শেষ আপডেট: 12th April 2024 12:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মানবসম্পদকে চ্যালেঞ্জ জানাতে দরজার গোড়ায় দাঁড়িয়ে হুমকি দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। যেদিন কম্পিউটার এসেছিল, সেদিন থেকে চাকরির দুনিয়ায় কাঁচি পড়তে শুরু করে। সভ্যতা এবং প্রযুক্তির যত উন্নতি হয়েছে, ততই চাকরির বাজারে লেগেছে শনির নজর। এবার সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ, মানুষের এবং চাকরি-শ্রমের দুনিয়ায় তার প্রভাব নিয়ে মুখ খুললেন মাইক্রোসফটের প্রধান বিল গেটস।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে অতিক্রম করে যাবে কি না এ নিয়ে বিতর্ক চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। তবে এ বিষয়ে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই নিশ্চিত যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের কাজের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে চলেছে। যেমন শিল্পবিপ্লবের সময় সবকিছু বদলে গিয়েছিল, তেমনই ফের শ্রমক্ষেত্রে বিপ্লব এসে গিয়েছে। সাধারণ কর্মীর থেকে অনেক দ্রুত, নিখুঁত, বেশি কাজ করতে পারে এআই। মাইক্রোসফটের কর্তা বিল গেটসের দৃষ্টিভঙ্গিতে এআই অত্যন্ত ভালো। তাঁর বিশ্বাস, মানুষের কাজে সুবিধা করবে এআই। কর্মদিবসকে সাপ্তাহিক তিনদিনে নামিয়ে আনতে পারবে।
মাইক্রোসফটের এআই প্রকল্পের বর্তমান প্রধান হলেন গেটস। খোদ গেটস এআইয়ের গুরুত্ব এবং আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে তার প্রভাব নিয়ে মনের কথা বললেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে কর্পোরেট দুনিয়ায় কর্মদিবস সপ্তাহে তিনদিনে এসে ঠেকতে পারে। দশকের পর দশক ধরে চলে আসা সপ্তাহে পাঁচদিনের কাজের দিনের ধারণা বদলে যাবে। গেটস বলেন, যদি আপনি এমন একটা সমাজব্যবস্থা পান যেখানে সপ্তাহে মাত্র তিনদিন কাজ করলেই চলবে, তবে এই প্রযুক্তি ভালো।
এআইয়ের সুদূরপ্রসারী ফল হিসেবে গেটস দেখতে পাচ্ছেন, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের কাজকেও অতিক্রম করে যাবে, তবে তার ফল ভালোই হবে। যার ফলে মানুষ আরও অবসর কাটানোর সময় হাতে পাবে। চাকরি চলে যাওয়ার বিপদ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ভারসাম্য বজায় রেখে এই প্রযুক্তির ব্যবহার ভালো। তিনি দৃষ্টান্ত দিয়ে অফিসে কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে কর্মসংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন ঘটেছিল একদিন। তাতে কি কর্মীদের চাকরি চলে গিয়েছে, প্রশ্ন গেটসের। একইভাবে বর্তমানে আমরা যেভাবে কাজ করতে অভ্যস্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাকে বদলে দেবে। এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে কিন্তু কর্মচারীদের বদলি হিসেবে গ্রহণ করলে হবে না। মালিক ও কর্মচারীদের এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে, লোকসংখ্যা কমিয়ে নয়।
গেটস একা নন। জেপি মর্গান চেজ-এর সিইও জেমি ডিমোনেরও একই মত। তিনিও বলেন, এআই সপ্তাহের কাজের দিন কমিয়ে দিতে পারে। তিনি চোখে দেখতে পাচ্ছেন, প্রযুক্তির উন্নতি কেবলমাত্র জীবনকে আরামদায়ক করে তুলবে তাই নয় প্রচুর অবসর নিয়ে আসবে। তাঁর কথায়, আপনার সন্তান (ভবিষ্যৎ প্রজন্ম) শতায়ু হবে এবং তার ক্যান্সার হবে না প্রযুক্তির উন্নতিতে। সপ্তাহে সাড়ে তিনদিন কাজ করলেই চলবে।