Date : 21st May, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দিল্লি! দেরিতে ছাড়বে আটটি আন্তর্জাতিক বিমান, বাতিল ১ঝড়-বৃষ্টির জেরে শিয়ালদহ-লালগোলা ট্রেনে পড়ল গাছ, দাউ দাউ করে জ্বলল মহিলা কামরাবিশ্বের দরবারে সম্মানিত ভারত, নিউ ইয়র্কে ড. অচ্যুত সামন্তের নামে হল গবেষণা প্রতিষ্ঠানIndigo Flight: ইন্ডিগোর বিমানের নাক ভেঙে গেল, তীব্র ঝাঁকুনির পর তড়িঘড়ি নামল শ্রীনগরেচাপ নয়, জীবনের আসল খুশি লুকিয়ে রয়েছে এইসব পেশায়, বলছে গবেষণা! আপনিও কি তাঁদের মধ্যে একজন?'ওকে আমি ভালবাসি! ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যে', থানায় গিয়ে মায়ের কীর্তি ফাঁস করল মেয়েUber Rapido: উবারের পর এবার নজরে র‍্যাপিডো-ও, অ্যাডভান্স টিপ নিয়ে তদন্তে সরকার'বিয়ে করতে চাই...' পাক গোয়েন্দাকে বলেন জ্যোতি! হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্যপাকিস্তানের আরও এক কূটনীতিককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন দেশ ছাড়তে বলা হল? ইসলামাবাদ কী বলছে!আদালতের নির্দেশের পরই বিধাননগর থানায় হাজিরা দিতে গেলেন তিন শিক্ষক! কী বলছেন আন্দোলনকারীরা?
China Agriculture Industry Partnership

চাষের জমি বাঁচিয়ে ‘কৃষি-শিল্প দুই-ই ভিত্তি, দুই-ই ভবিষ্যৎ চিনে’, দিল্লির কড়া নাড়ছে বেজিং

ফার্মল্যান্ড বাঁচিয়ে কৃষি-শিল্পের যুগলবন্দি গড়ে খাদ্যে স্বনির্ভর চিন। ভারতকে শিল্প সহযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে বেজিং।

চাষের জমি বাঁচিয়ে ‘কৃষি-শিল্প দুই-ই ভিত্তি, দুই-ই ভবিষ্যৎ চিনে’, দিল্লির কড়া নাড়ছে বেজিং

ফাইল চিত্র

শেষ আপডেট: 4 May 2025 08:57

অমল সরকার

চিনে আমাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা মোটের উপর ভালই ছিল। পরিচিতদের মুখে আগে শুনেছিলাম, এই সফরে প্রত্যক্ষ করলাম, মেনুতেই টের পাওয়া যায় চিনের অভাবনীয় অগ্রগতি। চিনারা আমিষাসি I(non-veg)। মাছ-মাংস (Fish and meat) সহযোগে প্রচুর প্রোটিন খায়। তাতে ডিম তুলনায় কম। সি ফুডের (sea food) আধিক্য টের পেলাম। কিছু একটা দিয়ে একেবারে শেষপাতে সামান্য ভাত খান, বলছিলেন আমাদের চিনা (China) বন্ধুরা। আমাদেরও তেমন অভিজ্ঞতাই হল। সাত-আটজনের জন্য এক বাটি ভাত পরিবেশন করা হল। ততক্ষণে বলতে গেলে সকলের খাওয়া শেষ।

তবে এতো গেল মহার্ঘ হোটেল-রেঁস্তরার খাবার। সাধারণ পরিবারেও কি মানুষ এসবই খায়? আমাদের সঙ্গে সফরসঙ্গী চিনের বিভিন্ন প্রদেশেরসাংবাদিকেরা ঘাড় নেড়ে সায় দিলেন, মোটের উপর এসবই চিনের মানুষের নিত্যদিনের মেনুতে থাকে। তবে যে কথাটি না বললেই নয়, চিনারা মাছ-মাংসের প্রায় সমান পরিমাণে শাক-সবজি খায়। আমাদের মতো শাকভাজা খাওয়ার চল তো আছেই, আমিষের অনেক পদেই কোনও না কোনও সবজি ছিল। দুটি নামি রেঁস্তরায় মেনুতে ছিল কুমড়ো ভাজা। নানা জাতীয় স্যুপেও সবজির ছড়াছড়ি। পাঁচতারা একটি হোটেলে সি ফুডের তালিকায় লোটে মাছও ছিল। চিনা শেফ সেটাও সবজি দিয়ে এমনভাবে রান্না করে দিল যে এই প্রথম পাতে অক্ষত লোটে মাছ পেলাম।

