চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়ে সংস্থা ‘চ্যাপ্টার ১১’ অনুযায়ী আদালতের কাছে নিজেদের দেউলিয়া হিসেবে নথিভুক্ত করেছে এই সংস্থা।
ফাইল ছবি
শেষ আপডেট: 3 July 2025 13:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ক্যানড খাবারের জগতে নির্ভরতার নাম 'ডেল মন্টে।' সেই ডেল মন্টে ফুডস এবার দেউলিয়া ঘোষণা করল নিজেদের। চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়ে সংস্থা ‘চ্যাপ্টার ১১’ অনুযায়ী আদালতের কাছে নিজেদের দেউলিয়া হিসেবে নথিভুক্ত করেছে। তারা জানিয়েছে, সম্পত্তি বিক্রির মধ্যে দিয়েই নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ডেল মন্টে ফুডসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও গ্রেগ লংস্ট্রিট এক বিবৃতিতে বলেন, 'সব রকম সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পর আমরা বুঝেছি, আদালত-পর্যবেক্ষণাধীন সম্পত্তি বিক্রির প্রক্রিয়া আমাদের সংস্থাকে উদ্ধার করতে পারে।'
তবে বাজার ছাড়ছে না সংস্থা। গরমে যে সময় সবচেয়ে বেশি প্যাকেজ ফুড ও ক্যানের খাবার বিক্রি হয়, সেসময় যাতে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে, তার জন্য পদক্ষেপ করেছে তারা। ইতিমধ্যেই ৯১২.৫ মিনিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্যও জোগার হয়েছে।
আদালতে জমা দেওয়া কাগজপত্র অনুযায়ী, সংস্থার দায় মোট ১ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে। তবে নতুন মালিকানা ও আর্থিক কাঠামোর সাহায্যে দীর্ঘমেয়াদে স্থায়িত্ব ফিরিয়ে আনতে চায় তারা।
অতিরিক্ত উৎপাদন না ঋণের বোঝা, কেন এই সংকট?
কোভিড অতিমারির সময় বাড়িতে খাওয়া বেড়ে যাওয়ায় ক্যানে উপলব্ধ খাবারের চাহিদা তুঙ্গে পৌঁছয়। সেই সময় উৎপাদনও অনেকটা বাড়িয়ে ফেলে ডেল মন্টে। কিন্তু অতিমারি কাটতেই চাহিদা পড়ে যায়। ফলে বিপুল পরিমাণ স্টক পড়ে থাকে গুদামে, যার একটা বড় অংশ নষ্টও হয়। সংস্থাকে অনেক সময়েই কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে বহু প্রোডাক্ট, হয়েছে ক্ষতিও।
২০১৪ সালে ডেল মন্টে প্যাসিফিক লিমিটেড সংস্থাটিকে কিনে নেয়। সেই সময় বিপুল ঋণ নিয়ে কেনাবেচা হয়েছিল। তার পর থেকে বছরের পর বছর সুদের বোঝা বেড়েই চলেছে। ২০২০ সালের পর থেকে সুদের হার লাগাতার বাড়ায় সেই বোঝা আরও চড়া হয়।
একসময় বিশ্বের বৃহত্তম ক্যানারি
১৮৮৬ সালে সংস্থার পথ চলা শুরু এই সংস্থার। ১৯০৭ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে ডেল মন্টে তাদের ঐতিহাসিক ক্যানারি তৈরি করে। ১৯০৯-এর মধ্যে দাবি করেছিল, বিশ্বের বৃহত্তম ফল ও সবজি ক্যানারি তারাই চালায়। ধীরে ধীরে ভারতেও আসে এই সংস্থা। সস থেকে মেয়োনিজ, পাস্তা থেকে ক্যানে উপলব্ধ খাবার, ডেল মন্টে এখন পরিচিত নাম আমাদের কাছেও।
তাই ডেল মন্টের এই পতনে শোকাহত বহু মার্কিন নাগরিক। মন খারাপ এদেশের বহু মানুষেরও। তবে সংস্থা ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে প্রবল আশাবাদী।