কলকাতায় বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম ওড়িশার মহিলা। চার চিকিৎসকের সম্মিলিত চেষ্টায় প্রাণে বাঁচলেন তিনি ও তাঁর শিশু সন্তান।
শেষ আপডেট: 13 May 2025 23:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভাইয়ের বিয়ের কেনাকাটা করতে ওড়িশা থেকে কলকাতায় এসেছিলেন ৩৫ বছর বয়সী এক মহিলা। আনন্দে ভরা সেই সফর মুহূর্তেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়, যখন বুররাবাজারের ব্যস্ত রাস্তায় একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা মারে তাঁকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি সিএমআরআই (CMRI) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছন। শুরু হয় তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন লড়াই।
হাসপাতালে পৌঁছানোর পর দেখা যায় শরীরে একাধিক ভাঙাচোরা হাড়, স্নায়ুর ক্ষতি এবং পেলভিসে গভীর আঘাত রয়েছে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডঃ পুরুষোত্তম চক্রবর্তী-র নেতৃত্বে দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়—রক্তক্ষরণ বন্ধ করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা। সেই প্রাথমিক দ্রুত ব্যবস্থার ফলেই তাঁকে নিরাপদে আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়, যেখানে ডঃ রাজর্ষি বসু ও তাঁর দল চিকিৎসা চালিয়ে যান।
তাঁর আঘাত এতটাই জটিল ছিল যে জীবন বাঁচাতে একাধিক অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে। দক্ষ অর্থোপেডিক সার্জন ডঃ কুনাল কান্তি পাল একটি জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারে ভাঙা হাড় ও স্নায়ুর ক্ষতি সারিয়ে তোলেন, যাতে তিনি ভবিষ্যতে হাঁটতে ও স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন।
এরপর দায়িত্ব নেন বিশিষ্ট প্লাস্টিক সার্জন ডঃ অনুপম গোলাশ। তিনি এমনভাবে চিকিৎসা করেন, যাতে শারীরিক ক্ষতের দাগ ভবিষ্যতে মানসিক ক্ষত হয়ে না থাকে। এই ঘটনার মধ্যেও আরও একটি প্রাণ নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল—ওই মহিলার দেড় বছরের সন্তানও হাসপাতালে ভর্তি ছিল। চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় শিশুটিরও সফল চিকিৎসা হয়।
সিএমআরআই কলকাতার চিকিৎসকরা দেখিয়ে দিলেন কীভাবে সময়মতো জরুরি সাড়া, দক্ষ সার্জারি এবং মানবিক সহানুভূতি মিলেই প্রাণ বাঁচাতে পারে। চার চিকিৎসকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা একটি পরিবারকে নতুন করে জীবন উপহার দিল।