শেষ আপডেট: 3rd February 2024 23:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জরায়ুমুখের ক্যানসার হচ্ছে কিনা তার কিছু সাধারণ উপসর্গ আছে। অনেক সময়েই মেয়েরা সেটা বুঝতে পারেন না। ডাক্তারবাবুরা বলছেন, এই লক্ষণ সবচেয়ে আগে ধরা পড়ে। সেটা খেয়াল করেই সতর্ক হতে হবে।
আগাম উপসর্গ অনেক সময়েই টের পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ মহিলাই বুঝতে পারেন না তাঁদের জরায়ু মুখে সংক্রমণ বাসা বাঁধছে। লক্ষণ যখন ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে থাকে, তখনও মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউটিআই) বা পিরিয়ডের সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যান অনেকে।
কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ আছে যেগুলো দেখে সতর্ক হওয়া দরকার। যেমন—
ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং হলে সতর্ক হতে হবে। মাসে এক বার পিরিয়ডের সময়ে ব্লিডিং স্বাভাবিক। কিন্তু দু’টি পিরিয়ডের মাঝে এক বার ব্লিডিং হলে সতর্ক হতে হবে।
মেয়েদের অত্যধিক সাদা স্রাবও একটি অন্যতম লক্ষণ। অস্বাভাবিক সাদা স্রাব, থকথকে সাদা এবং দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হলে সতর্ক হতে হবে। ডাক্তারবাবুরা বলছেন, সাদা স্রাবের দুর্গন্ধ কিন্তু জরায়ুমুখ ক্যানসারের একটি বড় ইঙ্গিত। মেয়েদের এটা খেয়াল করতেই হবে। এমন উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
অস্বাভাবিক সাদা স্রাব, থকথকে স্রাব হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সাদা স্রাবের সময়ে তলপেটে বেশ ব্যথা হয়। দুর্গন্ধ এবং ব্যথা, দু’টি জিনিস ইঙ্গিত দিতে পারে শরীরের ভিতরে ক্যানসার বাড়ছে।
মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় রক্তপাত, কোমর ও তলপেট বা উরুতে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গগুলো জরায়ুমুখের ক্যানসারের লক্ষণ।
মেনোপজের পরেও যদি ব্লিডিং হতে থাকে, সহবাসের পরে রক্তপাত হয় তাহলে সাবধান হতে হবে।
দেরি নয়, প্যাপ টেস্ট করিয়ে নিন
ত্রিশের বেশি বয়স হলে এবং এইসব অস্বাভাবিকতা ধীরে ধীরে দেখা দিলে দেরি না করে প্যাপ টেস্ট (PAP Test) করিয়ে নিতে হবে। গড়ে তিন বছর অন্তর সব মহিলারই এই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।
কীভাবে হয় প্যাপ টেস্ট? চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী কাঠির আগায় তুলো দিয়ে সার্ভিক্স থেকে সামান্য রস তুলে নেন। তা কাঁচের স্লাইডে কিছুক্ষণ রাখা হয়। এর পরে তা গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হয়। কোষের কোনও পরিবর্তন ধরা পড়লে তা হলে চিকিৎসা শুরু করে দিতে হয়।
এ ছাড়াও ভিসুয়্যাল ইনস্পেকশন উইথ অ্যাসেটিক অ্যাসিড (VIA Test) আছে।
মেয়েরা কীভাবে সাবধান হবেন?
খুব কম বয়স থেকে যৌন সম্পর্ক বিপদ ডেকে আনতে পারে। নাবালিকা বিয়ে ও গর্ভধারণ বন্ধ করতে হবে।
মুঠো মুঠো ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে পরবর্তীকালে সমস্যা হতে পারে।
মেয়েদের বেশি করে ভিটামিন-সি, মিনারেল ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
ভ্যাজাইনাল হাইজিনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নোংরা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকেও ভাইরাল ইনফেকশন (Human papillomavirus infection) হতে পারে। পিরিয়ডের সময় বেশি করে পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে।
যোনিতে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা, সমস্যা হলে লজ্জায় লুকিয়ে না গিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। প্রথমেই বিপদ বুঝে পরীক্ষা করিয়ে নিলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু হবে।