গবেষকরা বলছেন, যখন প্রথমেই ওজন তোলা হয়, তখন শরীরের গ্লাইকোজেন মজুত দ্রুত ফুরিয়ে যায়। শরীর শক্তির বিকল্প উৎস হিসেবে চর্বিকে বেশি ব্যবহার করতে শুরু করে।
ছবিটি প্রতীকী
শেষ আপডেট: 14 June 2025 14:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জিমে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষজনই ওয়ার্মআপের জন্য স্ট্রেচিংয়ের পর প্রথমে কার্ডিও করে নেন। তারপর ওয়েট ট্রেনিং করেন। ফিটনেসপ্রেমীরা বা জিম ট্রেনাররাও এই অনুশীলনের পরামর্শই দিয়ে থাকেন। কিন্তু গবেষণা বলছে, ওজন কমাতে চাইলে এই রুটিন কাজে আসবে না।
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ওয়েট ট্রেনিং আগে করেন, তাঁদের শরীর থেকে ফ্যাট বার্ন বেশি হয়। শুধু তাই নয়, দিনের বাকি সময় তাঁরা অ্যাক্টিভও থাকেন অন্যান্যদের তুলনায় বেশি।
গবেষণাটি করা হয়েছিল ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সি স্থূলতার শিকার ৪৫ জন তরুণকে নিয়ে। অংশগ্রহণকারীদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছিল, একটি নিয়ন্ত্রণ দল, আর বাকি দু’টি অনুশীলনকারী দল, যাঁদের অনুশীলন এক হলেও পার্থক্য ছিল সিকোয়েন্সে।
একটি দলের সদস্যরা প্রথমে ওয়েট ট্রেনিং করেছেন, যেমন বেঞ্চ প্রেস, ডেডলিফ্ট ও স্কোয়াট। অন্য দল শুরু করত আধঘণ্টার স্টেশনারি সাইকেল চালিয়ে, অর্থাৎ কার্ডিও দিয়ে।
কী পাওয়া গেল ফলাফলে?
ফ্যাট বার্নিং: যাঁরা প্রথমে ওয়েট ট্রেনিং করেছেন, তাঁদের ফ্যাট বার্ন বেশি হয়েছে।
পেশির সক্ষমতা: ওয়েট ট্রেনিং আগে করায় পেশির সহ্যশক্তি বেড়েছে।
হার্টের স্বাস্থ্য: কার্ডিও ফিটনেস বা হার্ট উভয় দলের ক্ষেত্রেই সমান উন্নত হয়েছে, সিকোয়েন্সে বিশেষ প্রভাব পড়েনি।
কেন এমন হয়?
গবেষকরা বলছেন, যখন প্রথমেই ওজন তোলা হয়, তখন শরীরের গ্লাইকোজেন মজুত দ্রুত ফুরিয়ে যায়। শরীর শক্তির বিকল্প উৎস হিসেবে চর্বিকে বেশি ব্যবহার করতে শুরু করে। আর এই মেটাবলিক শিফটের কারণেই বেশি চর্বি ঝরে বলে মনে করা হচ্ছে।
কী বার্তা মিলছে এই গবেষণা থেকে?
যদি আপনার মূল লক্ষ্য হয় ফ্যাট লস বা দিনের বাকি সময়টা বেশি সক্রিয় থাকা, তাহলে ওয়েট ট্রেনিং আগে করাই ভাল। যদি আপনার লক্ষ্য হয় কার্ডিও ফিটনেস বা স্ট্যামিনা, তাহলে আগে বা পরে কার্ডিও করায় তেমন পার্থক্য পড়ে না।
তবে মাথায় রাখতে হবে, এই গবেষণায় শুধু স্থূলকায় তরুণ পুরুষদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাই মহিলাদের ক্ষেত্রে, বয়স্কদের ক্ষেত্রে বা যাঁদের শারীরিক গঠন আলাদা, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ফলাফল কতটা প্রযোজ্য, তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
পরবর্তী গবেষণায় গবেষকরা চাইছেন খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের পরিমাণ ও মানসিক চাপের মতো বিষয়গুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করতে, যাতে আরও সম্যক ও বিস্তৃত চিত্র সামনে আসে।