আমি মনে করি, দলে অনেক প্রতিভাবান এবং সৃজনশীল খেলোয়াড় আছে, যারা গোল করতে পারে। সুনীল ভাইও দলে ফিরে এসেছে। আশা করি, আগামী দু’টি ম্যাচে আমরা গোল করব এবং রক্ষণভাগেও ক্লিন শিট রাখতে পারব।
শুভাশিস বোস
শেষ আপডেট: 22 May 2025 16:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত আইএসএল মরশুমে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস বোস (Subhasish Bose)। রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি ছয়টি গোলও করেছিলেন তিনি। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) বিচারে বর্ষসেরা ফুটবলারও (Footballer of the Year) হয়েছেন এই বঙ্গ ডিফেন্ডার (Bengal Defender)। ভারতীয় ফুটবল দলে (Indian Football Team) তিনিই একমাত্র বাঙালি। এবার তিনি ভারতীয় দলের জার্সি গায়েও ক্লাব মরশুমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান।
সামনেই দু’টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ রয়েছে ভারতের। থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচ খেলার পর সুনীল-শুভাশিসদের রয়েছে এশিয়ান কাপ ২০২৭ বাছাই পর্বের ম্যাচ, হংকংয়ের বিরুদ্ধে। মেন ইন ব্লুজ এখন প্রধান কোচ মানোলো মার্কেজের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করছে কলকাতায়। ভারতের নির্ভরযোগ্য সাইডব্যাক শুভাশিস মনে করছেন, থাইল্যান্ড ও হংকংয়ের বিরুদ্ধে তাঁদের সবচেয়ে বড়ো লক্ষ্য হওয়া উচিত গোল অক্ষত রাখা এবং গোল করা। কলকাতায় তারই প্রস্তুতি শিবির চলছে এখন।
শুভাশিস বলেন, “আমি মনে করি, দলে অনেক প্রতিভাবান এবং সৃজনশীল খেলোয়াড় আছে, যারা গোল করতে পারে। সুনীল ভাইও দলে ফিরে এসেছে। আশা করি, আগামী দু’টি ম্যাচে আমরা গোল করব এবং রক্ষণভাগেও ক্লিন শিট রাখতে পারব।”
আগামী ১০ জুন হংকংয়ের কাওলুন সিটিতে এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭ বাছাই পর্বের ম্যাচে ভারত হংকংয়ের মুখোমুখি হবে। এই ম্যাচের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে ৪ জুন মানালোর ছাত্ররা থাইল্যান্ডের পাতুম থানিতে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে সেই দেশের বিরুদ্ধে।
চলতি প্রস্তুতি শিবির প্রসঙ্গে শুভাশিস বলেন, “গত কয়েকটি ম্যাচে আমরা ছোটখাটো ভুল করেছি। এখন আমাদের কাজ ভুল-ত্রুটি শুধরে নেওয়া। আমরা এই ম্যাচগুলির আগে নিজেদের এই দিকগুলিতে উন্নতি করতে চাই। কোচ আমাদের এই শিবিরে উন্নতির জায়গাগুলি নিয়ে আলোচনা করছেন। আমরা সবাই সেই অনুযায়ী অনুশীলন করছি।”
শুভাশিস ইতিমধ্যেই জাতীয় দলের জার্সিতে ৪২টি ম্যাচ খেলেছেন। ২০১৯-এ সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপে মাত্র ২৩ বছর বয়সে জাতীয় দলের জার্সিতে যাত্রা শুরু করেন এই বঙ্গ ডিফেন্ডার। গত মরশুমে আইএসএলে সবুজ-মেরুন জার্সিতে ছ’টি গোল করলেও, দেশের জার্সি গায়ে জালের দেখা এখনও পাননি শুভাশিস। এবার নীল জার্সি গায়ে বিপক্ষের জাল কাঁপাতে চাইছেন এই বঙ্গ ডিফেন্ডার।
নিজের ফর্ম নিয়ে লেফট-ব্যাকের মন্তব্য, “এই বছরটা আমার খুব ভাল কেটেছে। এই ধরনের একটি মরশুম যে কোনও খেলোয়াড়ের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। এই পারফরম্যান্স আমাকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে এবং নিজেকে উন্নত করতে অনুপ্রাণিত করছে। আমার লক্ষ্য ভারতের জার্সিতে আরও ভাল খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করা। আমরা আমাদের সেরাটা দিতে চাই ও ভারতকে জেতাতে চাই।”
নিজের শহর কলকাতায় প্রস্তুতি শিবির হওয়ায় খুশি শুভাশিস। তিনি বলেন, “আমি খুবই খুশি, কারণ এই শিবির কলকাতায় হচ্ছে। ফেডারেশন এখানে ন্যাশনাল সেন্টার ফর এক্সেলেন্সের মতো সুবিধা গড়ে তুলেছে। যাতে জাতীয় দল ভাল মানের মাঠে অনুশীলন করতে পারে। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে দেশের হয়ে খেলতে পারছি। প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। কখনও ভাল খেলি, কখনও খারাপ— এটাই খেলার অঙ্গ। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, আমরা সবাই একসঙ্গে খেলি। দল হিসাবে কাজ করি। আমরা শুধু গোল বাঁচাতে পারি না, গোল দিতেও পারি।”
বিভিন্ন ক্লাব থেকে ভারতীয় শিবিরে এসে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে ২৯ বছর বয়সি শুভাশিস বলেন, “আমরা সবাই এই মরশুমে বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছি। কিন্তু এখন আমাদের একসঙ্গে খেলার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা সবাই বিভিন্ন কোচের নানা পদ্ধতির অধীনে খেলেছি। এখন আমাদের কোচ মানোলো যে সিস্টেম তৈরি করেছেন, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তাতেই আমরা সম্মিলিতভাবে ভাল খেলতে পারব। অবশ্যই আমাদের সবাইকে একই রকম চিন্তাধারায় থাকতে হবে। একই মানসিকতা নিয়ে খেলতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের এখন একটাই লক্ষ্য, ভারতীয় ফুটবলের সাফল্য।”