শেষ আপডেট: 9th May 2024 12:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টেনিস এলবো (Tennis elbow)— নামটা শুনলেই মনে হয়, এই সমস্যা বোধহয় শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেই হয়। বিশেষত, টেনিস বা ক্রিকেট প্লেয়ারদের। কিন্তু, ভারী কাজ করতে গিয়ে যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ডাক্তারি পরিভাষায় এর নাম ল্যাটেরাল এপিকন্ডিলাইটিস। এ রোগে সাধারণত কনুইয়ের হাড়ের বাইরের দিকে ব্যথা হয়। সেই ব্যথা হাতের কব্জি অবধিও পৌঁছতে পারে।
টেনিস এলবো (Tennis elbow) কী?
এক ধরনের টেন্ডোনাইটিস। যার জন্য কনুইয়ের বাইরের দিকে অসহ্য ব্যথা হয়। ভেজা কাপড় নিংড়ানো, ভারী কিছু তোলা বা রুটি বেলার মতো কাজের সময়ে কনুই থেকে বাহুর অংশে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সারা দিন এক ভঙ্গিমায় মাউস ধরে কাজ করার সময়েও ব্যথা হতে পারে।
রিপিটেটিভ ক্রনিক ইনজুরি থেকে এই ব্যথা হতে পারে। ডাক্তারবাবুরা বলছেন, কখনও কখনও আর্থ্রাইটিসের সূত্রপাত হয় এই ব্যথা থেকে। গাউটি, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হতে পারে। যদি দেখা যায়, হাতের অনেক পেশির মধ্যে দুটো পেশিতে ইনফ্ল্যামেশন রয়েছে বা ফুলে গেছে, তখন সেখান থেকেও অসহ্য ব্যথা হতে পারে।
এক্ষেত্রে, ব্যথার পাশাপাশি আক্রান্তের হাতের স্বাভাবিক মুভমেন্ট বা নাড়াচাড়ার ক্ষেত্রে খুবই অসুবিধা হয়। কিন্তু, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তা দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব। ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে ফের এই রোগ আক্রান্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। কনুইয়ে টিউমার হলে বা কোনও ইনফেকশন হলেও টেনিস এলবোর মতো উপসর্গ দেখা দেয়। তখন ব্যথার কারণ টেনিস এলবো, নাকি অন্য কিছু, সেটা ডাক্তারের থেকে জেনে নেওয়া জরুরি।
চিকিৎসা কী?
একবার টেনিস এলবো হলে যে ভবিষ্যতে আর এই সমস্যা ফিরে আসবে না তা কিন্তু নয়। তবে, তার জন্য অযথা উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। যদি দেখা যায় রিপিটেটিভ ইনজুরি থেকে ব্যথা হচ্ছে, তা হলে সেই ধরনের কাজ বন্ধ রাখতে হবে। ঘরোয়া কাজের পাশাপাশি মোটরবাইক চালানো, কম্পিউটারের মাউস ধরে একটানা কাজ করতেও বারণ করা হয়। এর সঙ্গে ওজন তোলাও বন্ধ রাখতে হবে।
এই রোগের ধরনের প্রকারভেদে একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। এক্ষেত্রে, হাতে ‘কমপ্রেশন ব্যান্ড’ ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া, অ্যান্টিইনফ্লামেবল ট্যাবলেট খেয়ে আর কিছু বিধিনিষেধ মেনে চললেই এই রোগ থেকে সেরে ওঠা সম্ভব।
ইনফ্রারেড থেরাপিও বেশ কার্যকর। এছাড়া, স্টেরয়েড ইনজেকশনও (লোকাল অ্যানাস্থেসিয়ার মাধ্যমে) প্রয়োগ করা হয়। ইনজেকশনের দামও কম।
যখন ওষুধ, ফিজিওথেরাপি কোনও কিছুতেই কাজ হবে না, তখন সার্জারি করাতেই হবে। তবে অপারেশন করাতে হলে কী থেকে ব্যথা হচ্ছে, কেন হচ্ছে সেটা আগে পরীক্ষা করে দেখেন ডাক্তারবাবুরা। সেইমতো অপারেশন করা হয়। না হলে ভুল চিকিৎসায় রোগ কিন্তু আরও বাড়তে পারে।