চিনের জিমলিন কোম্পানির তৈরি এলিভেটর

ভাতের চল যেমন কম, রুটি-পাউরুটিও তেমন একটা খেতে দেখলাম না। আমি মনে মনে এর কারণ অনুসন্ধান করছিলাম। ধরে নিয়েছিলাম, সুগারের সমস্যা চিনের মানুষের হয়তো আমাদের থেকে বেশি। তাই হয়তো কমিউনিস্ট শাসকেরা শর্করা জাতীয় খাবারে নিয়ন্ত্রণ জারি করেছেন। অথবা ধান-গম উৎপাদন হয় কম।

হুনান প্রদেশে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির বিদেশ বিষয়ক অফিসের (Office of foreign affairs commission of CPC Hunan provincial committee) তরফে যে তরুণী আমাদের গাইড করছিল তাঁর কাছে জানতে চাইলাম বিষয়টি। সে হুনানের শাওশানের সেই স্কুলে পড়েছে যেটায় কিনা চিনের প্রবাদপ্রতীম, একই সঙ্গে বিতর্কিত কমিউনিস্ট নেতা মাও জে দং Mao Zedong) পড়তেন। তরুণীর মুখ থেকে আমার প্রশ্ন শুনে সঙ্গী এক চিনা আধিকারিক মৃদ্য হেসে বললেন, ভারতের তুলনায় আমরা আয়তনে বড় দেশ হলেও আমাদের চাষযোগ্য জমি আপনাদের থেকে কম। তবে  অনেক ফসল, শাক-সবজি উৎপন্ন হয় প্রায় চারগুণ বেশি।

জেমলিন কোম্পানির ফসল কাটার মেশিন

হুনানের (Hunan) রাজধানী ছাঙশা (Changsha) থেকে আমরা গিয়েছিলাম প্রায় নয়শো কিলোমিটার দূরে ফুচিয়েন (Fujian) প্রদেশের নিংদে  (Nigde) শহরে। একদিন রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে শহর দেখতে বেরিয়ে দেখলাম, শপিং মলেও ঢেলে শাক-সবজি কেনাকাটা চলছে। রাস্তার পাশের রেঁস্তরা, খাবার হোটেলে ক্রেতা টানতে সামনে নানা জাতের মাংসের সঙ্গে শাক-সবজিও ঝুলছে লক্ষ্য করলাম।

এ পর্যন্ত পড়ে এই লেখা ফুড ব্লগ মনে হতে পারে। আসলে খাবার টেবিলে চিনের চাষ-আবাদ, কৃষি অর্থনীতির সুলুক সন্ধান করছিলাম আমি। হুনান, ফুজিয়েনের নানা শহরে যাওয়া আসার সময় টের পাচ্ছিলাম কলকারখানার রমরমা, যা নিয়ে ভারতে রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) হইচই বাঁধিয়ে দিয়েছেন। একদিকে, লাদাখে (Ladakh) ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনের লালফৌজ (Red army) দখল নিয়েছে বলে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দেওয়ার অনুযোগ করছেন। আর একদিকে, উৎপাদন শিল্পে চিনের অগ্রগতি থেকে শিক্ষা নিতে বলছেন। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা বলছেন, ২০২০-তে পার্টি শততম বর্ষে পা রাখার আগেই ১৪০ কোটি মানুষের খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। খাদ্য পণ্যের দাম আয়ত্বের মধ্যে। অন্যদিকে, তথ্যপ্রযুক্তির মতো পরিষেবা ক্ষেত্রের পাশাপাশি উৎপাদনমুখী শিল্পেও অগ্রগতি অভাবনীয়।  

দু-দশক আগেও অবস্থা এমন ছিল না। রপ্তানিমুখী অর্থনীতি শিল্পে উৎপাদন চাহিদাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে ফসল উৎপাদনে ঘাটতির দেখা দেয়। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ২০০৬-এ কৃষি জমি রক্ষায় ‘রেড লাইন’ (Red Line) জারি করে পার্টি। বলা হয়েছিল, চাষের জমির পরিমাণ যেন কোনও অবস্থাতেই ১২ কোটি হেক্টরের নিচে না নামে। উর্বর চাষের জমির সংকট চিনে প্রকৃতি পদত্ত। যেখানে চাষের জমি বিশ্বের মোট আবাদযোগ্য জমির ১০ শতাংশেরও কম। অথচ পেটে খাবার জোগাতে হয় পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশকে।

ওয়াসন কোম্পানির তৈরি স্মার্ট মিটার

সময়টা লক্ষণীয়। পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadev Bhattacharya) সঙ্গে বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) তখন সিঙ্গুরের (Singur) উর্বর জমিতে টাটার কারখানা করা নিয়ে তুমুল বিবাদ চলছে। রাজ্যের বাস্তবতা মেনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নিরুপম সেনরা কারখানার পক্ষে গলা চড়িয়েছিলেন। বাংলার সিপিএমের সভা-সমিতিতে তখন ঝড় তুলেছে কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ।

