শেষ আপডেট: 10th September 2024 14:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একে ভ্যাপসা গরম তার উপর বৃষ্টির চোখরাঙানি। ভাবছেন কী শাড়ি পরবেন পুজোয়? কীভাবেই বা গোটা দিন থাকবেন কুল কুল! চিন্তা না করে কিনে ফেলতে পারেন মধ্যপ্রদেশের ঐতিহ্যশালী 'চান্দেরী শাড়ি'। শুধু গরমে আরামদায়ক নয়, এই শাড়ি বহন করছে বহু প্রাচীন ইতিহাসও।
নিজের ব্র্যান্ড খোলার আগে ১৯৮৫ সালে, পাহাড় আর বেতওয়া নদী দিয়ে ঘেরা মধ্যপ্রদেশের চান্দেরী গ্রামে গেছিলেন অঞ্জু। জনপ্রিয় ডিসাইনার অঞ্জু মোদী। শিল্পীদের বাড়িতে থেকে যে কাজ তিনি দেখেছিলেন সেই কাজই তাঁকে আজকের এই পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে।
যে কাজ, যে শিল্প এই শিল্পীকে অনুপ্রাণিত করেছিল তার ইতিহাসটা খুব নতুন নয়। কথিত আছে, সিল্ক ও সুতির সুতো দিয়ে বোনা এই চান্দেরী ফেব্রিকের শিকড় বহু প্রাচীন। ভগবান শ্রী কৃষ্ণের তুতো ভাই শিশুপাল এটির প্রচলন করেছিলেন। ফেব্রিকটি পরিচিতি পেতে শুরু করে ত্রয়োদশ শতকে।
পার্ল অ্যাকাডেমির ফ্যাশন বিভাগের এক প্রফেসর জানান, মুঘল সাম্রাজ্যে খাঁটি সোনার শাড়ি বুনতেন কোষ্টি তাঁতিরা। পরে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ঝাঁসি থেকে তাঁরা চলে আসেন এই চান্দেরী গ্রামে। ১৯৩০-এ জাপানিস সিল্কের সঙ্গে পরিচিত হন এবং এটা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
কেন এত স্পেশাল চান্দেরী শাড়ি?
ঐতিহ্যবাহী এই শাড়ির বৈশিষ্ট বুননে। সিল্ক ও সুতির মিশেলে তৈরি এই শাড়িতে অসাধারণ একটা আভা থাকে। উজ্জ্বল আভা, যা শাড়ির লুকটাই পাল্টে দেয়। এই ফেব্রিক ভীষণ হালকা হয়, পারে সিলভার, গোল্ডেন জরির কাজও দেখা যায়। ছিমছামের মধ্যেও ভীষণ সুন্দর, এই দিয়েই বিবরণ দেওয়া যায় চান্দেরী শাড়ির।
এখন শুধু শাড়ি নয়, ল্যাহেঙ্গা এবং বিভিন্ন অন্যান্য জামা কাপড়েও এই ফেব্রিকের ব্যবহার দেখা যায়। এখানকার তাঁতিরা আজকাল শুধুই এক ধাঁচের ফেব্রিক বানিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন তা নয়। অরগ্যানজ়ার মতো ফেব্রিকও বানানো হচ্ছে চান্দেরীতে।
একটা চান্দেরী শাড়ি বানাতে ১৫-২০ দিন লাগে। তারপর শাড়ির উপর কাজ করতে ও পুরোপুরি সাজাতে সময় লেগে যেতে পারে আরও প্রায় ২-৩ মাস।
কীভাবে চিনবেন কোনটা আসল চান্দেরী শাড়ি?
ডিসাইনারদের মতে আসল চান্দেরী শাড়িতে ১০-১২ শতাংশ সিল্ক থাকে। যদি সিল্কের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে সেই ফেব্রিককে সিল্ক চান্দেরী বলা হয়।
ডিসাইনার অঞ্জু মোদী জানাচ্ছেন, চান্দেরী ফেব্রিক তৈরি হয় হাতেই অর্থাৎ হ্যান্ডলুম ফেব্রিক কিন্তু বর্তমানে চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে পাওয়ালুমের মার্কেটও ভালো। পাওয়ারলুমে তৈরি হচ্ছে চান্দেরী শাড়ি, যা দামেও যথেষ্ট কম। এই শাড়িগুলোকে কোনওভাবেই নকল বলা চলে না।
ঐতিহ্য আর কমফর্টের সঙ্গে পুজো কাটাতে এবছ বেছে নিতেই পারেন এই শাড়ি।