সংগৃহীত ছবি
শেষ আপডেট: 1st March 2025 15:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ওজন কমানোর অন্যতম উপায় হল ক্যালোরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা। অনেকেই দ্রুত ওজন কমানোর আশায় রাতের খাবার স্কিপ করে দেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শরীরের জন্য মোটেও উপকারী নয়, বরং বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা এর থেকে হতে পারে।
রাতের খাবার না খেলে শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে?
গ্লেনইগলস বিএজিএস হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন ও ডায়াটেটিক্স বিভাগের প্রধান ডা. কার্তিগাই সেলভি এ বিষয়ে জানাচ্ছেন, রাতের খাবার না খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে থাকে, ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মানসিক চাপ বাড়ে। তিনি বলেন, 'এমন হলে শরীর কর্টিসল নামক হরমোনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, যা উদ্বেগ ও খিদে বাড়ায়। এতে মেটাবলিসমের গতি কমে যায় ও শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে। ফলে ওজন কমার পরিবর্তে বেড়ে যেতে পারে বা ওজন কমানোই অসম্ভব হয়ে যেতে পারে।'
নিউ দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান রাবিয়া জানিয়েছেন, রাতের খাবার না খেলে সাময়িকভাবে ক্যালোরি ইনটেক কমলেও দীর্ঘমেয়াদে তা ক্ষতিকর হতে পারে। তিনি বলেন, 'এতে ক্ষিদে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে, ফলে দিনভর বেশি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এটি মেটাবলিসম কমায় ও শরীরে আদতে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।'
দীর্ঘ সময় না খেলে মেজাজ খারাপ হয়ে যেতে পারে এবং এনার্জি কমে যাওয়ার কারণে কাজের প্রতি মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশেষত শিশু, কিশোর, ক্রীড়াবিদ, গর্ভবতী মহিলা, টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগী এবং মানসিক চাপ বা খাওয়ার সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য রাতের খাবার বাদ দেওয়া আরও ক্ষতিকর হতে পারে।
যারা ওজন কমাতে চান, ক্যালোরি ইনটেক কমাতে চান, রাতের খাবার স্কিপ করা ছাড়াও অপশন রয়েছে। কী?
ডা. সেলভি এ ব্যাখ্যা করেছেন, 'আমাদের বডি ক্লক, যাতে দিনের আলোয় খাওয়া এবং রাতে ঘুমানো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস হিসেবে কাজ করে। যদি এই ছন্দ ব্যাহত হয়, তবে তা মেটাবলিসমে প্রভাব ফেলে। রাতের খাবার দেরিতে খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে এবং রক্তে শর্করার মাত্রায় তারতম্য হয়। তাই শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ বজায় রাখতে তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়া ভাল।'
এই চিকিৎসকের মতে, ওজন কমাতে খাবার না খেয়ে থাকা ঠিক নয়। বরং সঠিক পরিমাণে এবং সময়মতো খাওয়া প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার বাদ দিলে ওজন কমার পরিবর্তে বিপাক হার ধীর হয়ে যায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।