ঘটনাচক্রে এর দু’বছরের মাথায়, ২০০৮-এ শীতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের (Manmohan Singh) সঙ্গে আমার চিন সফরে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। বেজিং (Baijing) ছাড়াও আশপাশের বেশ কিছু এলাকা এবং চিনের প্রাচীর বা গ্রেট ওয়াল পরিদর্শনের সুযোগ হয়। চিনে তখন সদ্য অলিম্পিক শেষ হয়েছে। হোটেলের লবিতে বেজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের (Beijing university) একদল ছাত্রছাত্রীর মুখ থেকে শুনেছিলাম এক্সপেসওয়ে, নতুন বিমানবন্দর, স্টেডিয়াম ইত্যাদি তো ছিলই, স্পেশ্যাল ইকোনমিক জোন তৈরির জন্য কীভাবে হাজার হাজার একর জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে।

সিপিএমের মতো চিনা কমিউনিস্ট পার্টিতেও জমি নিয়ে বিবাদ-বিতর্কও কম হয়নি। সে দেশের তখনকার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নিরুপম সেনরা প্রশ্ন তুলেছিলেন রেড লাইন-এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। উদারপন্থীরা যুক্তি দেন, নগরায়নের জন্য কৃষিজমি উন্মুক্ত করা উচিত। বেজিং থেকে গ্রেট ওয়াল যাওয়ার পথে লক্ষ্য করেছিলাম রাজধানীর ভোলবদলে কীভাবে গ্রাম চলে যাচ্ছে শহরের গ্রাসে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, সেই পর্বে চিন এক কোটি হেক্টরের বেশি আবাদযোগ্য জমি হারিয়েছে।

তারপরও চিন খাবারে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একটি হিসাব অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে যেখানে শস্য বাণিজ্যের পরিমাণ ৪০ কোটি মেট্রিক টন, সেখানে চিন একাই উৎপাদন করে ৬০ কোটি টন। এই বিপুল খাদ্যসামগ্রীর সংরক্ষণ, বিপণনের দায়িত্ব প্রদেশগুলির।

চিনের কোম্পানি সিএটিএল ব্যাটারি চালিত বিমান তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে

কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ ফসল উৎপাদন কীভাবে সম্ভব হল? এককথায় কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। একই সঙ্গে কৃষি ও শিল্প এবং গ্রাম ও শহরের মেলবন্ধনের পথে এগোয় দেশটি। ততদিনে, কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষে পদে বসে গিয়েছেন শি জিনপিং। পার্টি ও প্রশাসনকে শিল্প ও কৃষি এবং শহর ও গ্রামের সম্পর্ক সমাধানের একটি ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ হিসেবে বিবেচনার ডাক দেন তিনি। শি এই প্রক্রিয়াকে ‘সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়ন’ বলেছেন। শিল্প ও কৃষি এবং শহর ও গ্রামের সম্পর্ক পুনর্গঠনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ কমিউনিস্ট পার্টির কথায় এই নীতি হল, শিল্প কৃষিকে আর শহর গ্রামকে সহায়তা করবে। শি’র কথায়, সমৃদ্ধ শহরে পাশে দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামের সহাবস্থান আমাদের দলের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী এবং সমাজতন্ত্রের মৌলিক চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমাদের উচিত গ্রাম পুনরুজ্জীবিত করা এবং শহর-গ্রাম সমন্বিত উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের একটি নতুন পর্যায় শুরু করা।’

বলে রাখা ভাল, কৃষিতে চিনের এই সাফল্যের অনেকটা কৃতিত্বই জমির সম্মিলিত মালিকানা। পশ্চিমবঙ্গে বাম জমানার মাঝামাঝি সময়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন ছোট ছোট চাষের জমির একত্রীকরণের (consolidation of small farm land) প্রস্তাব নিয়ে কথা উঠেছিল বাম শিবিরে। গ্রামস্তরে রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে সেই প্রস্তাব নিয়ে দল ও সরকার এগোনোর সাহস পায়নি।

