Date : 10th Jul, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
এ বছর সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ছবিগুলির মধ্যে আইএমডিবি-র লিস্টে পয়লা নম্বরে রয়েছে যে সিনেমাবিয়ের আগেই গর্ভবতী হন নেহা! এনিয়ে স্পষ্ট বললেন, 'সমস্যা কোথায়, আমি তো অঙ্গদকে ডেট করতাম'বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনীতে স্থগিতাদেশ নয়, আধার কার্ডকে মান্যতা দিল সুপ্রিম কোর্টজঙ্গলের পাশে গাড়ির মধ্যে মদের আসর, তৃণমূল নেতা ও বিজেপি নেত্রীকে হাতেনাতে ধরলেন স্থানীয়রাবিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস! মিষ্টিতে ওষুধ মিশিয়ে প্রেমিকার গর্ভপাত করালেন ব্যক্তিবাবা হওয়ার মাত্র ২০ দিন পরই ডিউটিতে ফিরেছিলেন! যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনা আর ফিরতে দিল না বাড়িতেইংল্যান্ড সিরিজে চারখানা বিশ্বরেকর্ড ভাঙতে পারেন শুভমান, যার তিনটির মালিক ডন ব্র্যাডম্যান২৫ বছর পর আবার আসছে ‘কিউঁকি সাস ভি কভি বহু থি’, একতা কাপুর বললেন, 'এই শো তো শুধু আমাদের নয়'৪ অগস্ট শুনানি শুরু, রাজসাক্ষী হতে চেয়ে হাসিনার বিপদ বাড়ালেন সাবেক পুলিশ কর্তাওবিসি মামলায় জটিলতা অব্যাহত, আবেদনকারীদের সাধারণ ক্যাটাগরিতে ফর্ম ফিলাপের অনুমতি কোর্টের
UEFA Euro 2024: England's poor show

আর কবে 'কামিং হোম' হবে? ইউরোয় ইংল্যান্ডের খেলা দেখে রেগে আগুন সমর্থকরা, উড়ে এল গ্লাস

গত ২০২০ ইউরোর আগে ইংল্যান্ড কোনওদিন ইউরোর ফাইনালেও উঠতে পারেনি। এবারে কাপ নিয়ে ঘরে ফিরবেন বলে জার্মানিতে ভিড় করেছেন সমর্থকরা। অথচ হ্যারি কেনদের খেলা দেখে কোচ সাউথগেটের ওপর ক্ষুব্ধ সমর্থকরা।

আর কবে 'কামিং হোম' হবে? ইউরোয় ইংল্যান্ডের খেলা দেখে রেগে আগুন সমর্থকরা, উড়ে এল গ্লাস

স্লোভেনিয়া ম্যাচে সুযোগ নষ্ট করে হতাশ হ্যারি কেন। (ছবিঃ রয়টার্স)

শেষ আপডেট: 26 June 2024 12:17

সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায় 

'তুমি যদি ইংল্যান্ডকে এক মাইল জায়গা দাও, ওরা মেরেকেটে ওই এক ইঞ্চি-মত নেবে!'

আপাতত ব্রিটিশ মিডিয়ায় যা বলাবলি চলছে, সারমর্ম করলে এমনটাই দাঁড়ায়।  ইউরোর বাকি সব দল একদিকে, ইংল্যান্ড আর একদিকে। ক্রোয়েশিয়া-ইতালি ম্যাচে গোল হল একেবারে শেষ মিনিটে, বাঁশি বাজার কয়েক সেকেন্ড আগে। নেদারল্যান্ডস-অস্ট্রিয়া ম্যাচে একেবারে দাঁত চাপা লড়াই দেখল বার্লিন। পোল্যান্ড-ফ্রান্সের খেলাতেও টান টান উত্তেজনা ছিল শেষ অবধি। এদিকে ইংল্যান্ড মাঠে নামলেই কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের মহলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, রাতদুপুরে টিভির সামনে ঘুম আটকে রাখাই যেন একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে! 

