শেষ আপডেট: 7th January 2025 16:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনাভাইরাস সংক্রমণের পাঁচ বছর পর আবারও চিনে নতুন এক ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এইবার সংক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। চিন থেকে শুরু হয়ে ভাইরাসটি এখন আশপাশের দেশগুলোতেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা মানুষের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি আপাতত শুধুমাত্র শীতকালীন সংক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এদিকে, ভারতে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হয়েছে বেঙ্গালুরুর দুই শিশু। পাশাপাশি অহমদাবাদের এক শিশু এবং মুম্বই থেকে কলকাতা আসা এক শিশুরও এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। পাশাপাশি তামিলনাড়ুতেও এই ভাইরাসে সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে।
এইচএমপিভি বা হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস কী?
২০০১ সালে প্রথম শনাক্ত হওয়া এইচএমপিভি একটি শ্বাসতন্ত্রজনিত ভাইরাস, যার প্রভাব প্রধানত বাচ্চা, প্রবীণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন সব ব্যক্তিদের উপর পড়ছে। এটি প্যারামিক্সোভাইরিডি পরিবারভুক্ত ভাইরাস এবং রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসের (আরএসভি) আর একটি রূপ। ভাইরাসটি প্রধানত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। শীতের শেষে বা বসন্তকালে এর প্রকোপ বেশি দেখা যায়, যদিও এটি বছরের যে কোনও সময় সংক্রমিত হতে পারে।
১. এইচএমপিভি কি প্রাণঘাতী?
মনিপাল হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অঙ্কিতা বৈদ্য জানিয়েছেন, 'এইচএমপিভি নতুন ভাইরাস নয়। তবে সাম্প্রতিক চীনের প্রাদুর্ভাবের কারণে এটি আলোচনায় এসেছে। এটি সাধারণত প্রাণঘাতী নয়। কিন্তু শিশু ও প্রবীণদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।'
সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
- কাশি
- নাক দিয়ে জল পড়া
- জ্বর
- গলা ব্যথা। তবে এটি গুরুতর ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
২. কতদিনে সেরে ওঠা সম্ভব?
সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
৩. এটি কীভাবে ছড়ায়?
এই ভাইরাস কাশি, হাঁচি বা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
৪. কারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে?
- পাঁচ বছরের নিচের শিশু
- ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ
- কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি
৫. এটি অন্য শ্বাসযন্ত্রজনিত ভাইরাসের থেকে আলাদা কীভাবে?
এইচএমপিভি-র ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৩-৫ দিন। জটিল উপসর্গ দেখা দিলে নিউমোনিয়া পরীক্ষা করানো জরুরি।
৬. রোগ নির্ণয়ে কী ধরনের পরীক্ষা হয়?
রোগ নির্ণয়ের জন্য পিসিআর পরীক্ষা করা হয়।
৭. প্রতিরোধের উপায় কী?
এই ভাইরাসের কোনও নির্দিষ্ট ভ্যাকসিন বা ওষুধ নেই। তবে নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলো মানলে সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব:
- নিয়মিত হাত ধোয়া
- সংক্রমিত ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকা
- ভিড়ের মধ্যে মাস্ক পরা
- পায়ের তলা জীবাণুমুক্ত রাখা
৮. অ্যান্টিবায়োটিক কি কার্যকর?
না, অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর নয়। কারণ এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। এতে কোনওপ্রকার অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা।
ডিসক্লেমার: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য দেওয়ার জন্য লেখা হয়েছে। কোনও রোগের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। ফলে শরীরে কোনওরকম উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।