শেষ আপডেট: 15th February 2025 19:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সবে ১৬ বছর বয়স, সামনে মাধ্যমিক (CBSE) পরীক্ষা। কিন্তু তার আগেই যেন জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হয়েছিল রমেশ যাদবকে (নাম পরিবর্তিত)। কয়েক সপ্তাহ আগেও সে হাঁটতে পারত না, একা দাঁড়াতেও কষ্ট হতো। প্রথমে সামান্য ঝিঁঝি ধরা অনুভূতি, পরে একেবারে সংবেদনশীলতা ও নড়াচড়া হারিয়ে ফেলে সে। এতটাই অসহায় হয়ে পড়ে যে বাবা-মায়ের সাহায্য ছাড়া এক পাও চলতে পারত না।
কলকাতার CMRI হাসপাতাল-এ পরীক্ষার পর জানা যায়, তাঁর মেরুদণ্ডে একটি টিউমার রয়েছে, যা স্নায়ুর উপর চাপে তৈরি করছিল। দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে স্থায়ী পক্ষাঘাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে অস্ত্রোপচারের সময় নিয়ে দ্বিধায় পড়ে রমেশের পরিবার। তারা চেয়েছিল পরীক্ষার পর অস্ত্রোপচার হোক। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, এতদিন অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। অস্ত্রোপচার না করলে রমেশের পা সব সময়ের জন্য অকেজো হয়ে যেতে পারে।
২১ জানুয়ারি CMRI হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের পরিচালক ডঃ অমিতাভ চন্দা এবং তাঁর টিম সফলভাবে রমেশের অস্ত্রোপচার করেন। জটিল এই অপারেশনে ব্যবহার করা হয় উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য টিউমারের চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে।
অস্ত্রোপচারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রমেশের উন্নতি দেখা যায়। ধীরে ধীরে সে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে শুরু করে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই একা হাঁটতে পারছে সে। রমেশ বলেন, 'আমি ভেবেছিলাম আর কোনোদিন হাঁটতে পারব না। কিন্তু ডঃ চন্দা ও CMRI হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য আজ আমি সুস্থ। এখন আমার একমাত্র লক্ষ্য পরীক্ষায় ভাল ফল করা।'
প্রথমদিকে তাঁর পরিবার পরীক্ষার বছরটি বাদ দেওয়ার কথা ভাবছিল, কিন্তু চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করেন যে সে পরীক্ষায় বসতে পারবে। এখন, অস্ত্রোপচারের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে, রমেশ তার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ১২ ফেব্রুয়ারি ফলো-আপ চেকআপের জন্য হাসপাতালের গিয়ে একা হেঁটে ঢোকে রমেশ। এই দৃশ্য দেখে চিকিৎসকরা গর্বিত। ডঃ চন্দা বলেন, 'রমেশ নিজেকে তাঁর জীবনের কঠিন পরীক্ষায় জয়ী প্রমাণ করেছে। এখন সে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। ওর সাফল্যের জন্য শুভকামনা রইল।'