
বাঙালি বরাবরই খাদ্যরসিক। তবে আজকের গ্লোবাল বাঙালি শুধু ভাতেমাছে তুষ্ট নয়। তার পাশাপাশি নানা দেশের কন্টিনেন্টাল রান্না এক্সপ্লোর করতে, চেখে দেখতে ভালোবাসেন অনেকেই। আর যদি সেই ক্যুইজিন হয় এক্সক্লুসিভ আইরিশ ডিশ, তবে তো কথাই নেই। সেইসব ভোজনপ্রিয় বাঙালির কথা মাথায় রেখেই সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার ৩২ নম্বর রাজা বসন্ত রায় রোডে খুলে গেল খাঁটি কন্টি-ক্যুইজিন রেস্তরাঁ ‘দ্য আইরিশ ব্রিওয়ারিশ’। ৭৫০ স্কোয়্যার ফুটের অত্যাধুনিক ইংলিশ লুকের অন্দরসজ্জায় সুসজ্জিত এই রেস্তরাঁর কর্ণধার সুজাতা সিনহা। উদ্বোধনের ফাঁকে রেস্তরাঁ নিয়ে নানা কথা হল তাঁরই সঙ্গে। আলাপচারিতায় চৈতালি দত্ত …হঠাৎ আইরিশ ক্যুইজিন রেস্তরাঁ খুলতে উদ্বুদ্ধ হলেন কেন?
সুজাতা- আসলে দেশেবিদেশে আমি প্রচুর বেড়াতে যাই। আমার যেমন রান্না করার ভীষণ শখ, তেমনই বিভিন্ন দেশের নানা ক্যুইজিন চেখে দেখতেও ভালবাসি। বিদেশে গেলে আমি বরাবরই সেই দেশের ইংলিশ ডিশ খাই। পরে মনে হল আমাদের কলকাতাতেও এমন একটা রেস্তরাঁ দরকার যেখানে খাঁটি ইংলিশ ডিশ মিলবে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমার প্রথম মাথায় আসে যে এমন রেস্তরাঁ কলকাতায় খুবই কম আছে, যেখানে খাঁটি আইরিশ ক্যুইজিন পাওয়া যায়। সেখান থেকেই এই রেস্তরাঁ খোলার তাগিদ আমি অনুভব করেছি। তবে এটি আমার ‘ব্র্যান্ড নেম’ বলতে পারেন। এর আগে অবশ্য ‘বি ফরচুন’ নামে ২০১৭ তে একটি বেকারি চালু করি। ২০১৯ থেকে সেই বেকারির ক্রমোন্নতি ঘটে। প্রচুর নামীদামি ব্র্যান্ডকে এখন সাপ্লাই করি আমরা।এই বেকারিতে মূলত কী ধরনের আইটেম তৈরি হয়?
সুজাতা- মূলত ডেজার্ট পার্ট তৈরি হয়। এটি আমার বেস কিচেন।
আপনার রেস্তরাঁর স্পেশালিটি কী?
সুজাতা- কন্টি-বেস খাবার এখানে পাওয়া যায়। মূলত আইরিশ ক্যুইজিনকে আমি ফোকাস করেছি। আমাদের দেশে যেমন মায়ের হাতের রান্নার হোমমেড কিচেন রয়েছে, ওদেশেও কিন্তু সেটি প্রচলিত। ইউরোপিয়ান হোমমেড আইটেমে রয়েছে ওদেশের খাঁটি ফ্লেভার। সেই হোমমেড খাঁটি খাবার এখানে মিলবে। আয়ারল্যান্ডের খাবারকে মূলত প্রাধান্য দিয়েছি আমরা। এছাড়াও সারা বছর ফ্রান্স, ইতালির কিছু ক্যুইজিন এখানে পাওয়া যাবে।আপনার রেস্তরাঁর মেন্যু কিউরেটর কে?
সুজাতা- শেফ দেবু হালদার। উনি দীর্ঘ বছর অম্বুজা কিচেনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কন্টি-বেস নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ওটাই ওঁর স্পেশালিটি।
আপনার এখানে কী ধরনের মেন্যু রয়েছে?
সুজাতা- স্টার্টার থেকে শুরু করে মেইন কোর্স, ডেজার্ট রয়েছে। পাশাপাশি দার্জিলিং ও অসম টি মিলবে। এছাড়াও নানা স্বাদের আইরিশ কফি পাওয়া যায়। নরমাল, প্রিমিয়াম কফিও এখানে পাওয়া যায় । এখানে কোনওরকম লিকারের ব্যবস্থা নেই।
আপনার এখানে উল্লেখযোগ্য মেন্যু কী কী?
সুজাতা- ফ্রায়েড প্রনস উইথ ডিপ, ট্রিপল চিজ স্যান্ডউইচ, টেক্সান বারবিকিউ চিকেন, গ্রিলড চিকেন মেক্সিকানো, আইরিশ স্টিউ, ক্লাসিক শেফার্ডাস পাই, হাউস স্পেশাল চিজি বার্গার, বেইলিস চিজ কেক, আইরিশ অ্যাপেল কেক উইথ কাস্টার্ড সস ইত্যাদি।আপনার এখানে ব্রেকফাস্ট পাওয়া যায় কি?
সুজাতা- অবশ্যই। পোট্যাটো প্যানকেক আমাদের স্পেশালিটি। তবে এটি নোনতা স্বাদের। যাকে ‘বক্সটি’ বলে। সকাল ৯.৩০- রাত ১০টা পর্যন্ত রেস্তরাঁ খোলা থাকে।
আপনার এখানে গেট টুগেদারের কোনও ব্যবস্থা রয়েছে?
সুজাতা- খুব শিগগিরই জন্মদিন উপলক্ষে গেট-টুগেদার চালু হবে।সংসার, সন্তান, রেস্তরাঁ এই ত্রয়ীর ব্যালেন্স একা কীভাবে করেন?
সুজাতা- (খিলখিল করে হেসে) এটা সকলেরই প্রশ্ন। আসলে রান্না করা যেহেতু আমার প্যাশন তাই সবদিক সামলে নিয়ে এই কাজ করতে কোনও কষ্ট হয় না। তবে আমার স্বামী রতন সিং অবশ্যই আমাকে সাহায্য করেন। যদিও উনি একজন আইটি প্রফেশনাল। আবার উনি রেস্তরাঁর কো-পার্টনারও। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলেই কাজটা করি।আপনার এখানে খাওয়ার খরচ কীরকম?
সুজাতা- পকেট ফ্রেন্ডলি। কর সমেত দুজনের খরচ পড়বে ৫০০ টাকা।