শেষ আপডেট: 7th April 2025 20:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলা সিনেমার প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে দেবশ্রী রায় (Debasree Roy) অন্যতম। একাধারে বাণিজ্যিক ছবি ও আর্ট ঘরানার ছবির সফলতম নায়িকা ছিলেন দেবশ্রী। তরুণ মজুমদারের হাত ধরে ছোট্ট চুমকি প্রথম জনপ্রিয়তা পান 'কুহেলি' ছবিতে। যৌবনে পা দিয়ে 'দাদার কীর্তি' ছবি করে দেবশ্রী বুঝিয়ে দিলেন টলিউডের আকাশে চুমকি হয়ে জ্বলজ্বল করতেই সে এসেছে। কেরিয়ারের শুরুতে টালিগঞ্জ পাড়ার পাশাপাশি বলিউডেও পা রাখেন দেবশ্রী। আর সেখানেই এক নামী পুরুষের সঙ্গে মাখো মাখো প্রেম জমে ওঠে দেবশ্রী রায়ের।
জানতে ইচ্ছে করছে সেই পুরুষটি কে ছিলেন? তিনি ছিলেন আশির দশকের হার্টথ্রব ক্রিকেটার সন্দীপ পাতিল (Sandeep Patil)। এমনকি সন্দীপের সঙ্গে হিন্দি ছবিতে অভিনয়ও করেন দেবশ্রী।
সন্দীপের বাবা মধুসূদন পাতিল ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটর। তাঁর ছেলে হয়ে তিনিও প্রথম প্রেম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ক্রিকেটকে। সন্দীপ প্রথম রঞ্জি ম্যাচ খেলেন ১৯৭৫-৭৬-এর সময়ে। সন্দীপ পাতিল মিডল অর্ডারে নেমে ঝড় তুলতেন মাঠে। ওয়ান ডে ম্যাচে প্রথম বার খেলেন ১৯৮০ সালে। বিপক্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া। টেস্টে এবং ওয়ান ডে, দু’টি ফরম্যাটেই তাঁর কেরিয়ার ছিল স্বল্পস্থায়ী। টেস্টে খেলেছেন ৪ বছর। ওয়ান ডে ৬ বছর।
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পরে সন্দীপকে দেখা গেছিল সম্পূর্ণ অন্য ভূমিকায়। ‘কভি আজনবি থে’ ছবিতে তাঁকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তিনি রাজি হন। পুনম ধিলন এবং দেবশ্রী রায়, দুই নায়িকার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেন সন্দীপ।
সে সময় দেবশ্রী কয়েক বছর হল একের পর এক বলিউড ছবি করছিলেন। অরুণ গোভিল,পঙ্কজ ধীর,শশী পুরী একাধিক নায়কের বিপরীতে কাজ করেন দেবশ্রী। কিন্তু মন বিনিময় হয়েছিল সন্দীপ পাতিলের সঙ্গেই।
ক্রিকেটার সৈয়দ কিরমানি ছবিতে ছিলেন খলনায়কের ভূমিকায়। দুই নামজাদা ক্রিকেটার থাকা সত্ত্বেও সেই সিনেমা বক্স অফিসে সাড়া জাগাতে পারেনি। সেই ছবির জন্যই নাকি দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাননি সন্দীপ। তিনি চোটের অজুহাত দেখিয়ে সরে দাঁড়ান। সিনেপত্রিকা গুলো লিখেছিল দেবশ্রীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতেই নাকি সন্দীপ ক্রিকেট সফরে যাননি।
প্রসেনজিতের সাথে দেবশ্রীর প্রেম তখনও অতটা গাঢ় হয়ে ওঠেনি। দেবশ্রীর কলকাতার বাপের বাড়িতেও আসতেন সন্দীপ। অনেকে তো ধরেই নিয়েছিল ক্রিকেটার আর নায়িকার প্রেম বিয়েতে পরিণতি পাবে।
কিন্তু সন্দীপ পাতিল আদতে ছিলেন লেডি কিলার পুরুষ। তাঁর স্টেটাসের কাছে দেবশ্রীর পরিবার কিছুটা পিছিয়ে ছিল। দেবশ্রীকে টাইম পাস হিসেবেই নিয়েছিলেন সন্দীপ পাতিল।
সন্দীপ পাতিল আসলে তখনই ছিলেন বিবাহিত। শোনা যায় দেবশ্রীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরেই ঘর ভেএঙেছিল সন্দীপ পাতিলের। প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন সন্দীপ। কেচ্ছায় জড়াবেন না বলে দেবশ্রী সরে আসেন এই সম্পর্ক থেকে। বম্বের ক্যারিয়ারও দেবশ্রীর শেষ হয় এই সম্পর্কের জেরে। সন্দীপ দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন পরেই। তাঁর দুই সন্তানও আছে। আর কখনও মুখ খোলেননি দেবশ্রী সন্দীপের ঘটনা নিয়ে। তবু বাতাসে আজও ঘোরে সেই আটের দশকের ঝড় তোলা প্রেমের গল্প।