শেষ আপডেট: 3rd November 2023 16:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বায়ুদূষণ কি ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে? সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, দিল্লি ও চেন্নাইতে বায়ুদূষণ এত সাঙ্ঘাতিকভাবে বেড়েছে যে ওই দুই শহরে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। উচ্চরক্তচাপ, হার্টের রোগের মতো মাথাচাড়া দিয়েছে মধুমেহ। এই দুই শহরে দূষণজনিত কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ২২ শতাংশের বেশি।
২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৭ বছর ধরে দিল্লি আর চেন্নাইয়ে ১২ হাজার মানুষের উপরে সমীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা এমনটা দাবি করেছেন। ভারতে ক্রনিক ডিজিজের উপর গবেষণা চলছিল গত ১০ বছর ধরে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, বাতাসে দূষিক কণার মাত্রা যত বাড়বে ততই শরীরে ইনসুলিনের উৎপাদন কমবে। ফলে ডায়াবেটিস হানা দেবে।
বাতাসে সূক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম ধুলিকণা, দূষিত অ্যারোসল কণার ছড়াছড়ি। দিল্লির বাতাসে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৪০০-র বেশি। দূষণের কালো মেঘ ঢেকে ফেলেছে আস্ত শহরটাকে। বাতাসে দূষিত কণার মাত্রা বেড়েই চলেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাতাসের ধূলিকণার মধ্যে থাকে নাইট্রেট, কার্বন-সহ আরও নানা রকমের বিষাক্ত পদার্থ। রক্তের সঙ্গে ধমনীতে প্রবেশ করে তা রক্তচলাচলের পথে বাধা তৈরি করে। রক্ত সঞ্চালন বাধা পেলে তখন উচ্চরক্তচাপের আশঙ্কা বেড়ে যায়। বাড়ে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডের মতো রোগ।
ডায়াবেটিস এমন একটা রোগ যেখানে রক্তে শর্করা বা সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন নামে একটি হরমোন যা প্যানক্রিয়াসের বিটা সেল থেকে নিঃসৃত হয়। সাধারণত, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেলে সেটি লিভারে গিয়ে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। ইসুলিন এই গ্লুকোজকে দেহকোষের মধ্যে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। কোষের ভেতরে গ্লুকোজ অক্সিডাইজড হয়ে অ্যাডিনোসিন ট্রাই ফসফেট (এটিপি) তৈরি করে যার থেকে শক্তি আসে। এই শক্তিই কোষের পুষ্টি জোগায়। কিন্তু যদি বিটা কোষ নষ্ট হয়ে যায় এবং ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায় তাহলে এই প্রক্রিয়াটা বাধা পায়। ইনসুলিন কোষের মধ্যে প্রবেশের জন্য যে রিসেপ্টরটি লাগে, সেটি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ইনসুলিন আর ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। ইনসুলিন কোষের মধ্যে গ্লুকোজকে প্রবেশ করাতে পারে না। রক্তের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা ক্রমশ বেড়ে যায়। একে বলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস। বাতাসের দূষিত কণা এই প্রক্রিয়াটাকেই বাধা দেয়।