শেষ আপডেট: 25th October 2024 16:21
পুজোর পর থেকে আর সেভাবে মনের কথা হয়নি মিতুলের সঙ্গে শ্রেয়ার। দু'জনেই অফিসের কাজে ব্যস্ত। সেদিন অফিস যাওয়ার পথে আদরের ননদিনীকে ফোন করল শ্রেয়া।
শ্রেয়া-কী ব্যাপার রে মিতু? এখন দেখছি প্রাণের কথা বলার জন্য আর বৌদিভাইকে দরকার পড়ছে না! কোনও প্রাণেশ্বরের খোঁজ পেয়ে গেছিস নাকি?
মিতুল-কীযে বলো না বৌদিভাই, বোঝোই তো নতুন চাকরি...তবে একটা কেস আছে। ভাবছিলামই বলব তোমাকে। এখন খুব তাড়ায় আছি ,অনেক লেট রান করছি। লাঞ্চ আওয়ারে কল করব তোমাকে।
মোবাইলটা ব্যাগে রাখতে রাখতে মুচকি হাসল শ্রেয়া,নিজের মনে বলল ,হুমম ঠিক ধরেছি তাহলে।
ঘড়িতে কাঁটায় কাঁটায় দেড়টা। সবে লাঞ্চ করতে উঠছিল শ্রেয়া। বেজে উঠল ফোন। এক্কেবারে ভিডিও কল মিতুলের।
মিতুল- (ফিসফিস করে) এখন ফ্রি আছো? কথা বলা যাবে?
শ্রেয়া-আমার একমাত্র ননদিনী গোপন কথা বলবে আর আমি ফ্রি থাকব না!তাই কি হয়?
মিতুল-ধুর ইয়ার্কি মেরো না। আর শোনো কথাটা কিন্তু এখন কাউকে বলা যাবে না,দাদাভাইকেও না। প্রমিস।
শ্রেয়া-(হাসতে হাসতে) আচ্ছা বাবা আচ্ছা, প্রমিস। এখন বল তো ব্যাপারটা। আমার কিন্তু আর তর সইছে না।
মিতুল-আরে আমার অফিসের কলিগ বিশ্বদীপ, মানে আমরা একসঙ্গেই এই কোম্পানিতে জয়েন করেছি, মানে ও আমার মতোই সফটওয়ার এঞ্জিনিয়ার,মানে....
শ্রেয়া-আরে কী মানে মানে করছিস মিতু, মোদ্দা কথাটা বল, ছেলেটি কি প্রপোজ করেছে তোকে? তারপর? তুই কী বললি সেটা বল।
মিতুল-তুমি তো দেখছি কার্ড রিডার হয়ে গেছো বৌদিভাই। পুজোয় যখন বাড়ি গেলাম তখন মেসেজ করত, 'তোমাকে খুব মিস করছি'। আর ফেরার পরেই ....
শ্রেয়া-বুঝেছি বুঝেছি আর বলতে হবে না। কাল মা বলছিলই এবার ধনতেরসে তোর বিয়ের জন্য কিছু গয়না কিনে রাখবে। আমরা আজই তাহলে বসছি ডিজাইন চুজ করতে।
মিতুল-(লজ্জা পেয়ে) কী যে বলো না তুমি একেবারে বিয়েতে পৌঁছে গেলে? দাঁড়াও একটু বাজিয়ে দেখি।
শ্রেয়া-তুই বাজাতে থাক। আমরা বাছতে থাকি মিতু। কারণ পি সি চন্দ্র জুয়েলার্সের ধনতেরস ধনবর্ষা অফার চলছে। এই সময় গয়না অর্ডার করলে মেকিং চার্জে ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে। আরও নানারকম অফার্স আছে। আবার রাতে কথা হচ্ছে।
বাড়ি ফিরেই শাশুড়ি মাকে ডেকে নিয়ে আয়েস করে বসল শ্রেয়া। ল্যাপটপ অন হতেই টাইপ করল pcchandraindia.com
মধুশ্রী-কী ব্যাপার বল তো শ্রেয়া! আজ না চাইতেই জল? অন্যসময় ডেকে ডেকে বসানো যায় না। মিতুর কিছু নতুন খবর আছে নাকি?
শ্রেয়া-আজ না হোক কাল তো খবর হবেই মা। এখন ধনতেরস অফার চলছে। একটা সেট তো কিনে রাখতেই পারেন।
ঘরে ঢুকতে ঢুকতে সৌভিক বলল, 'গুড ডিসিশন মা। হঠাৎ বিয়ে ঠিক হলে তাড়াহুড়ো করে গয়না কেনা মুশকিল। আর এখন তো পি সি চন্দ্র জুয়েলার্স থেকে অনলাইনে গয়না অর্ডার করলেও ধনতেরস ধনবর্ষা অফার পাওয়া যাচ্ছে। এই সুযোগটাও তো নিতে হবে। মিতুলকেও ডেকে নাও শ্রেয়া। ওর ভাইফোঁটার গিফটটাও তো পি সি চন্দ্র জুয়েলার্স থেকেই কেনা হয় এভরি ইয়ার।'
এক টানে কথাগুলো বলে থামল সৌভিক।
শ্রেয়া-(মজা করে) দেখেছো মা তোমার ছেলে কত সংসারী হয়ে গেছে। বোনের বিয়ের গয়না নিয়ে ভাবছে। আডভাইস দিচ্ছে।
ততক্ষণে মিতুল অন। গয়না দেখছে মন দিয়ে।
মিতুল-বৌদিভাই আমার কিপটে দাদার বাজেট কী এবার একটু বেড়েছে? সোয়ান মোটিফের ছোট্ট নেকলেসটা দ্যাখো,কী কিউট।
সৌভিক-ডান
মধুশ্রী-ইয়ার্কি না মেরে এই নেকলেস আর বালা জোড়া দ্যাখ। বেশ গলা ভরা ডিজাইন।
মিতুল-মা ,তোমার বাজেট তো বেশ ভালই, তাহলে বার্ড নেকলেসটা দাও প্লিজ। কী ইউনিক পিস ।
মধুশ্রী-বিয়ের কনেকে ওটা মানায়? ওটা জামাইকে কিনে দিতে বলো। এখন আমি যেটা বেছেছি সেটা দ্যাখো মিতুল।
শ্রেয়া-আচ্ছা বেশ আমি তোকে বিয়েতে বার্ড নেকলেস দেবো। এখন মার পছন্দ করা গয়নাগুলোতে কনসেনট্রেট কর। আমিও এখনই তোর জন্য অর্ডারটা দিয়ে দেবো ওই নেকলেসটা ।
সৌভিক-আমি তোকে দেবো বার্ড মোটিফের আংটি। দ্যাখ মিতু এক্কেবারে ম্যাচিং ম্যাচিং। কেমন খুজে বের করেছি বল?