শেষ আপডেট: 4th November 2024 20:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আজ থেকে ঠিক ৫৫ বছর আগে হাসপাতালে দু'টি শিশু পাল্টে যায়। সেই দুই শিশুর নাম ক্লেয়ার এবং জেসিকা (নিরাপত্তার স্বার্থে পরিবর্তিত নাম ব্যবহার করা হল)। ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের দু'টি পরিবারের সঙ্গে ঘটে এমন ঘটনা। ৮0 বছরের এক মহিলা নাম জোয়ান। তাঁর সঙ্গে থাকে জেসিকা। এদিকে জেসিকা সেই মহিলার নিজের সন্তান নয়ই। অন্য একটি পরিবারে থাকে ক্লেয়ার।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন এর বড় ছেলে টনি তার বোনের ডিএনএ টেস্ট করাতে চায়। কারণ ছোট থেকেই টনির মনে হতো জেসিকা তাঁর বোন নয়। জেসিকাকে দেখতেও পরিবারের কারোর মতো ছিল না। তারপরে টনি ডিএনএ হোম-টেস্ট কিট কিনে এনে নিজের আর তাঁর বোনের পরীক্ষা করেন। সেখানেই দেখা যায় জেসিকা আর টনির মধ্যে ডিএনএর কোনও রকম মিল নেই।
ডিএনএ টেস্টের পর পুরোটা জানাজানি হতেই হাসপাতালে বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় দুই পরিবার। প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনাটা অস্বীকার করলেও, পরে জানানো হয় ক্লেয়ার এবং জেসিকা একই দিনে একই সময় সেই হাসপাতালে জন্মে ছিল।
দু'টি পরিবারই হাসপাতালে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে। ৫৫ বছর আগে ঘটে যাওয়া এই ভুলের বিরুদ্ধে মামলাও করে পরিবার। তাদের মতে হাসপাতালে নবজাতকের পরিবর্তন হয়ে যাওয়া, একটি ভয়ংকর ভুল। যার ক্ষতিপূরণ হাসপাতালকে দিতেই হবে।
ডিএনএ টেস্টের পর প্রথমে সেই পরিবার মনে করেছিল ডিএনএ টেস্টে ভুল রয়েছে। এমনটা জানতে পেরে ডিএনএ টেস্টিং কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তারপর জানতে পারেন ভুলটা ডিএনএ টেস্টে নয়, আসল ভুলটা হয়েছে জন্মের সময় হাসপাতালেই।
পুরো ঘটনাটা তদন্ত করার পর জানা যায়, দুই শিশু একই এলাকায় পাল্টে যাওয়া দু'টো বাড়িতে এত বছর ধরে বসবাস করছিলেন। জোয়ান নামের এক মহিলার চার সন্তানের মধ্যে টনি ছিলেন বড়। পরপর অনেকগুলি পুত্র সন্তান হওয়ায়, সেই মহিলাকে যখন জানানো হয়, তাঁর কন্যা সন্তান হয়েছে। তিনি আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন। তারপরে তাঁর কাছ থেকে শিশুটিকে নিয়ে চলে যাওয়া হয়।
সেদিন এই জেসিকার সঙ্গে ক্লেয়ারের অদল বদল হয়ে যায়। অর্থাৎ যে পরিবারের ক্লেয়ারের আসার কথা, সেই পরিবারে চলে আসে জেসিকা। ৫৫ বছর আগে ঘটে যাওয়া একটি ভুলের কারণে তাঁরা দু'জনই ভিন্ন পরিবারে বড় হয়েছেন।
পরে যখন সবটা দুই পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়, তখন জোয়ান ক্লেয়ারকে দেখে বলেছিলেন, 'ক্লেয়ারকে নাকি একেবারে তাঁর মতো দেখতে!'