ব্রিটিশ মিডিয়া তাও সুললিত শব্দে মাইল-ইঞ্চি ইত্যাদি উপমায় আটকে থেকেছে। কিন্তু সমর্থকদের আটকানো দায় হয়ে পড়েছে। এমনিতেই নিজেদের দল নিয়ে ইংরেজরা খুবই স্পর্শকাতর। এদিক থেকে ওদিক হলেই মাঠের বাইরে হাতাহাতি জুড়ে দেন। ১৯৯৬ সাল থেকেই বিশ্বকাপ বা ইউরো এলেই ইংরেজরা সমস্বরে 'কামিং হোম' গান ধরেন। এর অবশ্য খানিক ইতিহাস আছে। ১৯৯৬ সালের ইউরোর আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে। সেবারে টুর্নামেন্টের থিম গান তৈরি করেছিলেন কৌতুকশিল্পী ডেভিড ব্যাডিয়েল ও ফ্র্যাঙ্ক স্কিনার। সেই গানেরই নাম ছিল 'ফুটবল কামস হোম'। গেয়েছিল বিখ্যাত ব্রিটিশ পপ ব্যান্ড 'লাইটনিং সিডস'। কিন্তু তারপর টেমস দিয়ে বিস্তর জল বয়ে গিয়েছে, পোর্টসমাউথ থেকে বিস্তর জাহাজ ছেড়েছে। কিন্তু ইউরো বা বিশ্বকাপ কিছুই ঘরে ফেরেনি। ইংল্যান্ডই একমাত্র দল, যারা ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ জিতেছে, কিন্তু একটি বারের জন্যও আজ অবধি ইউরো জিততে পারেনি।

বস্তুত, গত ২০২০ ইউরোর আগে ইংল্যান্ড কোনওদিন ফাইনালেও উঠতে পারেনি। সমর্থকরা যতই কামিং হোম-এর গান ধরুন, ২০০০ ইউরোয় গ্রুপ থেকেই ছিটকে গিয়েছিল ডেভিড বেকহ্যামের ইংল্যান্ড। অতএব গতবার ইউরো কাপের ফাইনালে ওঠার পর শিরা ফুলিয়ে ইংরেজরা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, 'কাপ এবার ঘরে ফিরছে!' ফাইনাল ছিল একেবারে খাস লন্ডনে, ওয়েম্বলিতে। উত্তেজনা এমনই তুঙ্গে ছিল যে, সমাজমাধ্যমে চুটকি ঘুরছিল, কাপ জিতলে কোচ গ্যারেথ সাউথগেট, অধিনায়ক হ্যারি কেনদের নাইটহুড পাওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বিধি বাম। ইতালির বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করলেন মার্কাস র‍্যাশফোর্ড, জেডন স্যাঞ্চো, বুকেয়ো সাকা। ইউরো চলে গেল রোমে। ওয়েম্বলির বাইরে অতএব যথেচ্ছ তাণ্ডব চলল, এই রকম সময় যা হয়, যথেচ্ছ বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ ধেয়ে গেল র‍্যাশফোর্ড, স্যাঞ্চো, সাকার দিকে।  

চার বছর পেরিয়ে গিয়েছে। ইউরোর আসর বসেছে জার্মানিতে। জুলিয়ান নাগেলসমানের দলের ওপর পুরনো আস্থা ফিরে পাচ্ছেন জার্মান ভক্তরা। বলাবলি হচ্ছে, ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের মত রূপকথার ইউরো হোক এবার। ইংরেজরাও পিছিয়ে নেই। এবারেও যথারীতি তাঁরা কাপ ঘরে নিয়ে ফিরবেন বলে ব্যাগপত্তর গুছিয়ে চলে এসেছেন জার্মানিতে। কোলনে ইংল্যান্ডের তৃতীয় খেলা ছিল স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে। দলটার বর্তমান র‍্যাঙ্কিং ৫৭। এদিকে প্রায় তিরিশ থেকে চল্লিশ হাজার ইংরেজ সমর্থকের এক বিরাট বাহিনী ঢুকে পড়েছিল শহরে। কোলন এমনিতে বেশ খোলামেলা শহর। প্রচুর পার্ক আছে, ট্রাম চলে। পাশ দিয়েই বয়ে যাচ্ছে বিখ্যাত রাইন নদী। পাড় থেকে দেখা যায় কোলন ক্যাথিড্রালের সুউচ্চ চূড়ো। শহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে নবম শতকে বানানো বারোটি রোমান আমলের গির্জা। এমনকি স্টেডিয়ামের পাশেই রয়েছে খোলা পার্ক। ফলে টিকিট না পেলেও ট্রামে, বাসে, সাইকেলে করে ইংরেজ সমর্থকরা চলে আসছেন কোলনে। বিয়ারের ক্যান নিয়ে দিব্যি ফ্যান জোনে বসে উপভোগ করবেন ম্যাচ। না হলে ঢুকে পড়বেন রেস্তোরাঁ বা পাবে। যেমনটা চলে বিলেতে। 

অথচ স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধেও সেই গোলশূন্য ড্র করলেন হ্যারি কেনরা। কলকাতায় যারা রাত জাগলেন, তাঁদের অনেকেই নাকি হাফটাইমেই টিভি বন্ধ করে ঘুমোতে চলে গিয়েছিলেন। কোলনে যারা মাঠে ঢুকেছিলেন, তাঁদের তো আর সে উপায় নেই। অগত্যা গ্যারেথ সাউথগেটকে লক্ষ্য করে গ্যালারি থেকে উড়ে গেল প্লাস্টিকের বিয়ারের কাপ!