কৃষির পাশাপাশ শিল্পে চিনের অগ্রগতিও পশ্চিমের ধনতান্ত্রিক দুনিয়া মেনে নিয়েছে। তাদের যত আপত্তি এই উন্নয়নকে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিজয় হিসাবে তারা মানতে নারাজ। হুনান থেকে ফুচিয়েন যাওয়ার আগে সকালে আমরা গিয়েছিলাম ওয়াসন এবং জুমলিয়ন গ্রুপের প্ল্যান্ট পরিদর্শনে। বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী চিন ২০২৩ সালে একশো শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। হুনানের ছাঙশায় গড়ে ওঠা ওয়াসন গ্রুপ মূলত ইলেকট্রনিক মিটার তৈরি করে, যা বিদ্যুৎ, পানীয় জল, রান্নার গ্যাসের জন্য ব্যবহার করা হয়। কেউ চাইলে মিটারে চোখ রেখে এই তিনটি অত্যাবশ্যকীয় জিনিসের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে পারে। ১৯৯৪ সাল থেকে মিটার তৈরি শুরু করা এই কোম্পানিটি ৫০টি দেশ ও অঞ্চলের ১৪০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করে। তাদের ক্রেতার তালিকায় বাংলাদেশ আছে। কিন্তু ভারত নেই। সংস্থার স্থানীয় কর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, ভারত সরকারের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। ব্যবসায়িক আলোচনা করতে ভারত সফরের ভিসাও মেলেনি।

চাঙশার দ্বিতীয় কারখানাটির নাম জুমলিয়ন। সেটি একদিকে, বহুতল তৈরির যন্ত্রপাতি তৈরি করে। আবার খনি এবং চাষের কাজের যন্ত্রাংশও বানায়। নির্মাণ যন্ত্রপাতি উৎপাদনে চিনের এই কোম্পানিটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির একটি। তাদের টাওয়ার ক্রেন, ক্রলার ক্রেন, কংক্রিট পাম্প ট্রাক, হুইলড ক্রেন জাতীয় পর্যায়ে ‘লিটল জায়ান্ট’ বলে স্বীকৃত হয়েছ। কৃষিযন্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবেও পরিচিত। যার মধ্যে আছে ট্র্যাক্টর, ফসলের চারা রোপনের যন্ত্র, রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার, ধান, গম, ভুট্টা, আখ কাটার যন্ত্র। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জলবায়ু, আবহাওয়া এবং ফসল চাষের প্রচলিত পদ্ধতি বিবেচনায় রেখে যন্ত্র তৈরি করে এই কোম্পানি।

পরিবেশের কথা বিবেচনায় রেখে চিন এখন ব্যাটারি চালিত গাড়ি তৈরিতে গুরুত্ব দিয়েছে। ফুচিয়েনের নিন্দে শহরের সিএটিএল (CATL) তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান। শুধু সাধারণ যানবাহনই নয়, সব ধরনের গাড়ি, এমনকী বিমানও ব্যাটারিতে চালাতে আত্মবিশ্বাসী সংস্থাটি। ছোটমাপের বিমানে তাদের পরীক্ষা সফল হয়েছে। ফলে আগামী দিনে ট্রেনও হয়তো চলবে সৌর বিদ্যুৎ সমৃদ্ধ ব্যাটারিতে। ইওরোপের বিভিন্ন দেশে গাড়ির ব্যাটারি সরবরাহ করছে এই সংস্থা। এই সংস্থাও ভারতে ব্যবসা করতে আগ্রহী।

শিল্পকর্তাদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে ভারত সরকারের মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের কথা এল। ভারতে কি কারখানা গড়তে আগ্রহী চিনের এই সংস্থা? জবাব এল, এখনও ততটা ভাবা হয়নি। যদিও তিন শিল্প প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প নিয়ে তাদের পরামর্শ জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, বিদেশি সংস্থাকে কারখানা গড়ার উৎসাহ দিতে ভারত সরকারকে আরও শিল্পবান্ধব নীতি নিতে হবে।

বলাইবাহুল্য সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রসঙ্গ এল। একান্তে তাঁরা স্বীকারও করলেন মার্কিন নীতির ফলে রপ্তানিতে ধাক্কা এসেছে। চিনকেই বেশি টার্গেট করেছেন ট্রাম্প। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট হয়েও ২০১৯-এ বেজিংয়ের কর্তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও বিরোধিতার দ্বিমুখী নীতি নিয়েছিলেন তিনি। ফলে ট্রাম্পের দ্বিতীয়বারের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা প্রবল হতেই শিল্পমহলকে সম্ভাব্য মার্কিন বাণিজ্য হামলা নিয়ে সতর্ক করেছিলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রশাসন। তখন থেকেই আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া এবং ভারত-সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির বাজার ধরার চেষ্টা শুরু করেছে। তবে কড়া নাড়লেও নয়াদিল্লির সাড়া মেলেনি। গত ১ এপ্রিল থেকে দু-দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ তম বর্ষ উদযাপন শুরু হয়েছে। চিনের শিল্পমহল মনে করে এই ক্ষেত্রেও দু-দেশের সম্পর্কের বরফ গলা জরুরি।


ভিডিও স্টোরি