চন্দ্রকে খোলাচিঠি রূপমের।
শেষ আপডেট: 13th January 2025 15:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চন্দ্রমৌলি, চন্দ্র, চাঁদু, বশিষ্ঠ--- ভালবাসার অনেকগুলো নাম ছিল তাঁর। রবিবার সন্ধেবেলা যখন খবরটা প্রথম আসে বিশ্বাসই করেননি অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়া হিস্টিরিয়া বলে যে মুহূর্তে হেসে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন তাঁরা, ঠিক সেই মুহূর্তেই কল্যাণীর কনসার্টে খোদ রূপম ইসলাম জানিয়ে দেন 'কমরেড' আর নেই।
চন্দ্র সুইসাইড করেছেন। ওদিকে শো মাস্ট গো অন! রূপম মঞ্চে, গলা ধরে আসছে তাঁর, অ্যালেন হাউহাউ করে কাঁদছেন, ব্যাকড্রপের জায়েন্ট স্ক্রিনে গিটার হাতে সাদা-কালোর চন্দ্র তখন বহু আলোকবর্ষ দূরে।
কেটেছে বেশ কয়েক ঘণ্টা। শোকপ্রকাশ আর আত্মহত্যার কারণ খোঁজার স্ক্রুটিনি খানিক ফিকে। চন্দ্রের চলে যাওয়াকে 'বাইপাস' করে যে মুহূর্তে আমজনতা নিজের কাজে ব্যস্ত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক তখনই রূপমের এক খোলা চিঠি। যে চিঠি একদা ব্যক্তিগত থাকলেও আজ তা সকলের। ২০১৮-তে ফসিলস সঙ্গ নিজেই ছাড়েন চন্দ্র। ঝগড়া-বিবাদের মুচমুচে গসিপ নেই সেখানে, নেই মনোমালিন্যও! আর সেই কারণেই নিজের নতুন ব্যান্ডের নতুন প্রজেক্টের সবটা শেয়ার করতেন রূপম থুড়ি তাঁর 'হোলি গোস্ট'-এর সঙ্গে।
একের পর এক ভয়েস মেসেজ, কিছু অবিন্যস্ত মেসেজ আর আবারও 'ঘরে ফেরার' প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত--- চন্দ্রের পাঠানো সে সব মেসেজ শেয়ার করেই রূপম লিখছেন, "আমাদের কথোপকথন সব সময়েই বেশ সৃজনশীল ছিল। আমার সবচেয়ে কঠিন গানগুলো তোর জন্যই তোলা ছিল। কিন্তু 'আদমের সন্তান' অথবা 'আমি তোমায় ভালবাসি' করতে তুই নিজেই রাজি হসনি। গত বছরে কিছু গান নিয়ে আলোচনা হয়। আমি জানতাম একমাত্র তুই-ই গানগুলোর মধ্যে জ্যাজ আর ক্লাসিক্যালের মিশ্রণ ঘটাতে পারতিস। তুই বললি, 'সময় লাগবে'। আমি তো রাজিও হয়েছিলাম। এখন তো আর এই অপেক্ষার কোনও শেষ নেই। হইহই করা হাসির ব্র্যান্ড হয়েই তুই আমার কাছে থাক। ওই মৃতদেহের মুখে আমি তোকে চিনব না। যা যা গান পাঠিয়েছিলি সব শুনেছি। মনে হয়েছিল সঙ্গীতের সৃজনশীলতায় ফিরতে তুই রাজি। তোকে নিয়ে গোটা বই লিখে ফেলতে পারি। হয়তো কোনওদিন লিখেও ফেলব। রক অন।" চন্দ্র আত্মহত্যা করেছেন। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট। তাতে তাতে বড় করে লিখে রেখে গিয়েছেন, 'আমার মৃত্যুর জন্য কেই দায়ী নয়'। হাসনুহানা ফুটলেও আর টের পাবেন না তিনি, চাইলেও আর হাত ছোঁবে না গিটারের তার।