বলিউডে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রায় ১৪ বছর আগে। তবে সিনেমার রঙিন পর্দা, আলো, গ্ল্যামারের বাইরেও সানি লিওনের জীবনে রয়েছে এমন একটি অধ্যায়।
শেষ আপডেট: 13 May 2025 17:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বলিউডে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রায় ১৪ বছর আগে। তবে সিনেমার রঙিন পর্দা, আলো, গ্ল্যামারের বাইরেও সানি লিওনের জীবনে রয়েছে এমন একটি অধ্যায়। বহু বছর পেরিয়ে গেলেও ‘পর্ন তারকা’র তকমা আজও তাঁকে তাড়া করে ফেরে, কিন্তু এক মায়ের পরিচয়ে তিনি আজ আরও আলাদা, আরও গভীরভাবে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।
সানি আজ তিন সন্তানের মা। বড় মেয়ে নিশা, আর যমজ দুই ছেলে আশের ও নোয়া। আশের ও নোয়া এসেছিল তাঁদের জীবনে সারোগেসির মাধ্যমে। আর নিশা? তাঁর আগমন যেন এক আদ্যন্ত মানবিকতার প্রতীক। মহারাষ্ট্রের লাতুরের এক অনাথ আশ্রম থেকে তাঁকে দত্তক নিয়েছিলেন সানি ও তাঁর স্বামী ড্যানিয়েল।
আজ, ১৩ মে, সানি লিওনের জন্মদিনে চলুন ফিরে দেখা যাক তাঁর এই অনন্য মাতৃত্বের গল্প। অনেকেই জানেন না—নিশাকে দত্তক নেওয়ার আগে তাঁকে ১১টি দম্পতি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। শুধুমাত্র গায়ের রং কালো হওয়ায় তাঁকে কেউই দত্তক নিতে চাননি। ২১ মাস বয়সী শিশুটিকে তাই আশ্রমে বড় হয়ে ওঠার অপেক্ষায় রেখে গিয়েছিল সমাজ। ২০১৭ সালের ২১ জুন, সানি ও ড্যানিয়েল আনুষ্ঠানিকভাবে নিশাকে তাঁদের কন্যা রূপে গ্রহণ করেন। “নিশা” নামটিও তাঁরাই রাখেন। আইনিভাবে দত্তক নেওয়ার আগেই তাঁরা নিশাকে ফস্টার কেয়ারে নিয়ে আসেন ঘরে।
তৎকালীন চাইল্ড অ্যাডপশন রিসোর্স এজেন্সি (CARA)-র সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল দীপক কুমার জানিয়েছিলেন সংবাদ সংস্থাকে, “সানি-ড্যানিয়েল নিয়ম মেনে অন্যদের মতোই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কোনও তারকাসুলভ সুবিধা নেননি। ১১ দম্পতি যেখানে শিশুটিকে শুধুমাত্র গায়ের রঙের জন্য ফিরিয়ে দিয়েছিল, সানি ও ড্যানিয়েল একবারের দেখায় তাঁকে আপন করে নিয়েছিলেন।”
নিশার স্বাস্থ্য তখন খুব একটা ভালো ছিল না। অপুষ্টিতে ভুগছিল সে। অনেকেই সে কারণেও শিশুটিকে গ্রহণ করতে চাননি। কিন্তু সানি-ড্যানিয়েল এই সব কিছুকে পাত্তা না দিয়ে, শুধুমাত্র ভালবাসার ডানায় ভর করে তাঁকে ঘরে তুলে আনেন। এর ঠিক পরের বছর, সারোগেসির মাধ্যমে আশের ও নোয়া তাঁদের জীবনে আসে। এক নিঃশর্ত ভালোবাসার ঘর—সানি-ড্যানিয়েলের পরিবার।
সানি হয়তো অনেকের চোখে এখনও ‘পর্ন ইন্ডাস্ট্রি’র প্রাক্তন সদস্য। কিন্তু তাঁর মাতৃত্ব, তাঁর তিন সন্তান, আর সমাজের স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে একটি শিশুকে আপন করে নেওয়ার সাহসিকতা—এসবই তাঁকে অনন্য করে তোলে।