শেষ আপডেট: 11th January 2025 17:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্বের সর্বশক্তিমান আমেরিকার ৪৭-তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই গ্রহের তাবড় রাষ্ট্রনেতাকে। কে নেই সেই তালিকায়! তবে এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে অতিথিদের যে তালিকা ফাঁস হয়েছে, তাতে নাম নেই ট্রাম্পের স্বঘোষিত বন্ধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আর তা নিয়ে দেশীয় রাজনীতিতে বিরোধীদের খোরাকও হচ্ছেন 'বিশ্বগুরু' মোদী। তৃণমূল এমপি মহুয়া মৈত্র সম্প্রতি এক্সবার্তায় এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ভোলেননি। প্রশ্নাকারে তিনি লিখেছেন, এটা কি সত্যি যে, 'আমার বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প' এখনও মোদীকে তাঁর ২০ জানুয়ারি হতে চলা শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করেননি।
বিতর্ক যেমনই থাক, আগামী ২০ জানুয়ারি এক বিশাল সমারোহমূলক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বহু গণমান্য ব্যক্তিকে। তার মধ্যে রয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রিপাবলিকানদের অপপ্রচার উড়িয়ে বাইডেন জানিয়ে দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে তিনি অবশ্যই উপস্থিত থাকবেন। উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির মধ্যে থাকতে পারেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ট্রাম্প নিজে তাঁকে আসার অনুরোধ করেছেন। তবে শি নিজে না এসে তাঁর একটি প্রতিনিধিদল থাকতে পারে অনুষ্ঠানে।
এছাড়া আর্জেন্তিনার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেই থাকবেন। আমন্ত্রণ করা হয়েছে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিকে। তবে গত ৫ জানুয়ারি তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে অভিনন্দন জানিয়ে গিয়েছেন। আমন্ত্রণ পেয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি। এই বিশাল আয়োজনের জন্য অঢেল অর্থ ব্যয় করা হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্প নিজেই তাঁর আসন্ন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য ১৭ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ চাঁদা সংগ্রহ করে ফেলেছেন। দেশের বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি, বৃহৎ পুঁজিপতিরা উৎসবের খরচ বাবদ মোটা অঙ্কের চেক দিয়েছেন ট্রাম্পকে।
সব মিলিয়ে আগামী ২০ জানুয়ারি জুনিয়র মার্টিন লুথার কিং দিবসের ছুটির দিনে শপথ নিতে চলেছেন ট্রাম্প। আমেরিকায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয় প্রতি চার বছর অন্তর ২০ জানুয়ারি অথবা রবিবার পড়লে ২১ জানুয়ারি। এবার ২০ জানুয়ারি পড়েছে সোমবার। এইদিন আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-র ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে মূল অনুষ্ঠান হবে। ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১০টা-১১টার সময় মার্কিন টিভি চ্যানেলগুলিতে সরাসরি দেখা যাবে অনুষ্ঠান। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শপথবাক্য পাঠ করান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস।
প্রেসিডেন্টের আগে শপথ নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। এবার ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন জেডি ভ্যান্স। দিনের শুরুতে একটি মিছিল করে সবাই ইউএস ক্যাপিটলে ঢুকবেন। সেই মিছিলে থাকেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সহ তাঁর মন্ত্রিপরিষদ এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও তাঁর হবু মন্ত্রীরা। ডানহাত উঁচু করে বাঁ হাত বাইবেলের উপর রেখে শপথ নেন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ভাবী মন্ত্রীরা। সাধারণত প্রেসিডেন্টের স্ত্রী বাইবেলটি ধরে রাখেন। এরপর নতুন প্রেসিডেন্ট একটি ভাষণ দেন। এরপর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি আনুষ্ঠানিকভাবে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের সম্মানে হেলিকপ্টারে স্ত্রীকে নিয়ে ঠিকানা বদল করেন তাঁরা।
এরপর নতুন প্রেসিডেন্ট ওভাল অফিসে নিজের ঘরে গিয়ে বসেন এবং কাগজপত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে সই করে দায়িত্বভার নেন। এরপর ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ অন্যান্য অতিথির সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন। সাধারণত এই ভোজে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের নিজস্ব প্রাদেশিক রান্নাবান্না হয়। খাওয়াদাওয়ার শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইস্টফ্রন্ট স্টেপে গিয়ে সেনাদলের সঙ্গে মিলিত হন এবং তারপরেই পেনসিলভ্যানিয়া অ্যাভিনিউ থেকে হোয়াইট হাউস পর্যন্ত একটি প্যারেডে অংশ নেন।