল।