ফেডারেশনের সদস্যদের সঙ্গে স্বরূপ বিশ্বাস
শেষ আপডেট: 24th September 2024 10:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় টলিউড। শনিবার রাতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন শিল্পী তনুশ্রী দাস। মেয়ের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচেন। আত্মহত্যার সময় ওই শিল্পী একটি চিঠি লিখেছিলেন। যাতে বলা ছিল, পয়লা মে থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করে সিনে অ্যান্ড ভিডিও হেয়ার স্টাইলিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। তিনমাস ঠিকঠাক কাজ দেওয়া হচ্ছিল না। যার জন্য সংসার চালাতে চরম সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। আর তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন।
এর পরপরই শোরগোল পড়ে যায় টালিগঞ্জে। অভিযোগ ওঠে ইন্ডাস্ট্রিতে 'থ্রেট কালচার' নিয়েও। যদিও কাজ না পাওয়া বা সাসপেন্ড করার বিষয়টি একেবারেরই নস্যাৎ করে দিয়েছেন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেছেন, 'এটা সৃজনশীল দুনিয়া। এখানে হুমকি বা জোর করে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কোনও ঘটনা ঘটে না। যাঁরা বলছেন, দেখে নেব, বুঝে নেব, শেষ দেখে ছাড়ব.. এটাকে থ্রেট বলবেন না? আমার ভাষায় তো এটাকেই হুমকি বা থ্রেট বলে।
তিনি আরও বলেন, 'ধরুন কাউকে ব্যান বা সাসপেন্ড করা হল। কিন্তু সেটা করতে গেলে তো একটা নোটিস ইস্যু করতে হয়। আপনারা তো এতগুলো তথ্য দিয়েছেন, ম্যাডামকে বলুন না একটা তথ্য দিতে যেখান থেকে প্রমাণ হবে ওঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বা ব্যান করা হয়েছে। '
অন্যদিকে, যাঁদের সংগঠনের যাঁদের নাম সেই চিঠিতে ছিল তাঁরা বলছেন, 'তনুশ্রী দাস আমাদের সংগঠনের একজন সক্রিয় সদস্য। আমাদের অত্যন্ত প্রিয়। দীর্ঘ চার বছর ধরে উনি সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন, কাজ করেছেন। আমাদের খুব খারাপ লাগছে আমাদের উনি এরকম একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছেন। যেটা বলার তা হল, এসব পদেরও আগে আমরা আসলে বন্ধু। এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি। এই সংগঠনের যা যা নিয়ম আছে সবটাই উনি জানতেন। আমাদের যে জেনারেল গ্রুপ আছে সেখানে আপডেট দেওয়া হয়। দু'বছর অন্তর আমাদের নির্বাচনী সভা হয়। গত বছর ও তার আগের বছর তনুশ্রী সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য নমিনেশন জমা দেন এবং ভোটে হেরে যান। তারপর থেকেই ওঁর ব্যবহারে পরিবর্তন লক্ষ করি। তবে আমাদের তরফে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার ছিলই।'
তাঁদের কথায়, 'তার পরের বছর উনি আবারও নমিনেশন জমা দেন। সেই ফর্ম ভুল ফিল আপ করেছিলেন বলে নির্বাচনী আধিকারিকরা ফর্ম বাতিল করে দেন। তারপরই নির্বাচনের দিন ওঁরা গণ্ডগোল সৃষ্টি করেন। ফেডারেশনের সদস্যরা, নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়। এতটাই খারাপ ব্যবহার করে যে সেখান থেকে একজন চলেও যান। ওই মুহূর্তে ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসও ছিলেন। তনুশ্রীর ওই ঔদ্ধত্য স্বরূপদাই গিয়ে সামলান। তারপর সেই ঝামেলা থেকে আমরা মুক্তি পাই।'
সঙ্গে এও জানান, 'তারপরের মিটিংয়ে আমরা ওঁকে ১ মে-তে একটা চিঠি ধরাই। অফিসে ডাকি। আলোচনা করার চেষ্টা করি। কথা বলার জন্য ফোন করি। কিন্তু উনি ফোন ধরেননি। আসেননি, কোনও আলোচনাও করেননি। যে কারণে আমাদের সাধারণ সভার তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, যে কাণ্ডটা ঘটানো হয়েছিল নির্বাচনের দিন, তাতে ফেডারেশনের সম্মানহানী হয়েছে। কেন এই ঘটনা ঘটানো হল, তার কারণ দর্শাতে চিঠিও লিখি। প্রথমে সেই চিঠি নিতে চাননি। পরে নেন। আমরা জানাই পরের দিন যেন উত্তর দেন উনি। উত্তর পেলে তবে কাজ করা যাবে সেই কথাও বলি। পর পর তিনখানা চিঠি দেওয়া হলেও সঠিক সময়ে সঠিক উত্তর আসেনি। অনেক পরে তনুশ্রী চিঠি দিয়ে লেখেন যে তাঁর ভুল হয়ে গেছে। তারপর থেকে ও কাজ শুরু করে।'
প্রসঙ্গত, রবিবারই বাঙ্গুর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন কেশসজ্জা শিল্পী তনুশ্রী। সেই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। তাঁর হাত ধরেই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন ওই কেশসজ্জা শিল্পী।