শেষ আপডেট: 4th January 2025 19:42
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গানের জগতে একসময় দাপটের সঙ্গে নিজের জায়গা তৈরি করেছিলেন আদনান সামি। তাঁর গাওয়া 'কভি তো নজর মিলাও' শোনা মাত্রই কোটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। তবে আজ যেন এক ধূমকেতুর মতো হারিয়ে গিয়েছেন আলো থেকে। লন্ডনে জন্ম নেওয়া আদনানের শিকড় জম্মু-কাশ্মীর এবং পাকিস্তানে। তাঁর বাবা পাকিস্তানের বায়ুসেনার আধিকারিক, আর মা নৌরিন জম্মু-কাশ্মীরের মেয়ে। শৈশব থেকেই গানের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ছিল তাঁর। পাঁচ বছর বয়সে পিয়ানো বাজানো শুরু করেন, আর নয় বছরেই সুর রচনা। ভারতে ছুটিতে এলে পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার কাছে সন্তুর শিখেছিলেন।
শিক্ষা জীবনে ইংল্যান্ডের রাগবি স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন আদনান। পরে কিংস কলেজ এবং লিঙ্কনস ইন থেকে আইনজীবী হিসেবে উত্তীর্ণ হন। তবে গানই তাঁর জীবনের আসল জায়গা। ১৯৮৬ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ইংরেজি সিঙ্গল 'রান ফর হুজ লাইফ', যা মধ্যপ্রাচ্যে বিপুল জনপ্রিয় হয়। পরে ১৯৯৫ সালে পাকিস্তানি সিনেমা 'সরগম'-এর সঙ্গীত পরিচালনা করেন, যেখানে তিনি অভিনয়ও করেছিলেন।
বলিউডে আদনানের যাত্রা শুরু হয় সফলতার সঙ্গে। 'আজনবি', 'সাথিয়া', 'কোই মিল গয়া', 'পেজ থ্রি', 'গরম মশালা' থেকে 'বজরঙ্গি ভাইজান'— তাঁর গান সবসময়ই দর্শকদের মন ছুঁয়েছে। যদিও ২০১৫ সালে বলিউডে তাঁর কাজ শেষবারের মতো দেখা গিয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবনের জটিল অধ্যায়
আদনান সামির ব্যক্তিগত জীবনও কম রঙিন নয়। চারবার বিয়ের মঞ্চে উঠেছেন তিনি। ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানি অভিনেত্রী জেবা বখতিয়ারকে বিয়ে করেন। তাঁদের একমাত্র ছেলে আজান সামি খান। তবে তিন বছর পর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
২০০১ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন দুবাইয়ের ব্যবসায়ী সাবাহ গালাদরিকে। কিন্তু দেড় বছরের মধ্যেই সে সম্পর্কও ভেঙে যায়। ভাই জুনায়েদ সামি তখন আদনানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন, যা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ২০১০ সালে চতুর্থবার বিয়ে করেন রোয়া সামি খানকে। তাঁদের একমাত্র মেয়ে মেদিনা সামি খান। ২০১৬ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
ওজন কমানোর সফর মোটেই সহজ ছিল না
২০০৬ সালে আদনানের ওজন ছিল ২৩০ কেজি। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, যদি ওজন না কমান, তবে তাঁর আয়ু হবে মাত্র ছয় মাস। কঠোর ডায়েট ও শরীরচর্চার মাধ্যমে তিনি ১৬ মাসে ১৬৭ কেজি ওজন কমান, যা এক অভূতপূর্ব সাফল্যের নজির। বর্তমানে তাঁর ওজন ৭৫ কেজি। আজও আদনান সামি তাঁর গানের দক্ষতা এবং জীবনসংগ্রামের জন্য আলোচনায় থাকেন।