শেষ আপডেট: 23rd March 2025 18:03
গরুর দুধ ভারতে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এটি ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি১২ ও ডি সমৃদ্ধ, যা হাড় ও পেশীর জন্য উপকারী। এতে প্রোটিন রয়েছে প্রতি কাপে ৮ গ্রাম, ফ্যাটও তাই, ৮ গ্রাম। এটি হাড় ও পেশির গঠনের জন্য সবচেয়ে ভাল বলে মনে করা হয়।
তবে, কিছু মানুষের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকায় গরুর দুধ হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া, A1 ও A2 দুধ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, দেশীয় গরুর A2 দুধ হজমের জন্য ভাল হতে পারে।
উত্তর ও মধ্য ভারতে মহিষের দুধ বেশি জনপ্রিয়, বিশেষ করে ঘি, পনির ও মিষ্টির জন্য। এতে প্রতি কাপে প্রোটিন ও ফ্যাট রয়েছে যথাক্রমে ১০ গ্রাম ও ১৬ গ্রাম। এটি ওজন বাড়াতে ও হাই ক্যালরি ডায়েট হিসেবে সবচেয়ে ভাল।
মহিষের দুধ হজমে তুলনামূলক কঠিন ও বেশি ক্যালোরিযুক্ত, তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত নয়।
ছাগলের দুধ ল্যাকটোজের পরিমাণ তুলনামূলক কম হওয়ায় এটি সহজে হজম হয়। এতে প্রতি কাপ পিছু প্রোটিন রয়েছে ৯ গ্রাম এবং ফ্যাট ১০ গ্রাম। আয়রন ও ক্যালসিয়ামের সবচেয়ে ভাল ও সহজ উৎস এই দুধ।
উটের দুধে ইনসুলিনের মতো প্রোটিন থাকে, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এতে প্রতি কাপে প্রোটিন রয়েছে ৫ গ্রাম, ফ্যাট ৪ গ্রাম। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোয় এই দুধের জুড়ি নেই।
যারা দুধ এড়িয়ে চলেন বা ভেগান ডায়েট অনুসরণ করেন, তাদের জন্য বিভিন্ন প্ল্যান্ট-বেসড বিকল্প রয়েছে। যেমন:
দুধের ধরন | ক্যালোরি (প্রতি কাপ) | প্রোটিন (গ্রাম) | ফ্যাট (গ্রাম) | সেরা উপযোগী |
---|---|---|---|---|
সয়া দুধ | ৮০-১০০ | ৭-৮ | ৪-৫ | হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো |
বাদামের দুধ | ৩০-৫০ | ১-২ | ২-৩ | ওজন কমানো |
ওটসের দুধ | ১২০ | ৩-৪ | ৫ | ফাইবার বাড়ানো, কোলেস্টেরল কমানো |
নারকেল দুধ | ১৫০-২০০ | ০-১ | ১৫-২০ | কিটো ডায়েট |
তবে, অনেক প্ল্যান্ট-বেসড দুধে প্রাকৃতিকভাবে ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন কম থাকায়, এগুলো কেনার আগে প্রোটিনের পরিমাণ কতটা মিটবে, তা দেখে, দুধ বেছে নেওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এক বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য শুধুমাত্র মায়ের দুধই সর্বোত্তম। এক বছর পর ধাপে ধাপে গরুর দুধ দেওয়া যেতে পারে। তবে, শিশু যদি সোজা দুধ সহ্য না করতে পারে, তাহলে দই বা ছানা করে খাওয়ানো যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুধ বেছে নেওয়া নির্ভর করে ব্যক্তির স্বাস্থ্যের উপর। যেমন ওজন বাড়াতে চাইলে মহিষের দুধ সেরা বিকল্প। ওজন কমাতে চাইে বাদাম বা ওটসের দুধ খাওয়া যেতে পারে। ডায়াবেটিস থাকলে উটের দুধ চলতে পারে। আবার হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গরুর দুধ বা ফোর্টিফায়েড সয়া দুধই সবচেয়ে ভাল। কেউ যদি দুধ সহ্য করতে না পারেন অর্থাৎ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে, তাহলে সয়া, বাদাম বা ওটসের দুধ খাওয়া যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেরা দুধ বলতে কিছু নেই—যেটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত, সেটিই সেরা। তবে যে দুধই হোক না কেন, পরিমিত পান করাই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। সরাসরি দুধ সহ্য করতে না পারলে লস্যি বা দইয়ের মাধ্যমে দুধের পুষ্টি গ্রহণ করা যেতে পারে। অতএব, নিজের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগত প্রয়োজন বুঝে সঠিক দুধ নির্বাচন করুন এবং সুস্থ থাকুন!