শেষ আপডেট: 9th December 2024 11:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সিরিয়ায় (Syria) বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটেছে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS)। এইচটিএসের প্রধান আবু মহম্মদ আল-জোলানি (Abu Mohammad al-Jolani)। এইচটিএস এক বিবৃতিতে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ (Bashar al-Assad) সরকারের পতন ঘটিয়ে দিয়েছেন জোলানি। বিবৃতিতে বলা হয়, শত্রুশাসক বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন। তিনি বর্তমানে রাশিয়ায় (Russia) রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। সিরিয়া এখন শত্রুমুক্ত। তাদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে একটি অন্ধকার যুগের অবসানে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
বাশার আল-আসাদের দেশ থেকে পালানো, তাঁর টানা দুই যুগের সরকারের পতনের পরিপ্রেক্ষিতে এইচটিএসের প্রধান জোলানিকে নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনের একাল-সেকাল তুলে ধরেছে।
আবু মহম্মদ আল-জোলানির আসল নাম আহমেদ হুসাইন আল-শারা। ১৯৮২ সালে সৌদি আরবের রিয়াধে জন্ম। তখন তাঁর বাবা সেখানে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৮৯ সালে তাঁর পরিবার সিরিয়ায় ফিরে আসে। দামাস্কাসের লাগোয়া এলাকায় থাকতে শুরু করে। সে আমলে জোলানি কী করতেন, তা জানা যায় না। ২০০৩ সালে সিরিয়া থেকে ইরাকে এসে তিনি আল-কায়েদায় যোগ দেন। এই বছরই ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সেখানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন। তখন থেকে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে।
২০০৬ সালে জোলানি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হাতে গ্রেফতার হয়ে পাঁচ বছর জেলে থাকেন। গণতন্ত্রের দাবিতে ২০১১ সালে সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে বাশার আল-আসাদ দমন-পীড়নের পথ বেছে নেন। এর জেরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় জোলানি ছাড়া পান। এরপর তাঁর নেতৃত্বে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে, বিশেষত ইদলিবে শক্তিশালী হতে থাকে।
প্রথম দিকের কয়েক বছর জোলানি আবু বকর আল-বাগদাদির সঙ্গে কাজ করেন। বাগদাদি ছিলেন ইরাকের ইসলামিক স্টেটের (IS) প্রধান। এই সশস্ত্র গোষ্ঠী পরে আইএসআইএল (ISIS) নাম ধারণ করে। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে বাগদাদি আচমকাই আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেন। সিরিয়ায় নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেন। একটা পর্যায়ে আইএসআইএল আল-নুসরা ফ্রন্টকে বেশ ভালোভাবে নিজেদের সঙ্গে সংযুক্ত করে ফেলে। তখনই আইএসআইএলের জন্ম হয়।
জোলানি এ পরিবর্তন প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। এ অবস্থায় ২০১৪ সালে আল-জাজিরাকে প্রথমবারের মতো টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দেন জোলানি। এতে তিনি বলেছিলেন, তাঁর গোষ্ঠী ‘ইসলামিক আইনের’ যে ব্যাখ্যা দেবে, সিরিয়া সেই অনুযায়ী শাসিত হবে।