শেষ আপডেট: 2nd January 2025 18:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দক্ষিণ কোরিয়ায় জেজু এয়ারলাইন্সের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকেই নিজের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন। তেমনি বিমান দুর্ঘটনায় পরিবারকে হারিয়ে ঘরছাড়া হয়ে পড়েছিল পুডিং নামের একটি ছোট্ট কুকুর। পরে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেছে বলে খবর।
বুধবার অর্থাৎ নতুন বছরের প্রথম দিনে কেয়ার নামে সংস্থাটি জানিয়েছে, ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় পুডিং যে বাড়িতে থাকত, সেই পরিবারের ন’জন সদস্যের একসঙ্গে মৃত্যু হয় বলে খবর। এরপরই তাকে দক্ষিণ জিওলার ইয়ংগওয়াং কাউন্টিতে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
আচমকা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল সংস্থাটি? জানা গেছে, নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে কেয়ার জানিয়েছে, কোনওরকম অভিভাবক ছাড়া একা তার পক্ষে ঘুরে বেড়ানো বিপজ্জনক। পুডিং যে পরিবারের কাছে এতদিন থাকত তাঁদের এমন মর্মান্তিক পরিণতির পর উপযুক্ত কোনও অভিভাবক না পেলে তাকে নিজেদের কাছেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর থেকে পুডিংকে গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। স্থানীয়দের মতে, কুকুরটিতে প্রায় রাস্তায় দেখতে পাওয়া যেত। প্রতিদিনই পরিবারের মৃত সদস্যদের খোঁজ করতে থাকে সে। বেশ কয়েকদিন না খাওয়াদাওয়ার কারণে শরীরও অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে খবর। পরে পুডিংয়ের পরিস্থিতি দেখে স্থানীয়রা পাশে দাঁড়ান। তার মুখে তুলে দেওয়া হয় জল ও খাবার।
কেয়ার সংস্থাটি জানিয়েছে, কুকুরের সঙ্গে যখন আমাদের প্রথম দেখা হয়, তখন আমরা গ্রামের বাইরে তাকে মন খারাপ করে চুপচাপ বসে থাকতে দেখেছি। আমাদের দলকে দেখা মাত্রই পুডিং আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। ওর মনে হয়েছিল পরিবার আবার ফিরে এসেছে।
এরপর সংস্থাটি পুডিংকে সিউলে নিয়ে যায় এবং যেখানে এটি একটি ভেটেরিনারি হাসপাতালে ভর্তি করায়। জানা গেছে কুকুরটির বমি শুরু হয়। রাস্তার ফেলে দেওয়া খাবভার খেয়েই এমন অবস্থা হয় তার। পুডিংয়ের বমিতে পেঁয়াজ এবং মুরগির হাড়ের মতো ক্ষতিকারক খাবার পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
তবে যতদিন না পুডিং একটি উপযুক্ত বাড়ি ও পরিবার না পায়, ততদিন সে তাঁদের কাছেই থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি। জানা গেছে, গত রবিবার ২৯ ডিসেম্বর জেজু এয়ারলাইন্সের ৭সি ২২১৬ বিমানটি থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক থেকে ফিরছিল। অবতরণের মুহূর্তে রানওয়ে থেকে সরে গিয়ে দেওয়ালে সজোরে ধাক্কা লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। বিমানে থাকা ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে ১৭৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নহাপ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে ল্যান্ডিং গিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিকে আবার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাইলট যখন অবতরণ করার চেষ্টা করেন, তখন বিমানের চাকা ঠিক করে কাজ করেনি।