শেষ আপডেট: 13th March 2025 12:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১১ বছর ধরে মা-বাবা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন পরিণীতা দে ও অরিন্দম দে। বহু বছর চেষ্টা করেও যখন সন্তান ধারণের সুখ তাঁদের জীবনে এল না, তখন একসময় আশা প্রায় হারিয়ে ফেলেছিলেন দু’জনেই। বহু চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ও নানা চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করেও মিলছিল না কাঙ্ক্ষিত ফল। তবে অবশেষে তাঁদের জীবনে আসে সুখবর।
একদিন হাওড়ার বিড়লা ফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ সেন্টারের একটি বিজ্ঞাপন তাঁদের নজরে আসে। সেখানেই যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এরপর ডা. সোনালি মণ্ডল বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় তাঁদের চিকিৎসা। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর জানা যায়, পরিণীতার ডিম্বাণু নিঃসরণ স্বাভাবিক এবং ওভারি রিজার্ভও ভালো। তাঁর AMH লেভেল ছিল ৩.৭২ ng/mL। সব রিপোর্ট ঠিক থাকলেও তাঁদের সমস্যার সঠিক কারণ নির্ধারণ করা যায়নি। চিকিৎসার ভাষায় একে বলা হয় ‘অব্যাখ্যাত বন্ধ্যত্ব’ (Unexplained Infertility)।
দীর্ঘ অপেক্ষা ও ব্যর্থতার পর ডা. বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জন্য একটি নির্দিষ্ট ও ব্যক্তিগতভাবে সাজানো IVF (In Vitro Fertilisation) চিকিৎসার পরিকল্পনা তৈরি করেন। ওসাইট রিট্রিভাল প্রক্রিয়ায় সাতটি ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে ছ’টি ছিল পরিপক্ক। নিষেকের (Fertilisation) পর দুটি উচ্চমানের গ্রেড-এ এমব্রায়ো (ভ্রূণ) তৈরি হয়। পরবর্তী ধাপে এই দুটি ভ্রূণকে পরিণীতার গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়। সঠিক পর্যবেক্ষণ ও যত্নের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষা ও কঠিন সংগ্রামের পর তাঁদের স্বপ্নপূরণ হয়। IVF চিকিৎসার মাধ্যমে পরিণীতা যমজ সন্তানের মা হন। এই খবরে উচ্ছ্বাসে ভাসেন দু’জনেই। অরিন্দম বলেন, "এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আনন্দ, স্বস্তি আর আবেগের অশ্রু – সব একসঙ্গে এসে মিশেছিল সেই মুহূর্তে।"
পরিণীতা ও অরিন্দম তাঁদের অভিজ্ঞতার জন্য বিড়লা ফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ সেন্টারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি যে মানসিক সহায়তা ও যত্ন তাঁরা পেয়েছেন, তা তাঁদের এই কঠিন সময় পার করতে অনেকটাই সাহায্য করেছে। তাঁদের এই ঘটনা প্রমাণ করে, আধুনিক চিকিৎসা, বিজ্ঞান ও নিরলস চেষ্টার মাধ্যমে সব অসম্ভবই একদিন সম্ভব হয়ে ওঠে।