
সাগরে সেতু বাঁধার ‘কাঠবেড়ালি’, গণনার দুপুরে কেঁদেই ফেললেন দেবাংশু
বঙ্গের ভোটে অত্যন্ত চেনা গান। তবে গত কয়েক মাসে এ গান আর বঙ্গে আটকে থাকেনি। রীতিমতো জাতীয়করণ হয়েছে এই গানের। এ গানেই বেজেছে ডিজে, এ গানেই মেতেছে মিছিল। এ গানের উৎস বাংলাদেশ হলেও, বাংলাদেশ থেকে এ গানকে বঙ্গে নিয়ে আসার কৃতিত্ব অনুব্রত মণ্ডলের হলেও, এই গানকে জাতীয় স্তরে পৌঁছে দেওয়ার যে কারিগর, একুশের মহারণে ভোট সাগরের সেতু বাঁধার কাজ করে চলেছেন যিনি, তিনি দেবাংশু ভট্টাচার্য।
‘খেলা হবে’ এখন গোটা রাজ্যের ভোটের ট্যাগ লাইন। এ গানকে সামনে রেখেই নিঃস্বার্থভাবে রাজনীতির ময়দানে মমতা ব্যানার্জীর জন্য জান কবুল লড়াই জারি রেখেছেন দেবাংশু। না, প্রার্থী হিসেবে টিকিট তিনি পাননি। পাননি কোনও বিশেষ ক্ষমতাশীল পদের দায়িত্বও। তার পরেও এ কথা বিরোধীদেরও অস্বীকার করার জায়গা নেই, এইবার ভোটে তৃণমূলের জয়ের পেছনে একটা জরুরি ভূমিকা পালন করছেন দেবাংশু। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবেই কাজ করেছেন তিনি। সেই কাজের জেরেই একসময়ে ভোটের প্রচার থেকে বিয়ে বাড়িতেও শোনা গেছে ‘খেলা হবে’ গান।
আজ, ভোটগণনার দুপুরে নিজের মাকে নিয়ে তাঁর রাজনৈতিক পরিবারের ‘মা’র জন্য লাইভে এলেন মমতা ব্যানার্জীর সৈনিক। আনন্দে, আবেগে গলা ভারী হয়েছে খানিকটা। তবে বারবার বলে চলেছেন, “আমি বলেছিলাম দিদির ছবি সরবে যবে, বন্ধু সেদিন খেলা হবে। দিদি ছবি সরেনি, সয়ে গেছে, বেইমানদের সঙ্গে খেলা হয়ে গেছে।”
পাশাপাশি আরও বলেন, “তৃণমূলের নেতা ভাঙিয়ে জেতা যায় না!” মমতার জন্য গর্বিত দেবাংশু তার পরে কেঁদেই ফেললেন লাইভে। নিজের বাড়ির, ব্যক্তিগত আক্রমণ নিয়ে কথা বললেন। পাশাপাশি এও বলেন, যে তিনি ভয় পেতেন তাঁর বাবা মায়ের ওপরে যদি আক্রমণ হয়!
পড়াশোনা শেষ করে চাকরি না করে রাজনীতি করেছেন। বাড়িতে কখনও সমর্থন পেয়েছেন কখনও পাননি। অকপটে বলেওছেন সেই কথা। পাননি পার্টির থেকে টিকিট, কিন্তু দেবাংশুর গলায় তাই নিয়ে ছিল না কোনও আপেক্ষ। কাজ করে গেছেন তাঁর বাংলার মায়ের জন্য।
সর্বোপরি লাইভে এসে তিনি আরও একবার বলেন যে তাঁর বাংলার মা নবান্নে যাচ্ছেন আরও পাঁচটা বছরের জন্য। এবং পাশাপাশি এও বলেন যে এরপর ২০২৩-এ ত্রিপুরা ও পরবর্তী লোকসভা ভোটে দিল্লীর মসনদেও বসবে হাওয়াই চটি! বস্তুত, বিজেপির জয়ের সবরকম সম্ভাবনা কার্যত নাকচ করে দিয়েছে ভোটের আসন্ন ফলাফল। দেবাংশু তাই বললেন, ‘১৬তে মমতা সুনামি ছিল, ২১ আমফান’!
একসময় দেবাংশু বলেছিলেন যে তিনি দুবছরের জন্য রাজনীতিতে এসেছেন, ভোট হয়ে গেলে তিনি নাকি সরে আসবেন! তবে দলের এই একনিষ্ঠ কর্মীকে নিয়ে তৃণমূল কী ভাববে, সেই উত্তর সময়ই দেবে!