শেষ আপডেট: 30th January 2025 12:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রের পুণেতে একের পর এক মানুষ গুলেন বারি সিন্ড্রোম (GBS)-এ আক্রান্ত হওয়ায় দেশজুড়ে এই বিরল স্নায়ুরোগ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ইতিমধ্যেই শতাধিক মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন, এমনকি সোলাপুরে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। কিন্তু এই সংক্রমণ এড়াতে কী কী খাবারের থেকে দূরে থাকবেন, তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
গুলেন বারি সিন্ড্রোম কী?
GBS একটি অটো ইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেই স্নায়ুগুলিকে আক্রমণ করে, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি পক্ষাঘাতগ্রস্তও হয়ে যেতে পারেন। তবে এটি সংক্রামক ব্যাধি নয়, অর্থাৎ এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ছড়ায় না।
সংক্রমণের কারণ কী?
চিকিৎসকদের মতে, শ্বাসনালি বা পাচনতন্ত্রের সংক্রমণের পর গুলেন বারি সিন্ড্রোমের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষত, 'ক্যাম্পিলোব্যাক্টর জেজুনি (C. jejuni)' নামে এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া এই রোগের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এটি দূষিত জল ও খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
ঝুঁকি এড়াতে কী কী খাবার থেকে দূরে থাকবেন?
১. অপরিশোধিত জল ও দূষিত খাবার এড়িয়ে চলুন।
২. কাঁচা বা অপর্যাপ্তভাবে রান্না করা মাংস ও দুধ না খাওয়াই ভাল।
৩. রান্নার আগে ও পরে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
৪. মাংস কাটার ছুরি ও অন্যান্য সরঞ্জাম পরিষ্কার করে ব্যবহার করুন।
৫. বাইরে খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
কী কী খাবার বেশি করে খেতে হবে?
১. ফোটানো ও বিশুদ্ধ জল – দূষিত জল এই রোগের অন্যতম কারণ, তাই ফিল্টার করা বা সিদ্ধ জল পান করুন।
২. ভালভাবে রান্না করা মাংস ও মাছ – বিশেষ করে মুরগির মাংস ভালভাবে সিদ্ধ বা ভেজে খাওয়া উচিত, যাতে কোনও ব্যাক্টেরিয়া বেঁচে না থাকে।
৩. পাস্তুরাইজড দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার – কাঁচা বা অপরিশোধিত দুধ এড়িয়ে ফোটানো বা প্যাকেটজাত দুধ পান করুন।
৪. হালকা ও সহজপাচ্য খাবার – যেমন সেদ্ধ ডাল, খিচুড়ি, সবজি ও সেদ্ধ ভাত, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
৫. ভিটামিন C ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার – প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে লেবু, আমলকি, কমলা লেবু, পালংশাক, বাদাম ও ডিম খেতে পারেন।
৬. প্রোবায়োটিক ও ফারমেন্টেড খাবার – যেমন দই ও ঘোল, যা হজমে সহায়ক ও উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায়।
পরিস্থিতি নিয়ে কী বলছেন চিকিৎসকরা?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দফতর ও চিকিৎসকদের মতে, গুলেন বারি সিন্ড্রোম নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তবে পুণেতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার মূল উপায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।