কসমেটিকস বিজনেস মানেই শুধু সাজগোজ নয়। একে হাতিয়ার করেই বাংলাকে পথ দেখাচ্ছে কোন্নগরের তরুণী। যিনি হাজারও প্রতিকূলতা আর প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন নিজের স্বপ্ন। রোজগারের পথ খুলে দিয়েছেন আরও অনেককে। নাম তাঁর তরুণিমা ব্যানার্জ্জী।
Tarunima Banerjee
শেষ আপডেট: 5 July 2025 13:33
কসমেটিক বিজনেস নাম শুনলেই মাথায় আসে সাজগোজের কথা। কিন্তু না কসমেটিকস বিজনেস মানেই শুধু সাজগোজ নয়। একে হাতিয়ার করেই বাংলাকে পথ দেখাচ্ছে কোন্নগরের তরুণী। যিনি হাজারও প্রতিকূলতা আর প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন নিজের স্বপ্ন। রোজগারের পথ খুলে দিয়েছেন আরও অনেককে। নাম তাঁর তরুণিমা ব্যানার্জ্জী। অন্য আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের থেকে এক্কেবারে আলাদা। হাজারও তরুণিমার মধ্যে থেকে নিজেকে ব্যতিক্রমী তরুণিমা করতে লড়াই করেছেন অনেক। তাঁরই জীবনযুদ্ধের গল্প শুনতে পৌঁছে গিয়েছিল দ্য ওয়াল।
সামাজিক মাধ্যমে সুপরিচিত তরুণিমা পেশায় একজন কলেজ অধ্যাপিকা। তবে নিজেকে শুধুমাত্র চক ডাস্টারের মধ্যেই আবদ্ধ রাখেননি। তার বাইরে বেরিয়ে গড়েছেন নিজের কসমেটিক ব্র্যান্ড। খুলেছেন নিজের ব্যবসা। একসময় বাড়িতে নিজের জন্য ফেসপ্যাক বানাতেন। এখন দায়িত্ব নিয়েছেন অগণিত মানুষের ত্বক এবং চুল সুন্দর করার। এর জন্য পড়াশুনোও করেছেন। বর্তমানে অনলাইন বিজনেসে বেশ ভাল সাড়া ফেলেছে নিজস্ব ব্র্যান্ড রাপুঞ্জেল। যেখানে রয়েছে দু'হাজারেরও বেশি প্রোডাক্ট। চুল থেকে শুরু করে পায়ের নখ সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা প্রোডাক্ট।
যার গুণগত মান সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানা গিয়েছে, প্রত্যেকটি প্রোডাক্ট ক্যামিকেল ফ্রি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি। শুধু স্কিন কেয়ার নয়, যাবতীয় কসমেটিকস কাজল থেকে শুরু করে ফাউন্ডেশন সবই রয়েছে তরুণিমার রাপুঞ্জেলে। কোনও মেশিনের সাহায্য ছাড়াই নিজের হাতেই তৈরি করে প্রোডাক্টগুলো। ছোট থেকে স্বপ্ন দেখতেন একদিন তাঁর নিজের একটি পরিচিতি হবে। কাজ দিয়ে পৌঁছে যাবেন সকলের ঘরে ঘরে।
সেই স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার হয়ে ওঠে তাঁর কসমেটিক ব্র্যান্ড রাপুঞ্জেল। এই ব্র্যান্ডকে ঘিরেই গড়ে ওঠে তাঁর ব্যবসা। গড়াতে থাকে ভাগ্যের চাকা। কিন্তু ওই যে, আমাদের সমাজে মেয়েরা ব্যবসা করলে সেটা নিয়ে কম বিতর্ক হয় না। ব্যবসার কাজে যুক্ত মেয়েদের নানারকম নোংরা কথাও শুনতে হয়। এক্ষেত্রে রেহাই পাইনি তরুণিমাও। সাফল্যকে আলিঙ্গন করতে ছেড়ে দিয়েছেন অনেক কিছু।
মেয়ে মানুষ বলে একসময় নিজের কসমেটিক ব্র্যান্ডের জন্য গোডাউন ভাড়া করতে পারেননি। 'একা একটা মেয়ের সঙ্গে অনেকগুলো ছেলে কেন কাজ করবে? অতএব ভাড়া মিলবে না' এই কথা প্রসঙ্গে নিজেই জানালেন প্রথম দিকের স্ট্রগলের কথা। তবে হার মানেননি। ইচ্ছে শক্তি আর মনের জোরকে ধরে রেখে এগিয়ে গেছেন সামনের দিক। পাশে পেয়েছেন মাকে। মায়ের সম্পূর্ণ সাপোর্ট পেয়েছেন। মায়ের ভূমিকা জানতে চাইলে স্পষ্ট করে বলেছেন, তার মা নিজের ভবিষ্যকে বিসর্জন দিয়ে মেয়ের জন্যই সমস্ত কিছু করেছে। স্বপ্ন আর প্রতিকূলতা এই দুটোকে কীভাবে ব্যালেন্স করতে হয় সেটাই শেখাচ্ছেন বাংলার মেয়ে।