শেষ আপডেট: 14th April 2025 18:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বেশিরভাগ সময়ই আমাদের শরীরচর্চার সময়সূচির ওপর নির্ভর করে কখন স্নান করব। ব্যায়ামের পর স্নান করার অভ্যাস থাকে অনেকের, তাই স্নানের কোনও নির্ধারিত সময় থাকে না। কিন্তু যাঁরা নিয়ম করে একটা নির্দিষ্ট সময় স্নান করেন, তাঁদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কোন সময়ে স্নান করা উচিত। ডার্মাটোলজিস্ট এবং ইনফ্লুয়েঞ্জ ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ গীতিকা শ্রীবাস্তব দিলেন ধারণা।
৭-৮ ঘণ্টা ঘুমালেও অনেকেরই ক্লান্তি দূর হয় না। ঘুম থেকে উঠেও মনে হয় আবার ঘুমিয়ে পড়ি। এমন হলে সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্নান করলে ক্লান্তি দূর হবে। বিশেষ করে ঠান্ডা জলে স্নান শরীর চনমনে রাখতে পারে। ঝিমঝিম ভাব কাটিয়ে কাজে বসতে সাহায্য করতে পারে। গরম জলে স্নান করলেও ফ্রেশ লাগতে পারে অনেকটা।
ডার্মাটোলজিস্ট বলছেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেরই মাথায় বিভিন্ন আইডিয়া আসে। সকালে স্নান করলে, সেই সময়টুকু এই ভাবনার পিছনে দেওয়া যায়। বা সারাদিনের শিডিউল ঠিক করে নিতে পারেন অনেকে।
২০২২ সালে মনোবিজ্ঞানী জ্যাকারি আরভিং একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, যেখানে দ্য শাওয়ার ইফেক্ট-এর কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বোঝান কীভাবে স্নানের মতো একঘেয়ে কাজ সৃজনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে বা কোনও সমস্যা সমাধানে কাজে লাগে। তিনি লিখেছেন, 'মন খারাপ হলে বেশি সৃষ্টিশীল ভাবনা আসে না মাথায়, তবে সেটা তখনই হয় যখন কাজটা খুব বেশি আকর্ষণীয় হয় না। একঘেয়ে কাজ হয় বেশি ভাবনার জন্ম দেয়, নয়তো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের ভাবনা তৈরি হয়। একঘেয়ে কাজ সমস্যা সমাধানের জন্য মনকে বেশি মনোযোগী করে তোলে, আবার আকর্ষণীয় কাজ মনকে এটা ওটা ভাবিয়ে সৃজনশীল করে তোলে।'
এরপরই তাঁর কথায় উঠে আসে স্নানের প্রসঙ্গ। বলেন, 'টানা গোটা দিনের ব্যস্ততা, যানজট, ডেডলাইন সামলে রাতে গরম জলে স্নান করলে যে শান্তি পাওয়া যায়, তাতেই অর্ধেক স্ট্রেস উবে যায়।'
এই সূত্রেই ডার্মাটোলজিস্ট বলছেন, হাইজিন বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে ভাবলেও রাতে সমস্ত কাজ শেষে স্নান করা খুবই উপকারী। ভাবুন তো আপনি সারাদিনে কত কী ছুঁয়েছেন, কোথায় কোথায় গিয়েছেন, কী কী স্পর্শ করেছেন। রাতে স্নান করলে এসব সবকিছু ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, রাতে স্নান করলে ঘুমও ভাল হয়।'
২০১৯ সালে স্লিপ মেডিসিন রিভিউস নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, ঘুমোনোর আগে একবার গরম জলে স্নান করলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়, যার ফলে মস্তিষ্ক বুঝে নেয় — ঘুমানোর সময় হয়ে এসেছে। এতে গভীর ঘুমে যাওয়া অনেকটা সহজ হয়।
তবে চিকিৎসকের মতে, সকালে হোক বা রাতে— স্নানের সময়টা একান্তই ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর নির্ভর করে। জীবনযাত্রা অনুযায়ী যে সময় সুবিধা হয়, সেই সময়ই স্নান করা যেতে পারে। ডাঃ শ্রীবাস্তবের কথায়, 'যেকোনও সময় স্নান করুন, স্নানের সময় যেন ৮-১০ মিনিটের বেশি না হয় এবং জল হালকা গরম জলে হয়।' তবে তিনি এক্ষেত্রে উল্লেখ করেন, দিনে দু'বার স্নান করা একেবারেই উচিত নয়। এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।