শেষ আপডেট: 19th October 2024 14:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'তারিখ পে তারিখ...' এখনও লোকের মুখে মুখে ঘোরে সেই সংলাপ। সানি দেওলের সেই 'ঢাই কিলো কা' ঘুসি আজও এইট প্যাক অনেক নেতাদের অ্যাকশন দৃশ্যকে মাটিতে পেড়ে ফেলতে পারে। আটের দশক থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধত, অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদী নায়ক সানি দেওল এখন বৃদ্ধ হয়েছেন। তাতে কী? শনিবার (১৯ অক্টোবর) ৬৭-তম জন্মদিনেই প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন আগামী ছবির প্রথম দর্শনের পোস্টার। গোপীচাঁদ মালিনেনি পরিচালিত এই ছবিতে দর্শকদের জন্য উপাদেয় খাদ্য রয়েছে বলে দাবি।
বলিউডে পরিবারবাদ চলে আসছে ভারতের ফিল্মিস্তানের জন্মলগ্ন থেকে। কারও কারও সন্তান-সন্ততিরা জুহু-বান্দ্রার উপকূলে টিকে গিয়েছেন। তো কেউ ভেসে গিয়েছেন আরব সাগরের জলে। সাদা-কালো যুগ থেকে রঙিন পর্দা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার দশক মুম্বইয়ে টিকে থাকা ধর্মেন্দ্র-পুত্র সানি দেওলের বেতাব ছবিটি ১৯৮৩ সালে যখন মুক্তি পায়, তখন অনেকেই তরুণ সানির বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছিলেন। যদিও ছবিটি সুপারহিট হয়েছিল। যা অনেক প্রথম নায়কের বহু যুগের স্বপ্ন।
তারপর থেকে আসন্ন মুক্তিপ্রাপ্ত 'জাঠ' ছবি পর্যন্ত মূলত অ্যাকশন হিরো বলে খ্যাতি জুটেছে লাউড অভিনেতা সানি দেওলের কপালে। ধর্মেন্দ্রর মতো রোমান্স তাঁর ধাতে নেই। সানির অতি বড় ভক্তও স্বীকার করবেন, নায়িকার সামনে প্রেমের সংলাপ বলতে গলার শিরা ফুলে ওঠে তাঁর। বৃষ্টির মধ্যে রোমান্টিক গান গাইতে গেলেও সানি দেওলকে দেখে মনে হয় তাঁর হাতের টানে নায়িকার বাহু খুলে যাবে।
অসংখ্য হিট ছবির নায়ক ও সহ নায়কের অভিনয় করে বাবার মতো তিনিও প্রায় চার দশক মুম্বইয়ের শাহেনশা-বাদশা-কিং খেতাব না পেলেও পৃথক একটি ধারার নায়কের চরিত্র সৃষ্টি করেছেন। ২০২৩ সালে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সানি দেওল ৫২৫.৪৫ কোটি টাকার ব্যবসা দিয়েছেন। একবার অভিনয়ের স্বপ্ন দেখা যুবকদের উদ্দেশে সানি বলেছিলেন, বডি বিল্ডিং এবং নাচার কসরত করা বন্ধ করে দাও। মন দাও অভিনয়ে। কারণ আমরা কেউ বডি বিল্ডার নই, অভিনয় করতে পারলেই চান্স পাবে সিনেমায়।
খান বা কাপুর ফ্যামিলির কারও মতো নয়, নিজেকে নিজের মতো করে গড়ে তুলেছেন সানি। তাঁর শারীরিক কাঠামো, হরিয়ানা-পাঞ্জাবের পাক্কা জাঠওয়ালি চেহারার মধ্যে যে কাঠিন্য তিনি হিন্দি ফিল্মে আমদানি করেছিলেন, তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর কেউ ছিল না। তাই এই ধরনের চলচ্চিত্রে অদ্বিতীয় সানি দেওল।
১৯৫৭ সালের ১৯ অক্টোবর জন্ম তাঁর। জন্মনাম ছিল অজয় সিং দেওল। ১৯৮৩ সালে ববি-মার্কা বেতাব ছবিতে অমৃতা সিংয়ের বিপরীতে আত্মপ্রকাশ সানি দেওলের। তারপর মঞ্জিল মঞ্জিল, সোনি-মহিওয়াল করেন ১৯৮৫ সালে। অমিতাভ বচ্চনের ফেলে যাওয়া অ্যাংরি ইমেজকে সানি দেওল ফিরিয়ে আনেন হিন্দি সিনেমায়। চাকরিহীন, হতাশায় ভোগা একটা প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে মেলে ধরেন অর্জুন সিনেমায়।
অর্জুনের পর ডাকাইত, ইয়েতিম এবং অবশেষে রাজকুমার সন্তোষীর হাতে পড়ে ঘায়েল ছবিতে সানি দেওলের অভিনেতার আত্মা প্রকাশ পায়। পরিচালক অনিল শর্মার হাতে গদর-এক প্রেম কথা এবং আপনে ছবি সানির সবথেকে বড় হিট ছবি। শর্মার মতে, নাক উঁচু হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে সঠিক মর্যাদা দেয়নি। কিন্তু তাঁর কাজের প্রতি নিষ্ঠা, সততা ও নিষ্পাপ মুখ সানির বাজারদরকে উচ্চতায় রেখে দিয়েছে।
বিখ্যাত স্টান্ট কোঅর্ডিনেটর ড্যান ব্রাডলে একবার সানিকে ভারতের সিলভেস্টার স্ট্যালোন বলে বর্ণনা করেছিলেন। বলেছিলেন, আমার প্রিয় অভিনেতা হ্যারিসন ফোর্ডের মতোই সানি তাঁর চরিত্রের আবেগময়তার মধ্যে মিশে যেতে পারেন। এখনকার যুবসমাজ সানি দেওলের আমলের ছবির সঙ্গে পরিচিত না থাকলেও তাঁর অভিনীত দামিনী (১৯৯৩) ছবিতে সেই বিখ্যাত সংলাপ তাঁকে আলাদা করে রেখেছে অনেকের সঙ্গে।