শেষ আপডেট: 16th October 2024 19:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কূটনীতির ভাষা প্রয়োগে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সুখ্যাতি বিশ্বজোড়া। বুধবার ইসলামাবাদে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে আরও একবার তাঁর কূটনৈতিক কৌশলের পরিচয় দিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের দু’বারের বিদেশমন্ত্রী। নাম করলেন না, কিন্তু ইস্যু আর শব্দ প্রয়োগে বুঝিয়ে দিলেন নিশানায় খোদ সম্মেলনের আয়োজক দেশ পাকিস্তান এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ মিত্র চিন।
সম্মেলনের অন্যতম এজেন্ডা আঞ্চলিক প্রগতি। দীর্ঘ ভাষণে জয়শঙ্কর বলেছেন, এটা কীভাবে অর্জন করা সম্ভব যদি না আমরা এর তিন অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করি। বিদেশমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ-বিচ্ছিন্নতাবাদ আঞ্চলিক উন্নয়ন, প্রগতির প্রধান শক্রু। কোনও দেশ যদি এগুলির বিরুদ্ধে লড়াই না করে হাত গুটিয়ে থাকে তাহলে পারস্পরিক সহযোগিতা, বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া কীভাবে হবে?
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরেই ভারত পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র বলে আসছে। স্বভাবতই তিনি যে পাকিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়ে সে দেশের নেতৃত্বকেই নিশানা করেছেন তাতে কোনও সন্দেহ ছিল না। গত মাসেই রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকেও ভারত এই ব্যাপারে পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ শানায়। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতে কাশ্মীরে মানবাধিকার হরণের বিরুদ্ধে সরব হলে ভারত পাল্টা বলে যারা ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয় তাদের মুখে মানবাধিকারের কথা মানায় না। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মঞ্চ না হলেও জয়শঙ্কর বুধবার বুঝিয়ে দিয়েছেন ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সুসম্পর্ক গড়তে হলে তাদের সবচেয়ে আগে ভারত বিরোধী সন্ত্রাসী কার্যকলাপে রাশ টানতে হবে।
ওই সম্মেলনেই সীমান্ত বিবাদের প্রসঙ্গ টেনে নাম না করে চিনকে নিশানা করেন জয়শঙ্কর। বলেন, দুটি দেশের মধ্যে জনসাধারণের মধ্যে কীভাবে সম্পর্ক হবে যদি না সীমান্তের সংঘাত বন্ধ হয়। এসসিও সম্মেলন উপলক্ষে মঙ্গলবার পাকিস্তান গিয়েছেন জয়শঙ্কর। নয় বছর পর ভারতের বিদেশমন্ত্রী পড়শি এই দেশে গিয়েছেন। দু’দিনের সম্মেলন শেষে এসসিও-র সভাপতির দায়িত্ব পাবে রাশিয়া। ভারতের বিদেশমন্ত্রী সম্মেলন আয়োজনের জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করেন, অভিনন্দন জানান রাশিয়াকে।
ইসলামাবাদ রওনা হওয়ার আগেই জয়শঙ্কর ঘোষণা করেছিলেন সেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে তাঁর দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসার কোনও পরিকল্পনা নেই। আসলে এসসিও সম্মেলনে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সুযোগও নেই। যদিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে জয়শঙ্করের একান্তে অনেকটা সময় কথা হয়। এসসিও সম্মেলনে আগত দেশের প্রতিনিধিদের সম্মানে নৈশ ভোজের আয়োজন করেছিলেন শরিফ।
অন্যদিকে, শাহবাজের দাদা সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এসসিও সম্মেলন কভার করতে যাওয়া ভারতীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্রুত সম্পর্কের উন্নতি চান। এই প্রসঙ্গে শরিফ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানে এসেছিলেন। তিনিও গিয়েছেন ভারতে।