ইংল্যান্ড অবশ্য শেষ ষোলোয় গ্রুপের শীর্ষে থেকেই গিয়েছে। গ্রুপ সি-তে ইংল্যান্ডের সঙ্গে স্লোভেনিয়া ছাড়াও রয়েছে ডেনমার্ক ও সার্বিয়া। ডেনমার্ক ও স্লোভেনিয়ার পয়েন্ট সমান। ফলে তিন দলই নকআউট পর্বে গিয়েছে। কিন্তু এতে চিঁড়ে ভিজছে না। গ্যারেথ সাউথগেট যেমন হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। ম্যাচের পরে তিনি ভালমানুষের মত গ্যালারির সামনে গিয়েছিলেন ধন্যবাদ জানাতে। গ্যালারি সমস্বরে দুয়ো দিয়েছে। যাকে ইংরেজিতে বলে 'বু' করা। সাউথগেট তাতেও দমেননি। কিন্তু বিয়ারের গ্লাস উড়ে আসতেই তিনি ব্যথিত হয়ে পড়েছেন। ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, তিনি সবটাই বুঝতে পারছেন। 'আমি তো পিছিয়ে আসছি না', বলছেন সাউথগেট, 'এখন দলের সঙ্গে থাকাটাই জরুরি। আমি জানি আমার বিরুদ্ধে কী কী বলা হচ্ছে। এতে একটা খুবই অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আমি জানি না, আর কোনও দল এভাবে কোয়ালিফাই করার পরেও এরকম রোষের শিকার হচ্ছেন কিনা!' 

অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। এমন কিছু কঠিন গ্রুপে পড়েনি ইংল্যান্ড। নেহাত অন্ধ ভক্ত না হলে কেউ ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের ডেনমার্ককে দুর্লঙ্ঘ কঠিন বলবে না। গ্রুপ বি-তে স্পেন-ইতালি মুখোমুখি পড়েছে। গ্রুপ ডি-তে তো কার্যত নাটকের পর নাটক চলছে। নেদারল্যান্ডসকে হাঁফ ধরিয়ে ছেড়েছে র‍্যালফ র‍্যাংনিকের অস্ট্রিয়া। সেখানে ইংল্যান্ডের যা কপাল, তাতে জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগাল বা স্পেনের মত কাউকে অন্তত ফাইনালের আগে মহড়া নেওয়ার নেই। রোববার সম্ভবত নেদারল্যান্ডস বা গ্রুপ ই-এর তৃতীয় দলের মুখোমুখি হতে হবে হ্যারি কেনদের। ই গ্রুপে রোমেলু লুকাকুদের বেলজিয়ামের সঙ্গে রয়েছে স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া ও ইউক্রেন।

অথচ ইংরেজ সমর্থকদের আশঙ্কা, এই সোনায় সুযোগও হেলায় হাতছাড়া করতে পারে ইংল্যান্ড। যা অবস্থা, তাতে নেদারল্যান্ডস সামনে পড়লে সাকা-ফডেনদের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। স্কাই স্পোর্টস যেমন দেখিয়েছে, স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে গড়ে সেন্টার সার্কলের কাছাকাছি ঘুরেছেন ফুটবলাররা। দ্বিতীয়ার্ধেও স্লোভেনিয়ার রক্ষণ খুব বেশি ভাঙতে পারেননি। অথচ রাইস ও গ্যালাহারকে মাঝে রেখে ফডেন-বেলিংহ্যাম-সাকাকে নিয়ে ত্রিফলা আক্রমণ সাজিয়েছিলেন সাউথগেট। সামনে একা হ্যারি কেন। কিসসু কাজে দেয়নি। গ্যারি নেভিল তাই হতাশ হয়ে আইটিভিতে বলেই দিয়েছেন, 'ইংল্যান্ডের কোল পামার, বুকেয়ো সাকা, জুড বেলিংহ্যাম, কোবি মাইনু ও ফিল ফডেন আছে। দারুণ প্রতিভা। আর ওদের মিসম্যানেজ করার ঝুঁকি আমরা নিতে পারি না!'      


ভিডিও স্টোরি