এই মুহূর্তে যখন শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য উত্তাল ঠিক তখনই বামজমানায় ঘটে যাওয়া এমন এক ঘটনা নিয়ে ছবি কি নেহাতই 'বিনোদন'? কুণাল জানাচ্ছেন, এর সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।
চিনতে পারছেন কুণালকে?
শেষ আপডেট: 1 July 2025 14:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সাহিত্যিক দীপান্বিতা রায়ের ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’ উপন্যাস অবলম্বনে হতে চলেছে এক ছবি। পরিচালক অরিন্দম শীল ছবির নাম রেখেছেন, ‘কর্পূর’ (Karpur)। সেই ছবিতেই এক রাজনৈতিক দলের রাজ্য সম্পাদক ও সাংসদের চরিত্রে অভিনয় করছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রকাশ্যে সেই ছবিরই লোগো ও অভিনেতা কুণালের প্রথম লুক। তবে একটা লুক নয়, দু'দুটো লুকে হাজির কুণাল। প্রথম লুকটির প্রেক্ষাপট ১৯৯৭ সাল। দ্বিতীয় লুকটির সময়কাল ২০১৯।
কুণালসহ অন্যান্যদের দাবি, এই ছবির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। যদি তা মেলে তা একেবারেই অনিচ্ছাকৃত। তাঁরা এই দাবি করলেও, এই ছবির সঙ্গে অনেকেই মিল খুঁজে পাচ্ছে মণীষা অন্তর্ধান রহস্যের।
নয়ের দশকের শেষের দিক। ১৯৯৭। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি কন্ট্রোলার মনীষা মুখোপাধ্যায় একদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরোন, ট্যাক্সিতে ওঠেন। কিন্তু আর বাড়ি আর ফেরেন না। নিঁখোজ মণীষা। আজ পর্যন্ত তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি। মণীষা মুখোপাধ্য়ায়ের অন্তর্ধান রহস্য় তৎকালীন রাজ্য় রাজনীতিতে ঝড় ফেলে। শোনা যায়, তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর ফাঁকা মার্কশিট। যার সূত্র ধরে উঠে আসে শিক্ষা দুর্নীতি, টাকার লেনদেন প্রসঙ্গও। উঠে আসে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কথা। এক দুঁদে বাম নেতার সঙ্গে মণীষা যোগ নিয়েও চলেছিল জলঘোলা।
এই মুহূর্তে যখন শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য উত্তাল ঠিক তখনই বামজমানায় ঘটে যাওয়া এমন এক ঘটনা নিয়ে ছবি কি নেহাতই 'বিনোদন'? কুণাল জানাচ্ছেন, এর সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। কুণালের লুক দেখে অনেকেই দাবি করছেন, তাঁকে দেখতে লাগছে সেই বামনেতার মতো সত্যিই কি দুঁদে বামনেতার কথা মাথায় রেখে সেট করা হয়েছে তাঁর লুক?
দ্য ওয়ালকে কুণালকে বললেন, "যে লুকটা রিভিল হয়েছে সেখানে আমাকে অনেকটা কুণাল ঘোষের মতোই দেখতে লাগছে।" তাঁর রসিকতা, "ওই যে লোকটা অনেক সাংবাদিক বৈঠক করে, তাঁর মতোই লাগছে। এই ছবির সঙ্গে কেউ কোনও ঘটনার মিল পেলে তা কাকতালীয়, এইটা মাথায় রেখে ছবি দেখা শুরু করলেই সমস্যা মিটে যায়।" কাউকে অনুকরণ করে নয়, বরং এই ছবিতে রাজনীতিবিদ কুণাল ঘোষকে দেখেই অভিনয়ের 'টিপস' পেয়েছেন কুণাল, অনুসরণ করেছেন পরিচালক অরিন্দমকেও। ছবি নিয়ে বেশ আশাবাদী তিনি। যদিও লাটাই দর্শকের হাতে। ছবিতে রয়েছেন ব্রাত্য বসুও। লালবাজারের এক দুঁদে গোয়েন্দা অফিসারের (হোমিসাইড ডিপার্টমেন্ট) চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। এ দিন লোগো ও লুক লঞ্চে হাজির ছিলেন তিনিও। ব্রাত্যর কথায়, "কুণাল অভিনয় জগতেও দারুণ সফল হবে। আমি কুণাল ঘোষ-- এই ব্যাপারটাই ওর মধ্যে নেই। বাধ্য ছাত্রের মতো কাজ করছে। ও আমার বন্ধু। আমি চাইব ও ভাল করুক।"
কুণালের প্রশংসায় পঞ্চমুখ পরিচালক অরিন্দমও। বলছিলেন, "কুণালের এক চোখে মাইনাস ফাইভ আর এক চোখে মাইনাস সেভেন। আগের লুকে চশমার প্রয়োজন ছিল না। চশমা খোলার পর দেখি কুড়ি বছর কমে গিয়েছে ওর। ওর এতো নিষ্ঠা, এত ইচ্ছে একজন পরিচালকের আর কী বা চাওয়ার থাকতে পারে।"
সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষে মুক্তি পাবে অরিন্দম শীল পরিচালিত ও কুণাল ঘোষ অভিনীত প্রথম ছবি ‘কর্পূর’।