শেষ আপডেট: 1st November 2023 12:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দিব্যি সুস্থ মানুষ। আচমকাই হাত-পা অবশ, আটকে যাচ্ছে কথা, বেঁকে যাচ্ছে মুখ। এটাই অ্যালার্মিং। তখনই বুঝতে হবে স্ট্রোক হয়েছে। আচমকা স্ট্রোক বড় বিপদ ডেকে আনে। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন হলেই স্ট্রোক হয়। কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হয়ে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তখন অক্সিজেনের অভাবে ব্রেন কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
ডাক্তারবাবুরা বলছেন, ভারতে বছরে ব্রেন স্ট্রোকে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। তবে স্ট্রোক রুখে দেওয়া সম্ভব। রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো বুঝলে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথ সমীক্ষা বলছে বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের প্রতি ৪ জনের ১ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। ব্রেন স্ট্রোক এমনই এক অসুখ যা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জন্য হয়। শরীর ও মনে সক্রিয় থাকলে ও দৈনন্দিন জীবনে নিয়ম মানলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. আদিত্য মান্ত্রী বলছেন, “স্ট্রোক প্রতিহত করতে হলে কিছু নিয়ম মানতেই হবে। তার জন্য লাইফস্টাইল মডিফিকেশন জরুরি। সুষম খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। তাছাড়া সুগার, প্রেসার, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিসের মতো রোগ থাকলে বাড়তি সতর্কতা দরকার। আমাদের কর্তব্য স্ট্রোক নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। তাহলেই এই রোগকে রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।”
স্ট্রোক জানান দিয়ে আসে না। যদি একসঙ্গে পর পর এমন স্ট্রোক হয় তাহলে স্নায়বিক সমস্যা হতে পারে রোগীর। ভ্যাস্কুলার ডিমেনশিয়া নামে এক ধরনের ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশ হতে পারে রোগীর। এই ধরনের স্নায়বিক রোগে সব কিছুই অচেনা লাগতে শুরু করে রোগীর। চেনা-পরিচিত জনকেও ভুলে যায়। কোনও স্থান বা মানুষজনকে চিনতে পারে না। অকারণে হাসি বা কান্না পায়।
চিকিৎসকদের মত, ১ ঘণ্টার মধ্যে স্ট্রোকে (World Stroke Day) আক্রান্তর মস্তিষ্কের জমাট বাঁধা রক্ত ক্লট বাস্টিং ওষুধ প্রয়োগ করে গলিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক করতে পারলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে। স্ট্রোকের ১ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা হলে সব থেকে ভাল ফল পাওয়া যায়, তাই এই সময়কে বলে ‘গোল্ডেন আওয়ার’। তাই সময় নষ্ট মানেই প্রাণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া।
১) বাড়তি কোলেস্টেরল স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
২) ওবেসিটি বা স্থূলত্ব স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় ১৯%।
৩) অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ।
৪) অতিরিক্ত স্ট্রেস, মানসিক চাপ, উদ্বেগ থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৫) পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড বেশি খেলে আচমকা স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
৬) ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা আচমকা বেড়ে গেলে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়েটে থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
৭) সিগারেট ও অতিরিক্ত মদ্যপান ব্রেন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ হতে পারে।
৮) হার্টের অসুখ বা হার্টে সার্জারি হলে এবং তারপরে নিয়ম মেনে না চললে, খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, শরীরচর্চা না করলে সাইলেন্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।